Shami on his comeback: একবছরেরও বেশি সময় পর, ফের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে ভারতীয় পেসার মহম্মদ শামি। গোড়ালির চোটের জেরে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকা শামি ফের মাঠে, চোট সারিয়ে তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে প্রস্তুত ইডেনে। বুধবার, ২২ জানুয়ারি কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে ৫ ম্যাচের সিরিজের প্রথম টি২০-তে ভারত-ইংল্যান্ডের মুখোমুখি। ভারতীয় পেসার শেষবার ২০২৩ সালে আহমেদাবাদে একদিনের বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের হয়ে খেলেছিলেন। তারপরই গোড়ালির চোটের জন্য একবছরেরও বেশি সময় মাঠের বাইরে ছিলেন। ৩৪ বছর বয়সি পেসার ইনজুরি সারাতে অস্ত্রোপচারও করিয়েছেন। বিসিসিআইয়ের মেডিক্যাল ইউনিটের ছাড়পত্র নিয়েছেন। রাজ্যস্তরে বাংলার হয়ে একের পর এক ট্রফিতে খেলেছেন। তারপরই টি২০-র পাশাপাশি জাতীয় একদিনের দলে ফিরলেন।
শামি এক সাক্ষাৎকারে বিসিসিআই টিভিকে বলেছেন, 'আমি পুরো একবছর অপেক্ষা করেছি। খুব কঠোর পরিশ্রম করেছি। দৌড়নোর সময়ও ভয় ছিল, কী হবে আর কী হবে না- তা নিয়ে। যে কোনও খেলোয়াড়ই যখন ফর্মে থাকেন, তখন আহত হওয়াটা তাঁর কাছে বিরাট আঘাত। যাইহোক আমি পুনর্বাসনের জন্য এনসিএতে গিয়েছি, তারপর ফিরেও এসেছি। যখন কেউ আঘাতের মধ্যে দিয়ে যায়, তখন সেই ক্রীড়াবিদ মানসিকভাবে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠে। কারণ, এক্ষেত্রে মানসিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি তাঁকে নতুন করে অনেক চেষ্টা চালাতে হয়।'
এটা সত্যিই যে চোটের জন্য শামিকে অনেক কিছুই সহ্য করতে হয়েছে। তিনি ভারতের হয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে পারেননি। গত বছর অস্ট্রেলিয়া এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজে আয়োজিত টি২০ বিশ্বকাপ থেকে সাম্প্রতিক সময়ের অস্ট্রেলিয়ায় বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি- কোনওটাতেই শামি খেলতে পারেননি। ২০২৩ বিশ্বকাপে ২৪ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হওয়া শামি গত নভেম্বরে রঞ্জি ট্রফিতে মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে বাংলার হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরেছেন। তারপর তাঁর জাতীয় দলে ফেরা ছিল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
ভারতীয় পেসার বাংলার হয়ে সৈয়দ মুশতাক আলি ট্রফিতে খেলেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিজয় হাজারে ট্রফিতেও খেলেছেন। ইংল্যান্ড সিরিজ এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য ভারতীয় দলে ফিরে আসার আগে তার শেষ লিস্ট এ ম্যাচ ছিল হরিয়ানার বিরুদ্ধে। সেখানও ৩ উইকেট নিয়েছেন শামি। কিন্তু, এই সব সাফল্যের আগে গত একবছরে মুখোমুখি হওয়া ভয়ংকর দিনগুলো আজও তাঁকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে।
শামি বলেন, 'যখন কেউ রান করছে, উইকেট নিচ্ছে, তখন সবাই পাশে থাকে। কিন্তু, বিপদেই প্রকৃত বন্ধুকে চেনা যায়। যাই হোক, আমি সেই কঠিন সময় পেরিয়ে এসেছি। একটা কথা ঠিক, কঠোর পরিশ্রম করলে ফল মিলবেই। আমি সেটাই বিশ্বাস করি। যখন আমরা ছোট থাকি, মা-বাবা হাঁটতে শেখায়। সেই সময় আমরা বারবার পড়ে যাই। কিন্তু, কখনও হাঁটতে শেখা ছাড়ি না। সেরকমই আমাদের কখনও জীবনের খিদে ত্যাগ করা উচিত না। খেলাধূলার ক্ষেত্রেও তেমন। আহত যে কেউ হতে পারে। কিন্তু, তাঁকে দেশের জন্য মাঠে ফিরতেই হবে। এটাই লড়াই করার সময়। বেড়ে ওঠার সময়।'
আরও পড়ুন- পন্থকে জাতীয় দলে চাইছেন না ক্যাপ্টেন সূর্যকুমার, বড় খোলসা করলেন সরাসরি
বিসিসিআইয়ের প্রকাশিত এই সাক্ষাৎকারের সময়, ভারতীয় পেসারকে কলকাতার হোটেলের বারান্দা থেকে ঘুড়ি ওড়াতেও দেখা গেছে। ক্রিকেটে প্রয়োজনীয় ভারসাম্যকে শামি ঘুড়ি ওড়ানোর সঙ্গে তুলনা করেছেন। শামি বলেছেন, 'আমি প্রায় ১৫ বছর ঘুড়ি ওড়ানোর সুযোগ পাইনি। সেই সময় হাতে শুধুই বল ছিল। কিন্তু, আমি জানি কীভাবে ঘুড়ি ওড়াতে হয়, ভারসাম্য কেমন হওয়া উচিত। ভারসাম্যটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক আমাদের ক্রিকেট জীবনের মতই। যদি কেউ ক্রিজে সেট হয়ে যায়, সে রান করবেই। আর যদি কেউ বোলিংয়ে সেট হয়ে যায়, তাহলে উইকেট পাবে। জীবনে ছন্দটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জীবনের সবকিছুরই একটা ধারা আছে। যাই হোক না কেন, বোলিংয়ের জন্য ফিটনেস, মানসিকতা এবং দক্ষতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।'