একটা টুর্নামেন্ট বাঁচিয়ে দিতে পারে সন হিউং-মিনের ফুটবল কেরিয়ার। তাও যে সে প্রতিযোগিতায় সেরা হওয়া নয়, খোদ এশিয়ান গেমসেই তাঁকে ছিনিয়ে নিতে হবে সোনা। আর এ কাজে ব্যর্থ হলে টটেনহ্যামের এই স্টার ফরোয়ার্ডকে বাধ্যতামূলক ভাবে প্রায় দু’বছর দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীতে কাজ করতে হবে। হয় সোনা, নয় সেনা, প্রিমিয়র লিগের স্টার ফুটবলারের এটাই ভবিতব্য।
দক্ষিণ কোরিয়ার বছর ছাব্বিশেয় সন হিউংয়ের আজ আর আলাদা করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দরকার নেই। ২০১৫-তে বায়ার লেভারকুসেন ছেড়ে টটেনহ্যামে চলে আসা হিউং হয়ে যান উপমহাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দামি ফুটবলার। ২২ মিলিয়ন পাউন্ডে তাঁর সঙ্গে রফা হয়েছিল। প্রিমিয়র লিগের ইতিহাসে এশিয়ান ফুটবলারদের মধ্যে তিনিই সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে যান।
আরও পড়ুন: জে লিগে প্রথম গোলের স্বাদ পেলেন ইনিয়েস্তা
এই মুহুর্তে টটেনহ্যামের সঙ্গে সাময়িক সম্পর্ক ছিন্ন করে হিউং চলে এসেছেন জার্কাতায়। দেশের জার্সিতে এশিয়াডে নামবেন রাশিয়া বিশ্বকাপে ফুল ফোটানো এই স্ট্রাইকার। রাশিয়াতে গ্রুপ পর্বেই বিদায় নিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু হিউংয়ের পারফরম্যান্স নজর কেড়েছিল। তিন ম্যাচে দুই গোল করেছিলেন তিনি। এর মধ্যে জার্মানিকে ২-০ গোলে হারানোর ম্যাচেও গোল এসেছিল তাঁর পা থেকে। বলতে গেলে হিউং কেরিয়ারের দুরন্ত সময়ের মধ্যে দিয়েই যাচ্ছেন। আর এই সময়েই তাঁর ফুটবল কেরিয়ারে জমছে আশঙ্কার কালো মেঘ। এশিয়াডে সোনা জিততে না-পারলে প্রায় দু’টো বছর ফুটবলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকবে না তাঁর। হয়তো কেরিয়ারটাই শেষ হয়ে যাবে।
কিন্তু কেন হিউংয়ের কপালে এই দুর্গতি অপেক্ষা করছে? হিউংয়ের দেশের সাংবিধানিক নিয়মে বলাই আছে যে, সে দেশের কোনও সুস্থ স্বাভাবিক নাগরিককে ২৮ বছর হওয়ার আগে বাধ্যতামূলক ভাবে ২১ মাস দেশের জন্য সামরিক বাহিনীতে কাজ করতেই হবে। এই নিয়ম থেকে বাদ যাবেন না কেউই। যদিও ক্রীড়াবিদদের ক্ষেত্রে একটা ছাড় রয়েছে। যদি তাঁরা অলিম্পিক বা বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্ট থেকে পদক আনতে পারেন তবেই। ২০২০ অলিম্পিকের ১৬ দিন আগেই হিউংয় ২৮-এ পা দেবেন। ফলে এটাই তাঁর সুযোগ।
শেষবার এশিয়ান গেমসে হিউংয়ের ভাগ্য তাঁকে সঙ্গ দেয়নি। সেবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী উত্তর কোরিয়াকে হারিয়েই দক্ষিণ কোরিয়া সোনা জিতেছিল। কিন্তু লেভারকুসেন তাঁকে ছাড়েনি। এশিয়াড যেহেতু ফিফার টুনার্মেন্ট নয় সেহেতু ক্লাব ফুটবলার ছাড়তে বাধ্য নয়। কিন্তু টটেনহ্যাম তাহলে কী করে ছাড়ল হিউংকে। এই প্রশ্ন আসতেই পারে। টটেনহ্যাম বিশেষ শর্তেই হিউংকে ছুটি দিয়েছে। এশিয়াডেই তাঁকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। আসন্ন জানুয়ারিতে এশিয়ান কাপে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম দু’টো ম্যাচ ও নভেম্বরের একটি প্রীতি ম্যাচেও তাঁর ছাড় নেই। গত শনিবার প্রিমিয়র লিগে নিউক্যাসেলের বিরুদ্ধে প্রিমিয়র লিগের ম্যাচ খেলেই চলে এসেছেন জাকার্তায়। যদি এশিয়াডে সোনা জিততে না-পারেন তাহলে তাঁর আর ফেরা হবে না লন্ডনে। বিলাসবহুল জীবনের বদলে বেছে নিতে হেব সেনা ব্যারাক। সাপ্তাহিক এক লক্ষ ডলারের বদলে মাসে ২৭৫ ডলার।