Mohammad Kaif Criticizes Siraj for Incidents with Head & Labuschagne: ভদ্রলোকের খেলায় কেন আজেবাজে কাজ! অস্ট্রেলিয়ায় সিরাজের অসভ্যতায় এবার সরব কাইফও

Mohammad Kaif Criticizes Siraj: এডিলেডে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ট্র্যাভিস হেড ও মারনাস লাবুসেনের সঙ্গে 'দুর্ব্যবহারের' জন্য মহম্মদ সিরাজের তীব্র নিন্দা করলেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার মহম্মদ কাইফ। তিনি বলেছেন, 'সিরাজ অস্ট্রেলিয়ানদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। ও কিছুতেই এভাবে ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে না।' কাইফ স্পষ্টই জানিয়েছেন যে, সিরাজ একবার নয় এডিলেড ওভালে গোলাপি বলের ম্যাচে একাধিকবার অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের সঙ্গে দুর্বব্যবহার করেছেন। প্রথমবার মার্নাস লাবুসেনের দিকে বল ছুড়ে মেরেছিল। সেই সময় লাবুসেন সাইটস্ক্রিনের আশপাশ থেকে তাঁর মনোসংযোগ ভাঙার জন্য শেষ মুহূর্তে ব্যাট করা থেকে সরে এসেছিল। দ্বিতীয়বার সিরাজ বাঁহাতি ট্রাভিস হেডকে আউট করার পর তাঁকে প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখায়। সেই সময় হেড ১৪০ রান করে অস্ট্রেলিয়াকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল।    

দিন-রাত্রির টেস্টের প্রথম দিন অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসের ২৫তম ওভারে সাইটস্ক্রিন এলাকার চারপাশে এক নির্দিষ্ট ধরনের চশমা পরে এক অনুরাগী চলাফেরা করছিলেন। তাতে বারবার লাবুসেনের মনোসংযোগ ভেঙে যাচ্ছিল। তিনি একেবারে শেষ মুহূর্তে সেই কারণে উইকেট থেকে সরে আসেন। কিন্তু, তারপরও সিরাজ লাবুসেনের স্টাম্প লক্ষ্য করে বল করেন। সিরাজের এই ধরনের কাজ পরবর্তী ক্রিকেট প্রজন্মের কাছে খারাপ উদাহরণ তৈরি করেছে। এমনটাই ধারণা কাইফের।

এই প্রসঙ্গে কাইফ বলেন, 'লাবুসেন ব্যাটিং করছিল। সেই সময় কেউ সাইটস্ক্রিনের পিছনে কিছু নাড়াচাড়া করছিলেন। এটা বারবার করায় লাবুসেনের মনোসংযোগ ভেঙে যায়। ও সেই কারণে উইকেট থেকে সরে আসার পরও সিরাজ স্টাম্পের দিকে বল ছুড়ে দেয়। এটা ঠিক না। ও দুর্ব্যবহার করেছে। পরবর্তী প্রজন্ম ওঁকে আদর্শ হিসেবে দেখে। একটা ভদ্রলোকের খেলায় আজেবাজে কাজ করে আশাকরি সিরাজ নিজের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইবে না!'

পাশাপাশি সিরাজ যেভাবে ট্রাভিস হেডকে বিদায় দিয়েছেন, তা নিয়েও অসন্তুষ্ট কাইফ। হেড মাত্র ১১১ বলে দিন-রাত্রির টেস্টে দ্রুততম সেঞ্চুরি করেছেন। অশ্বিন তো বটেই, বুমরা এবং সিরাজকেও হেড বারবার বাউন্ডারি মেরেছেন। সেই হেড ১৪০ করার পর সিরাজের ইয়র্কারে বোল্ড হন। হেড ফেরার সময় সিরাজ তাঁকে প্যাভিলিয়ন দেখান। যা নিয়ে হেডকেও উত্তেজিত হয়ে কিছু বলতে দেখা যায়। আইসিসি ম্যাচ রেফারি আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য দুই ক্রিকেটারকেই দোষী সাব্যস্ত করেছেন। তাঁদের জরিমানা করা হয়েছে। প্রত্যেককে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে।  

এই প্রসঙ্গে কাইফ বলেন, '১৪০ করা একটা লোককে বিদায় দেওয়ার দরকার পড়ে না।' হেড যখন ৭৯ রানে ব্যাট করছিলেন, সেই সময় অশ্বিনের বলে একটা ক্যাচ দিয়েছিলেন। সেই ক্যাচ সিরাজই মিস করেন। এই প্রসঙ্গে ভারতের সেরা ফিল্ডারদের অন্যতম কাইফ বলেন, 'সিরাজের কাছে হেডকে ফেরত পাঠানোর সুযোগ আগেই ছিল। হেড একজন প্রথমসারির খেলোয়াড়। সিরাজ সেই সময় মিড-অনে দাঁড়িয়ে ছিল। পিছনের দিকে ছুটে ক্যাচটা ধরার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, দু'হাতে চেষ্টা করেও ক্যাচটা ধরতে পারেনি। অশ্বিন ভালো চেষ্টা করেছিল। ওই ক্যাচটা ধরতে পারলে সিরাজ ইতিহাস তৈরি করতে পারত। কিন্তু, সেটা পারেনি।'

কাইফ আরও বলেন, 'হেড মাঠের প্রত্যেক জায়গা দিয়ে বাউন্ডারি মেরেছে। সিরাজকে ছক্কা মেরেছে। ডিপ কভার, লং অন সব জায়গায় ফিল্ডার রেখেও হেডকে ঠেকানো যায়নি। ওই সব দুর্দান্ত শট খেলেই হেড ম্যাচের রং বদলে দিয়েছে। যদি সিরাজ জানতই যে হেডের দুর্বলতা কোথায়, তবে আগেই আউট করতে পারত। বাউন্সার দিতে পারত। কিন্তু, ও তো শেষ পর্যন্ত ১৪০ করেছে। তারপর হেডকে প্যাভিলিয়ন দেখানোর কী দরকার?'

আরও পড়ুন- এই কারণেই রোহিত শোচনীয় ব্যর্থ এডিলেড টেস্টে, মুখ খুলে ঝড় তুললেন শাস্ত্রী-গাভাসকার

কাইফ আরও জানিয়েছেন, হেড স্থানীয় লোক হওয়ায় অস্ট্রেলিয়ানরাও সিরাজের ওপর ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, 'ভারতীয়রা অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে গেলে, অস্ট্রেলীয়রা স্বাগত জানাবে, এটাই রীতি। কিন্তু, তাঁদেরই একজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে এমন দুর্ব্যবহার তাঁরা মানবেন কেন? আমার মনে হয় না, যে তাতে অস্ট্রেলিয়ানদের কিছু ভুল আছে। আর, সিরাজ সেসব নিয়ে অভিযোগও করতে পারবে না।'