পাকিস্তান: ১৭৯/১০
অস্ট্রেলিয়া: ১৮১/৯
Australia vs Pakistan, Semi-Final 2: ভারত বনাম পাকিস্তান স্বপ্নের ফাইনাল হচ্ছে না। প্ৰথম সেমিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে অন্যতম সেরা রান চেজ করে জয় সম্পন্ন করেছিল ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছেড়েছিল। দ্বিতীয় সেমিতে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া এবং পাকিস্তান। আর সেমিতে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাল অস্ট্রেলিয়া।
১৮০ রানের টার্গেটের সামনে অজিরা ম্যাচ জিতল পাঁচ বল এবং ১ উইকেট হাতে নিয়ে। সুপার সিক্সে পাকিস্তান ঠিক একই রকম পজিশন থেকে বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমির টিকিট নিশ্চিত করেছিল। সেই একই ম্যাচের যেন রিপিট টেলিকাস্ট হল, স্রেফ শেষটুকু অংশ বাদ দিয়ে। প্ৰথমে ব্যাট করে অল্প রানে অলআউট হয়ে যাওয়া। এবং তারপর দুর্ধর্ষ বোলিংয়ে টানটান ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নেওয়া। সেই একই চিত্রনাট্য। তবে শেষটা আলাদা।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অল্প পুঁজি সফলভাবে ডিফেন্ড করেছিল পাকিস্তান উবেইদ শাহের বোলিংয়ে ভর করে। বৃহস্পতিবার অবশ্য উবেইদ শান্ত রইলেন। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ ছোট ছোট পার্টনারশিপে জয়ের দিকে এগিয়ে গেলেও মাত্র পাঁচ রান আগে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। এদিন অবশ্য অজিরা শেষ উইকেটে ১৭ রান যোগ করে ম্যাচ বের করল। নেল বাইটিং থ্রিলারে অজিদের জয়ে পৌঁছে দিলেন রালফ ম্যাকমিলান এবং ভিদলারের দুর্দান্ত জুটি।
সামান্য টার্গেট চেজ করতে নেমে প্ৰথম দশ ওভারে অস্ট্রেলিয়া উইকেট না হারালেও রান তোলার গতি ছিল স্তিমিত। ওভার পিছু ৩-এর সামান্য বেশি তুলছিলেন ক্যাঙারু যুবারা। পাওয়ার প্লে শেষ হতেই অজি ব্যাটিংয়ে ধস নামান আলি রাজা, মিনহাসরা। ৬ ওভারের মধ্যে চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ২৭ রান তোলার ফাঁকে ৪ উইকেট হারিয়ে একসময় অস্ট্রেলিয়া ৫৯/৪ হয়ে যায়।
সেখান থেকে অজি ব্যাটিংয়ে ৪৩ রানের ছোট্ট এক পার্টনারশিপে প্রাণ সঞ্চার করেন হ্যারি ডিক্সন এবং অলি পিক। তারপর ক্যাম্বেল এবং পিকের ৪৪ রানের আরও একটা পার্টনারশিপ অজিদের ফেবারিট করে তোলে জয়ের জন্য।
আরও পড়ুন: ইসলামের রীতি-নীতিতে শ্রদ্ধাশীল স্টোকস! বড় দাবি ইংরেজ স্পিনার রেহান আহমেদের
তবে আচমকাই শেষবেলায় আলি রেজার এক স্পেল তছনছ হয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার ফাইনালে ওঠার স্বপ্নের। মাত্র ১৮ রান তোলার ফাঁকে অজিরা চার উইকেট হারিয়ে ফেলে আলি রেজার দুরন্ত বোলিংয়ে। ১৬৪/৯ হয়ে যাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ থেকে প্রায় হারিয়েই গিয়েছিল। তবে শেষবেলায় ফাইনালে তুলে দেয় ম্যাকমিলান-ভিদলারের জুটি।
তার আগে, টসে জিতে বেনোনিতে তার আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। নিজেদের একাদশে তিনটে বদল ঘটিয়েছিল অজিরা। প্ৰথম একাদশে অন্তর্ভুক্ত করা হয় টম ক্যাম্বেল, রায়ান হিকস এবং টম স্ট্রেকারকে।
অজিদের হয়ে ফাস্ট বোলার টম স্ট্রেকার একাই ভাঙেন পাকিস্তান ব্যাটিংকে। পুরো ৫০ ওভার-ও ব্যাটিং করতে পারেনি পাকিস্তান। মাত্র ৪৮.৫ ওভারে পাক ব্যাটিং অলআউট হয়ে যায় ১৭৯ রানে। এগারো জনের ৮ জনই দুই অঙ্কের রানে পৌঁছতে পারেনি। পাকিস্তানকে কোনও রকমে দেড়শ রানের গন্ডি পেরোতে সাহায্য করেন আজান আওয়েস এবং আরাফাত মিনহাস। দুজনেই ৫২ করেন।
পাকিস্তান ব্যাটিং শুরু থেকেই বিপাকে পড়ে যায় ক্যালাম ভিদলার, স্ট্রেকার এবং রাফ ম্যাকমিলানের ত্রিমুখি বোলিংয়ের সামনে। পাওয়ার প্লেতেই ধস নামে পাক ব্যাটিংয়ে। স্ট্রেকার শামিল হুসেনকে ফেরত পাঠান। ভিদলারের শিকার হন শাজিব খান। পাক ক্যাপ্টেন সাদ বেইগ স্ট্রেকারের শিকার হয়ে ফিরতেই পাকিস্তানের প্রত্যাবর্তনের সম্ভবনায় পূর্ণচ্ছেদ পড়ে।
আক্রমণে আসার মাত্র দ্বিতীয় ওভারেই স্পিনার রালফ ম্যাকমিলান আঘাত হানেন। আর বিয়ার্ডম্যান হারুন আহমেদকে ফেরানোর পর অর্ধেক পাক ব্যাটিং প্যাভিলিয়নে চলে যায়। ৭৯/৫ হয়ে যাওয়ার পর পাকিস্তানকে কিছুটা ম্যাচে ফেরায় আজান আওয়েস এবং আরাফাত মিনহাস। দুজনের ফিফটি প্লাস জুটিতে ভর করে পাকিস্তান কোনওরকমে স্কোরবোর্ডে তিন অঙ্কের রানে পৌঁছয়। শেষ দশ ওভারে পাকিস্তানের একমাত্র আশা ছিলেন মিনহাস। তবে হাফসেঞ্চুরি করার পর তিনি ক্যাম্বলের শিকার হন। পাকিস্তানি ব্যাটিংয়ের লেজ মুড়িয়ে ইনিংসে ৬ উইকেট সম্পন্ন করেন স্ট্রেকার।
নভেম্বরেই অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয়নি ভারতের। যুবাদের মাধ্যম সেই প্রতিশোধ কি নিতে পারবে ভারত, সেদিকেই অপেক্ষায় রইল।ভারতীয় ক্রিকেট।