Advertisment

আজ ময়দানে 'আসল’ পরীক্ষার সামনে বাংলাদেশ

বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের এখন আর ওই তথাকথিত প্রমাণের মতো কোনো ব্যাপার নেই। সেটি দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে বিলেতি সবুজ ঘাসের আয়তক্ষেত্রে বারবার ধ্বনিত হয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
bangladesh world cup 2019

ছবি: টুইটার থেকে

ঈদের দিন অনাহূত বৃষ্টিতেও ঢাকাবাসী এবার অতটা মন খারাপ করছে না। বুধবার সন্ধ্যার আকাশে পদ্মাপারে বৃষ্টি থাকলেও ঈদানন্দে ভরপুর মন পড়ে থাকবে লন্ডনের কেনিংটন ওভালে। সন্ধ্যে সাড়ে ছ'টার ম্যাচে, যেখানে ইংলিশ কন্ডিশনে ‘সত্যিকারের’ পেস আক্রমণের মুখে পড়তে হবে তামিমদের। ক্রিকেটানন্দ গভীর রাতে কী অনুভূতি এনে দেবে, সেটা তোলা থাকল সময়ের হাতে। তার আগে একটি ভাবনাই সবার মনে - নিউজিল্যান্ডের সুইং সামলে, তাদের পরিণত ব্যাটিং লাইন-আপের মোকাবিলা করে ক্রিকেট খাতা কতটা ভরতে পারবে দল।

Advertisment

বাংলাদেশের আসলেই এদিন বহুমুখী লড়াইয়ে জিততে হবে। এবারের বিশ্বকাপে দলটি কত দূর যেতে পারবে, তার একটা হিসাব এই ম্যাচ থেকে পাওয়া যেতে পারে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের এখন আর ওই তথাকথিত প্রমাণের মতো কোনো ব্যাপার নেই। সেটি দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে বিলেতি সবুজ ঘাসের আয়তক্ষেত্রে বারবার ধ্বনিত হয়েছে। তবু ক্রিকেট বিষয়ক আলোচনার খাতিরে এই ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য প্রকৃত অর্থে গুরুত্বপূর্ণ। ‘হেরে গেলে সব শেষ’, ব্যাপারটা মোটেও তেমন নয়। এই কন্ডিশনে গতিদানব ট্রেন্ট বোল্টের সুইং, ম্যাট হেনরির ধারাবাহিক ১৪০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতির বল, সঙ্গে লকি ফার্গুসনের ‘সাপের ছোবল’ সৌম্য-তামিমরা কতটা স্বাভাবিকভাবে সামলান, সেটিই মূলত আলোচনায়।

আরও পড়ুন: ‘চিকুর’ নেতৃত্বে ভারতের পরীক্ষা! কিন্তু বিরাট কেন ‘চিকু’?

প্রতিপক্ষ দলে এক-দুজন ভালো বোলার থাকলে তাদের দেখেশুনে খেলে দিলেই হয়। কিন্তু একসঙ্গে তিন/চার জন থাকলে আপনাকে স্কিলের সর্বোচ্চ পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। দেখতে হবে, মারতে হবে। চিন্তাটা মূলত এখানেই। বিশ্বকাপ কভার করতে যাওয়া কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে আলাপ করে জানলাম, সাউথ আফ্রিকা ম্যাচের থেকে কেনিংটনের উইকেট আলাদা হবে। থাকতে পারে ঘাসও!

প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জিং পেস আক্রমণের বিপরীতে তাদের ব্যাটিংও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বেশ পোক্ত মনে হয়েছে। লঙ্কানদের ১৩৬ রান দেখতে দেখতে পার করে ফেলেন দুই কিউই ওপেনার কলিন মুনরো এবং মার্টিন গাপটিল, মাত্র ১৬.১ ওভারে। চার নম্বরে আছেন আরেকজন। নাম তার টেইলর। ২০১৫ বিশ্বকাপের পর ওয়ান-ডেতে তার চেয়ে একমাত্র বিরাট কোহলির গড় ভালো, ৬৮.৮। দলটির লোয়ার অর্ডারও যারপরনাই শক্তিশালী। এই দশকে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে কিউইদের শেষদিকের ব্যাটিং সবচেয়ে বেশি কার্যকরী। ২০১০ সাল থেকে নিউজিল্যান্ডের ৮ থেকে ১১ নম্বর পর্যন্ত ব্যাটসম্যানের গড় ১৭.৫, স্ট্রাইকরেট ৯১।

এত সব বিপদ সংকেতের ভেতর বাংলার আকাশে আশার সূর্য মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক ‘বিস্ময়বালক’। আগের ম্যাচে সেই সূর্যের তেজেই বলিয়ান হয়ে ওঠেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ২০১৫ সালে ওয়ান-ডেতে প্রবেশের দুই ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ১১ উইকেট নেওয়ার পর বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত একটু বিপাকে ছিলেন ফিজ। তবু গত বিশ্বকাপের পর যা করেছেন তা বিস্ময়কর। ৪০ কিংবা তার বেশি উইকেট নেওয়া সেরা ৩০ বোলারের মধ্যে তার গড় (২২.২৭) দ্বিতীয় সেরা। মোস্তাফিজ ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত ম্যাচ খেলেন ৪৬টি। এই সময়ে ৩৭৮.৪ ওভার বল করে ১,৮৪৯ রান দিয়ে উইকেট নিয়েছেন ৮৩টি। শীর্ষে থাকা ভারতের জসপ্রীত বুমরা ৪৯ ম্যাচে ৪১৭.৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১,৮৮৩ রান দিয়ে ৮৫ উইকেট নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ওভাল শুনল ‘আমার সোনার বাংলা’, পদ্মাপারের জাতীয় আবেগে ডুবল সোশাল

তবে অন্য কোনো সময়ের মতো শুধু একজন এবার বাংলাদেশের ভরসা নয়। অভিজ্ঞতার বিচারে রীতিমতো প্রথম সারিতে টিম টাইগার্স। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা এই বিশ্বকাপে একমাত্র পেসার, যিনি ২০০৩ সালের টুর্নামেন্টে খেলেছেন। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে দশ দলে মোট ১১ জন তারকা আছেন, যাঁরা ২০০৭ বিশ্বকাপে খেলেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশেই চারজন-মাশরাফী, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহিম। অভিজ্ঞতাই সব নয়, আবার অভিজ্ঞতা ফেলনাও নয়। ক্রীড়া জগতের এই এপিঠ-ওপিঠ বাংলাদেশের অজানা নয়। প্রয়োজন শুধু সমন্বয়ের। সেটি অবশ্য কঠিন। আজ সেই কঠিনের সঙ্গেই প্রেম হোক!

New Zealand Bangladesh Cricket World Cup
Advertisment