Advertisment

বাংলাদেশেও এবার গোলাপি টেস্ট, সৌরভের শহরে ঢোকার আগেই জানালেন আক্রম

দিন-রাতের টেস্ট ঘিরে মহাযজ্ঞ চলছে শহর কলকাতায়। দুই দেশের প্রথম গোলাপি বলের টেস্ট আয়োজন করতে চেষ্টার খামতি রাখছে না সিএবি ও বিসিসিআই। ইন্দো-বাংলা দ্বৈরথে সাক্ষী থাকতে চলেছেন নামি দামি তারকারা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Akram Khan

বাংলাদেশেও এবার হতে চলেছে গোলাপি বলের টেস্ট, বলছেন আক্রম খান (ফেসবুক)

ইডেনে গোলাপি বলে বাইশ গজে হাতেখড়ি ভারতের। সেই সঙ্গে বাংলাদেশেরও। দুই দেশই প্রথমবার সবুজ মাঠে গোলাপি যুদ্ধে মুখোমুখি। কলকাতায় অভিষেক লগ্ন পেরিয়ে বাংলাদেশ থেমে থাকতে চায় না। গোলাপি টেস্টে আয়োজন করতে চলেছে বাংলাদেশও। জানিয়ে দিলেন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন বিভাগের দায়িত্বে থাকা আক্রম খান। ঢাকা বিমানবন্দরে কলকাতার ফ্লাইট ধরার আগে বাংলাদেশ ক্রিকেটের 'বিগম্যান' জানাচ্ছেন, "ইডেনে দারুণ হতে চলেছে গোলাপি বলের টেস্ট। ওখানে গিয়ে দেখি। ভবিষ্যতে দিনরাতের টেস্ট আয়োজন আমাদেরও পরিকল্পনায় রয়েছে। তবে কোথায়, কখন হবে, তা এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি।"

Advertisment

দিন-রাতের টেস্ট ঘিরে মহাযজ্ঞ চলছে শহর কলকাতায়। দুই দেশের প্রথম গোলাপি বলের টেস্ট আয়োজন করতে চেষ্টার খামতি রাখছে না সিএবি ও বিসিসিআই। ইন্দো-বাংলা দ্বৈরথে সাক্ষী থাকতে চলেছেন নামি দামি তারকা, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক জগতের স্বনামধন্য ব্যক্তিরা। ইডেনে বসছে চাঁদের হাট। বাংলাদেশের প্রথম টেস্টের ক্রিকেটার এবং কর্মকর্তা হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছেন আক্রম খানও। তিনিই বলছিলেন, "সৌরভ নিজে আমাদের ফোন করে আমন্ত্রণ করেছেন। সৌরভ আমাদের ক্রিকেটের উন্নতিতে অনেক সাহায্য করেছেন। তাই গোলাপি বলে খেলতে আমরা রাজি হয়ে গিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও যাচ্ছেন টেস্ট দেখতে। দারুণ একটা অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে চলেছি আমরা।"

আরও পড়ুন মমতা-সৌরভের জন্য মিষ্টি নিয়ে শহরে রুনা লায়লা, সুরের ঝড়ের অপেক্ষায় ইডেন

আক্রম খান বললেই পদ্মাপাড়ের ক্রিকেটে পরতে পরতে নস্ট্যালজিয়া জেগে থাকে। ভারতের বিরুদ্ধে দু-দশক আগে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে দেশের ক্রিকেটের অলিখিত ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন। তার-ও আগে ১৯৯৭-এ বিশ্বকাপের মূলপর্বে জায়গা করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। আক্রম খানের হাত ধরেই। টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে আক্রম খানের অপরাজিত ৬৮ রানের ইনিংস এখনও বাংলাদেশি ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে টাটকা। ১৫ রানেই আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে গিয়েছিলেন আতাহার আলি খান, নাঈমুর রহমান দূর্জয়, সানোয়ার হোসেন ও আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

akram khan বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রথম তারকা আক্রম খান (ফেসবুক)

তারপরে রূপকথা লিখেছিলেন আক্রম। বিশ্বকাপের গোলার্ধে সবুজ-লাল জার্সিধারীরা পৌঁছে যেতেই শৈশব থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট পা দিয়েছিল কৈশোরে। তারপরে ১৯৯৯-এ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে পাক-বধেও আক্রম খানের ৪২। পুরনো স্মৃতির খেই ধরিয়ে দিলে তিনি ব্যস্ততম মুহূর্তেও বলে দেন, "ওই টেস্ট ছিল দেশের জন্য গর্বের। প্রথম ইনিংসে ৪০০ রান করার পর স্বয়ং শচীন তেন্ডুলকার এসে বলছিল ‘তোমরা ভাল খেলেছ।"

আরও পড়ুন ইডেনে স্বপ্নপূরণের আমন্ত্রণ, অপেক্ষায় সৌরভের প্রিয় শান্ত

শচীনের সংশাপত্র আজও অদৃশ্যভাবে বুকে গাঁথা থাকে। বুধবার সন্ধেতে তাঁকে যখন ধরা গেল তখন ব্যাগ পত্তর গোছাচ্ছেন তিনি। ফ্লাইট ধরবেন কলকাতার। মিনিট পনের পরে ফোন করতে বললেন। ঘড়ির কাঁটা মেনে ফোন করতেই তাঁর গলা ভেসে আসে, "বিমানবন্দরে পৌঁছে গিয়েছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই টার্মিনালে ঢুকে পড়ব।" থরোথরো উত্তেজনা মাখা গলায় ফোনের অন্যপ্রান্ত থেকে তিনি বলতে থাকেন, "এ রকম একটা ঐতিহাসিক টেস্টে সৌরভ আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রথমবার গোলাপি বলে টেস্ট খেলব আমরা। ভারতের জন্যও প্রথম। রোমাঞ্চকর বিষয় হতে চলেছে।"

bangladeshi cricketers কলকাতায় প্রাক্তন বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা (ফেসবুক)

সৌরভের সঙ্গে পরিচয় অবশ্য বহু পুরনো। খেলোয়াড়ি জীবন থেকেই দুই পাড়ের দুই বাঙালি ক্রিকেটারের সখ্যতা। প্রিয় বন্ধু কিছুদিন আগেই ভারতীয় ক্রিকেটের মসনদে বসেছেন। সেই সৌরভের কাছ থেকে আমন্ত্রণ। তাই আর দেরি করেননি। প্রতীক্ষায় ছিলেন। পুরনো বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করেই তিনি বলে দেন, "ইডেনে আমাদের অভিষেক টেস্টের গোটা দলকে আমন্ত্রণ জানানোয় সৌরভকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ও আমাদের সম্মান দেখিয়েছে। ইডেনে খেলার অভিজ্ঞতা আগেই ছিল। ১৯৯০-এর এশিয়া কাপে আমরা খেলেছিলাম শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এবার ঐতিহাসিক টেস্টের সাক্ষী থাকতে চলেছি।"

আরও পড়ুন এক টেস্ট খেলেই বিদায়! ইডেনে বিকাশের যন্ত্রণার শরিক হবেন শচীন-সৌরভও

ইডেন টেস্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই পাগলপারা উন্মাদনা কলকাতায়। সেই খবর এসে পৌঁছেছে বিসিবির দফতরেও। সাদা পোশাকের ক্রিকেট নিয়ে যখন বিশ্বজনীন অনীহা, তখনই নতুনত্বের সন্ধান দিচ্ছে গোলাপি বলে দিন-রাতের টেস্ট। বিশুদ্ধবাদীদের কাছে টেস্ট ক্রিকেটের ঐতিহ্য নিয়ে যতই গোঁড়ামি থাকুক না কেন, গোলাপি পথেই যে ভবিষ্যতে হাঁটবে পাঁচ দিনের ক্রিকেট, তা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন বিসিবি কর্তারা।

Sourav Ganguly Test cricket Bangladesh
Advertisment