Violators may face IPL ban: কেন্দ্রীয়ভাবে চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের ওপর বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। এই নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী খেলোয়াড়রা সফরে ব্যক্তিগত কর্মীদের নিয়ে যেতে পারবেন না। তাঁদের পারিবারিক সদস্যরা সঙ্গে ভ্রমণ করতে পারবেন না। পাশাপাশি সফর চলাকালীন খেলোয়াড়রা কোনও বিজ্ঞাপনের শ্যুটিং করতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নিষেধাজ্ঞা ভাঙলে অমান্যকারী ক্রিকেটাররা আইপিএলও খেলতে পারবেন না।
অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে ফেরার পর বিসিসিআই একটি পর্যালোচনা সভার আয়োজন করেছিল। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মোট ১০ দফা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেই সব নিষেধাজ্ঞাগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের কাছে পাঠিয়েও দিয়েছে বিসিসিআই। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ক্রিকেটারদের ঘরোয়া টুর্নামেন্টে বাধ্যতামূলকভাবে অংশগ্রহণ করতেই হবে। সফরে ম্যাচ শেষ হলে খেলোয়াড়রা সাত-তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে পারবেন না। তাঁদের দলের বাকিদের সঙ্গেই বাড়ি ফিরতে হবে।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কী হবে, তা-ও জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই। তারা জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়ের ম্যাচ ফি কাটা যাবে। ওই সব খেলোয়াড়দের বোর্ড পরিচালিত টুর্নামেন্টে খেলতে দেওয়া হবে না। তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে। সম্প্রতি বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি সিরিজে টিম ইন্ডিয়া অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১-৩ ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে। তার আগে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। ভারতীয় দলের এই বাজে পারফরম্যান্সের জন্য টিম ইন্ডিয়ার খেলোয়াড়দের ওপর ক্ষুব্ধ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন বিসিসিআই সচিব জয় শাহ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হোম সিরিজের মাঝখানেই জানিয়েছিলেন, ভারতীয় দলের খেলোয়াড়দের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে হবে। তিনি সেকথা জানানোর একমাসেরও কম সময়ের মধ্যে বিসিসিআই ভারতীয় দলের খেলোয়াড়দের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা বাধ্যতামূলক বলে জানাল। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, শুভমান গিলের মত প্রথমসারির খেলোয়াড়রা ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁদের অনেকে নিজেদের রাজ্যের দলের সঙ্গে অনুশীলনও শুরু করে দিয়েছেন।
বিসিসিআই তাদের নির্দেশনামায় জানিয়েছে, শুধুমাত্র ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী বা ম্যানেজারই নন। খেলোয়াড়রা সফরে হেয়ার ড্রেসার এবং স্টাইলিশদেরও নিয়ে যেতে পারবেন না। কিছু নামী খেলোয়াড় সফরে তাঁদের সঙ্গে শেফ নিয়ে যান। সেক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিসিসিআই। নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, সফরে খেলোয়াড়রা ব্যক্তিগত যানবাহন ব্যবহার করতে পারবেন না। তাঁদের টিমের সঙ্গেই ঘুরে বেড়াতে হবে। এই ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, 'সমস্ত খেলোয়াড়দের ম্যাচ এবং অনুশীলন সেশনে দলের সঙ্গেই সফর করতে হবে। দলের মধ্যে শৃঙ্খলা এবং সমন্বয় বজায় রাখতে সফরের মধ্যে পরিবারের সঙ্গে আলাদাভাবে ভ্রমণ করা যাবে না।'
এই সব নিয়ম আগেও চালু ছিল। সেই সময় বিরাট কোহলি ভারতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন। কিন্তু, কোভিড জমানার পরবর্তী সময় থেকে এই সব নিয়মগুলো কিছুটা হলেও শিথিল করা হয়েছিল। এবার সেই শিথিলতা প্রত্যাহার করে ভারতীয় দলের জন্য আবার সেই পুরোনো এবং কড়া নিয়মগুলো চালুর পথেই হাঁটল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, খেলোয়াড়দের পরিবারের সদস্যরা ৪৫ দিন বা তার বেশি সময়ের সফরে সংশ্লিষ্ট প্লেয়ারের সঙ্গে ১৪ দিনের বেশি কাটাতে পারবেন না। খেলোয়াড়দের অনুশীলনে বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থিত থাকতেই হবে। এই ব্যাপারে বিসিসিআইকে লিখিতভাবে জানাতে হল, কারণ ভারতীয় দলের খেলোয়াড়রা অনুশীলনে অংশগ্রহণ করবেন কি না, সেটা রবি শাস্ত্রী এবং রাহুল দ্রাবিড়ের জমানায় খেলোয়াড়দের ইচ্ছাধীন ছিল।
আরও পড়ুন- কোহলির ক্যাপ্টেন্সি নিয়মেই ফিরছে বোর্ড! ফেরানো হচ্ছে কড়া নির্দেশিকা
এর পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে সফরকালে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপনী শ্যুংটিয়েও। নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, 'সিরিজ বা সফরের সময় খেলোয়াড়রা ব্যক্তিগত শ্যুটিং করতে পারবেন না। কারণ, তাতে তাঁদের মনসংযোগে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।' একইসঙ্গে, খেলোয়াড়দের সফর থেকে আলাদাভাবে দেশে ফেরার ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গিয়েছে যে খেলোয়াড়রা দেশ-বিদেশে সফরকালে বাড়িতে আলাদাভাবে যাতায়াত করছেন। সেই প্রসঙ্গে নিষেধাজ্ঞায় বিসিসিআই বলেছে, 'সিরিজ বা সফর শেষ না হওয়া পর্যন্ত খেলোয়াড়দের দলের সঙ্গেই থাকতে হবে। ম্যাচ আগেভাগে শেষ হয়ে গেলেও তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারবেন না। খেলোয়াড়দের দলের সঙ্গেই থাকতে হবে। এতে দলের স্পিরিট এবং একতা বাড়বে বলেই মনে করছে বিসিসিআই।'