BCCI’s Test Cricket Incentive Scheme: বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) তার খেলোয়াড়দের জন্য একটি নতুন 'টেস্ট ক্রিকেট ইনসেনটিভ স্কিম' চালু করেছে। এই পদক্ষেপ সেই খেলোয়াড়দের পুরস্কৃত করার জন্য, যাঁরা লাল বলের ক্রিকেট অর্থাৎ টেস্ট ক্রিকেটকেই অগ্রাধিকার দেন। বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ জানিয়েছেন যে এই স্কিমের সুবিধাগুলি চেতেশ্বর পূজারার মতো খেলোয়াড়দের কাছে পৌঁছবে, যাঁরা কোনও আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির অংশ নন। এই স্কিমের সাহায্যে তাঁরা টেস্ট ক্রিকেট খেলে উপকৃত হবেন।
টেস্ট ক্রিকেটের ইনসেনটিভ কী?
এই স্কিমের মূল উদ্দেশ্য হল, টেস্ট ম্যাচ খেলার জন্য খেলোয়াড়দের আরও বেশি করে অর্থ দেওয়া। এর ফলে নন-আইপিএল চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়রা এখন টেস্ট ক্রিকেট খেলেও ভালো আয় করতে পারবেন। যে খেলোয়াড়রা কোনও মরশুমে ৫০%-এর কম ম্যাচ খেলবেন, তাঁরা শুধুমাত্র ম্যাচ ফি বাবদ ১৫ লক্ষ টাকা পাবেন। যাঁরা ৫০%-এরও বেশি ম্যাচের স্কোয়াডে থাকবেন, যদি প্লেয়িং ইলেভেনে থাকেন, তাঁরা অতিরিক্ত ৩০ লক্ষ টাকা পাবেন। আর, নন প্লেয়িং ইলেভেনে থাকলে অতিরিক্ত ১৫ লক্ষ টাকা পাবেন। আর, ৭৫%-এরও বেশি স্কোয়াডে থাকা খেলোয়াড়রা পাবেন অতিরিক্ত ৪৫ লক্ষ টাকা। আর, নন প্লেয়িং ইলেভেনে থাকলে অতিরিক্ত ২২.৫০ লক্ষ টাকা পাবেন।
কারা উপকৃত হবেন?
বিসিসিআই ২০২২-২৩ মরশুম থেকে এই প্রকল্প শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সময় ভারত ছয়টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। তাই যাঁরা তিনটির কম ম্যাচে খেলেছেন, তাঁরা ইনসেনটিভের জন্য যোগ্য হবেন না। উদাহরণস্বরূপ, পূজারা ২০২২-'২৩ মরশুমে ছয়টি টেস্ট ম্যাচের সবকটিই খেলেছেন। তাঁকে ম্যাচ ফি হিসেবে প্রতি টেস্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। এছাড়াও প্রতি খেলায় ৪৫ লক্ষ টাকা করে প্রণোদনা বা ইনসেনটিভ দেওয়া হবে। এর মানে হল, পূজারা সেই নির্দিষ্ট মরশুমে ৩.৬ কোটি টাকা আয় করবেন। উমেশ যাদব, যিনি ২০২২-'২৩ মরশুমে চারটি টেস্ট খেলেছিলেন, আর ছয়টি টেস্ট ম্যাচেরই স্কোয়াডে ছিলেন, তিনি যে দুটি ম্যাচ খেলেননি, তার ইনসেনটিভ হিসেবে প্রতিটির জন্য ২২.৫০ লক্ষ টাকা পাবেন। আর, যে চারটে ম্যাচ খেলেছেন, তার প্রতিটির জন্য ৪৫ লক্ষ টাকা করে ইনসেনটিভ হিসেবে পাবেন। অর্থাৎ, তিনি মোট পাবেন ৩.১৫ কোটি টাকা।
কী কারণে বিসিসিআই এই ইনসেনটিভ স্কিম চালু করল?
ঈশান কিশান-শ্রেয়স আইয়ারের মতো খেলোয়াড়রা রঞ্জি ট্রফি না-খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বদলে, তাঁরা আইপিএল ক্রিকেটের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন। বিসিসিআই এবং টিম ম্যানেজমেন্ট তাই মনে করেছে, সময় এসেছে যে খেলোয়াড়রা লাল-বলের ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদেরও আর্থিকভাবে পুরস্কৃত করা উচিত। বর্তমান ভারতীয় দলের শীর্ষ খেলোয়াড়রাও এর আগে বিসিসিআইকে টেস্ট ক্রিকেটের বেতন কাঠামোটি পুনরায় বিবেচনা করার অনুরোধ করেছিলেন। কারণ, আইপিএল বেতন এবং টেস্ট বেতনের মধ্যে একটি বড় ব্যবধান রয়েছে। যা বোর্ডও উপলব্ধি করতে পেরেছে।
আরও পড়ুন- টানা দুটো টি২০ সেঞ্চুরি, ৪৮ বলে শতরান! বিধ্বংসী ব্যাটারকে সই করিয়ে ঝড় তুলল নাইটরা
বিসিসিআইয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়দের বর্তমান বেতন কাঠামো কেমন?
বিসিসিআই টেস্ট ম্যাচপিছু খেলোয়াড়দের ১৫ লক্ষ টাকা দেয়। নন-প্লেয়িংরা পান অর্ধেক অর্থাৎ ৭.৫০ লক্ষ টাকা। একদিনের ক্রিকেটেও সেভাবে ম্যাচ পিছু ৬ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। নন-প্লেয়িংরা পান ৩ লক্ষ টাকা। টি২০ ম্যাচে দেওয়া হয় ৩ লক্ষ টাকা করে। নন-প্লেয়িংরা পান ১.৫ লক্ষ টাকা। ম্যাচ ফি ছাড়াও চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়রা বিসিসিআই থেকে বার্ষিক মোটা টাকা পান। এ প্লাস গ্রেড খেলোয়াড়রা পান ৭ কোটি টাকা। এ গ্রেড খেলোয়াড়রা পান ৫ কোটি টাকা। বি গ্রেড খেলোয়াড়রা পান ৩ কোটি টাকা। আর, সি গ্রেড খেলোয়াড়রা পান ১ কোটি টাকা।