Bengaluru Stampede Update: ১৮ বছরের অপেক্ষা, আইপিএল ট্রফি এবং গোটা শহরজুড়ে উদ্যাপনের প্রস্তুতি, সবকিছু ঠিকই ছিল। কিন্তু রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর এই ঐতিহাসিক জয়ের আনন্দ উৎসব বুধবার এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় পরিণত হয়, যখন চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে অনিয়ন্ত্রিত জনতার চাপে হুড়োহুড়ি শুরু হয় এবং তাতে ১১ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন ২৫ জনেরও বেশি।
প্রশাসন যেখানে প্রায় ২ লক্ষ মানুষের জমায়েতের অনুমান করেছিল, সেখানে প্রায় ৬ লক্ষ মানুষ স্টেডিয়াম এবং তার আশপাশে জড়ো হয়ে যান। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে ৩২,০০০ দর্শকধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়ামে প্রায় ১ লক্ষ মানুষ জোর করে ঢুকে পড়েন।
এক গেটেই ভিড়, শুরু হয় হুড়োহুড়ি
স্টেডিয়ামে ঢোকার জন্য একাধিক গেট থাকলেও বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। বিপুল জনতা হঠাৎ করে একটিমাত্র গেটের দিকে ধেয়ে যায়। পুলিশ ও স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ তাদের থামানোর চেষ্টা করে, কিন্তু মানুষ কোনও কথা শুনছিল না। অনেকে দেওয়াল টপকে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। এক আধিকারিক জানান, “মানুষ যেকোনও মূল্যে ভিতরে ঢুকতে চাইছিল। কেউ গেট বা নিরাপত্তা কর্মীদের কথায় কান দেয়নি।”
আরও পড়ুন কোহলিদের বিজয়োৎসব বদলে গেল বিষাদে, ভয়াবহ ঘটনায় বেঙ্গালুরুতে মৃত্যুমিছিল
নাচ-গান থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি
স্টেডিয়ামের বাইরের পরিবেশ একেবারে উৎসবমুখর ছিল। হাজার হাজার মানুষ ঢোল-নাগাড়ার তালে নাচছিলেন, বাজি ফাটাচ্ছিলেন, আর বিরাট কোহলি ও ফাফ ডু প্লেসির কাটআউটে মালা দিচ্ছিলেন। কিন্তু ভিড় যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন আনন্দ মুহূর্তেই আতঙ্কে রূপ নেয়। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মানুষ স্টেডিয়ামের দিকে ছুটে যায়।
আহতদের চিকিৎসা চলছে
এই ঘটনায় যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের দ্রুত বাওরিং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনও হাসপাতালের বাইরে মানুষের ভিড় রয়েছে। পুলিশ সাধারণ মানুষের প্রতি অনুরোধ করছে যাতে কেউ হাসপাতালে ভিড় না করে এবং আশপাশের এলাকা খালি রাখে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষ মাটিতে পড়ে যাচ্ছে, পিছন থেকে ধাক্কা আসছে, এবং সবাই কোনওভাবে ভিতরে ঢুকতে মরিয়া।
প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা?
আরসিবির প্রথম আইপিএল জয় এবং শহরের উন্মাদনা আগাম জানাই ছিল, তবুও প্রশাসন কেন মাত্র ২ লক্ষ মানুষের প্রস্তুতি নিল, এটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেই আগে থেকেই লাখ লাখ মানুষের সমাগমের আভাস ছিল। তবুও ট্র্যাফিক রুট, বিকল্প স্থান বা প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ কোনও পরিকল্পনা দেখা যায়নি। এই ব্যর্থতাই বড় বিপর্যয়ের কারণ হয়ে উঠল।