Advertisment

ফেডারেশন কর্তাদের অদূরদর্শিতায় ভুগছে দেশের ফুটবল

অর্থের আমদানি করতে গিয়ে ফেডারেশনের কর্তারা বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করলেন। ফলস্বরূপ দেশের ফুটবলের মাণদণ্ড কার্যত তুলে দিলেন সেই বেসরকারি সংস্থার হাতে। এতেই শুরুর বিতর্ক।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
AIFF_ILeague_ISL

দুই লিগের সংযুক্তিকরণ নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে

ঐতিহ্য় বনাম কর্পোরেট সংস্কৃতি। ফুটবলের প্রতি বন্য আবেগ বনাম পেশাদারিত্বের মোড়কে ঔজ্জ্বল্য। মধ্যবিত্ত সংসার বনাম বিপুল অর্থের হাতছানি। ভারতীয় ফুটবল আপাতত দুই মেরুতে ভেঙে গিয়েছে। আইলিগ বনাম আইএসএল দ্বৈরথ ভারতীয় ফুটবলের শিরোনামে সুপার লিগের জন্মলগ্ন থেকে। বলা ভাল, এফডিএসএলের সঙ্গে ২০১০ সালের চুক্তিতে সংঘাতের বীজ বপন করেছিলেন সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার কর্তারাই। সেই সংঘাতই নয় বছর পরে রীতিমতো যুদ্ধের আকার নিয়েছে। দেশের শীর্ষ স্থানীয় লিগ কোনটা হবে, তার বিচার করতে গিয়ে আপাতত ফেডারেশন কর্তাদের অবস্থা "ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি" গোছের।

Advertisment

বিশ্বের কোনও দেশে দুটো সমান্তরাল লিগ আয়োজন করা হয় না। সেটাই হয়ে চলেছে ভারতে। এমনিতেই ক্রিকেট-বুভুক্ষু দেশে সর্বত্র ফুটবলের ক্রেজ নেই। ক্রিকেটের সমকক্ষ দুনিয়ার বাসিন্দা করতে হলে, ফেডারেশন কর্তাদের সর্বাগ্রে প্রয়োজন ছিল ফুটবলে আরও বেশি অর্থের আমদানি ঘটানো। খেলার জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য নিত্যনতুন উদ্ভাবনী চিন্তার প্রয়োগ ঘটানো। এবং সর্বোপরি তৃণমূল স্তরে সরকারি স্তরে ফুটবলের প্রসার।

আরও পড়ুন আইএসএল-আইলিগের রোডম্যাপ জানিয়ে দিল ফেডারেশন

তবে অর্থের আমদানি করতে গিয়ে ফেডারেশনের কর্তারা বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করলেন। ফলস্বরূপ দেশের ফুটবলের মাণদণ্ড কার্যত তুলে দিলেন সেই বেসরকারি সংস্থার হাতে। এতেই শুরু বিতর্ক। এফডিএসএলের সঙ্গে ফেডারেশনের চুক্তিতেই ছিল, পাঁচ বছর বিনোদনমূলক লিগ খেলার পরে আইএসএল-কে দেশের একনম্বর লিগ ঘোষণা করতে হবে। পাঁচ বছর অতিক্রান্ত, এখন নিয়ম মেনেই আইএসএল আয়োজক কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন সুপার লিগকে দেশের শীর্ষস্থানীয় লিগ ঘোষণা করা হোক। সেই দাবিকে মান্যতা দিয়েই সপ্তাহের শুরুতে ফেডারেশনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আসন্ন ছয় বছরের ভারতীয় ফুটবলের রেখাচিত্র। যেখানে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, আইএসএলই দেশের সেরা লিগের স্বীকৃতি পাচ্ছে। আইলিগ হচ্ছে দ্বিতীয় ডিভিশনের। ধীরে ধীরে দুই লিগের সংযুক্তিকরণ  ঘটবে।

অন্যদিকে, আবার মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের মতো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবগুলো এখনও ওজন বুঝে চলছে। শুরুতে বিদ্রোহের ইঙ্গিত দিলেও সমর্থকপুষ্ট ক্লাবগুলির দাবি আপাতত একটাই। দেশের সেরা লিগে খেলতে হবে। ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে বিনিয়োগকারী সংস্থা কোয়েসের সম্পর্ক তলানিতে। সম্ভবত, আগামীবছরেই সম্পর্কচ্ছিন্ন হওয়ার পথে কোয়েসের সঙ্গে ইনভেস্টরের। অন্যদিকে, মোহনবাগান আবার এখনও ইনভেস্টরের খোঁজে। ভারতীয় ফুটবলের এমন আবহে, দুই ক্লাবই নিজেদের মধ্য়ে পারমুটেশন-কম্বিনেশন করে চলছে।

ভারতীয় ফুটবলে আপাতত এত জট, এত মোচড় যে হিচককের থ্রিলারকেও হার মানাবে। চলতি মরশুমেই আইএসএলকে সেরা লিগ ঘোষণা না করলে, চুক্তি অনুযায়ী, তারা আদালতের দ্বারস্থ হবে। আবার এতে আইলিগের ক্লাবজোটগুলিও বিদ্রোহের পথে হাঁটবে। সেই বিতর্কের অবসান ঘটিয়েই আইএসএল আপাতত দেশের সেরা লিগ। যদিও একগুচ্ছ প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে। ফেডারেশনের একতরফা নীতিতে পুনরায় আইলিগ ক্লাবগুলি বিদ্রোহের পথে হাঁটে কিনা, সেটাই দেখার।

Indian Football AIFF ISL 2018
Advertisment