এটিকের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা সম্পন্ন মোহনবাগানের। এটিকের সঙ্গে সংযুক্তি গঙ্গাপাড়ের ক্লাবে সৌভাগ্য়ই বয়ে এনেছে। এটিকে যেমন আইএসএলের শেষ চারে ওঠা নিশ্চিত করেছে, তেমনই মোহনবাগান বর্তমানে আইলিগ তালিকায় শীর্ষস্থানে। ফের একবার আইলিগ জয়ের স্বপ্ন দেখছেন ভক্তরা।
আর এটিকে-সংযুক্তির জোরেই আইলিগ নয়, মোহনবাগান আপাতত আইএসএল খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামী মরশুম থেকেই শীর্ষ লিগের সম্মান পাচ্ছে আইএসএল। সেই লিগেই এবার খেলবে মোহনবাগান।
আর আইলিগে মোহনবাগানের শূন্যস্থান পূরণ করার দৌড়ে উঠে এল দিল্লির এক ক্লাবের নাম। সুদেভা এফসিকে মোহনবাগানের পরিবর্ত হয়ে ওঠার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলল। মঙ্গলবারেই আইলিগে খেলার জন্য বিড জমা দিল দিল্লির এই ক্লাবটি। এতদিন দিল্লির কোনও ক্লাব আইলিগে খেলেনি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মরশুম থেকেই সুদেভাকে দেখা যেতে পারে আইলিগে।
আরও পড়ুন জোর ধাক্কা কিংস ইলেভেনে! সাড়ে ১০ কোটির তারকা শুরুতে নেই
সুদেভা এফসিকে তুলে আনার পিছনে আবার এক বঙ্গসন্তান! সন্দীপ ঢোলে। দেশের ফুটবলের ফার্স্ট বেঞ্চে রাজধানী শহরকে নিয়ে আসতে উদ্যোগী এই বঙ্গসন্তান। অবাক হলেও এমনটাই সত্যি।
নদিয়ার সন্দীপবাবু স্বপ্ন দেখাচ্ছেন রাজধানী দিল্লিতে। সেখানের নামি ক্লাব হিন্দুস্থান এফসি-র সঙ্গে জড়িয়ে প্রায় ছ’বছরের উপরে। দ্বিতীয় ডিভিশনে সম্ভ্রম জাগানো নাম হিন্দুস্থান। ফুটবলার এবং তারপরে কোচিং— সবমিলিয়ে প্রায় দু’দশকের কাছাকাছি দিল্লির বাসিন্দা সন্দীপবাবু।
সেই সন্দীপবাবু যুক্ত হয়েছেন সুদেভা এফসির সঙ্গে। সুদেভার বর্তমান হেড কোচ ভুটানের চ্যাঞ্চো দর্জি। তবে আইলিগে তিনি থাকবেন কিনা, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
সুদেভার ভরসা বঙ্গসন্তানই। দিল্লি থেকে ফোনে সন্দীপবাবু বলছিলেন, ‘‘ক্লাবের সমস্ত যুব দল থেকে সিনিয়র দলের গোলকিপার বিভাগ- পুরোটাই আমার দায়িত্বে। ক্লাবের মালিক অনুজ গুপ্তের সঙ্গে আলোচনা সারছি ফুটবলার রিক্রুটমেন্টের জন্যও। ফুটবলার নির্বাচনের দিকটাও আমি দেখছি।’’ সুদেভা এফসি সম্প্রতি স্প্যানিশ লিগের দ্বিতীয় ডিভিশনের ক্লাব জাটিভা-র ৮৫ শতাংশ অধিগ্রহণ করেছে। সেই বিষয়ের কথা উল্লেখ করে সন্দীপবাবু বলছিলেন, স্প্যানিশ ধাঁচে ঢেলে সাজানো হতে পারে সুদেভাকে।
আরও পড়ুন এখনও কেন আইপিএলের সূচি প্রকাশ করা গেল না!
নদিয়া জেলার প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার ছিলেন আশির দশকে। চাকদহ নবীন সংঘের হয়ে জেলা ক্লাব চ্যাম্পিয়নও হয়েছেন। সারা দেশ ব্যপী আন্তঃবিশ্ববদ্যালয় টুর্নামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করেছেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্সিতে। তবে এরপরেই পিতার মৃত্যুর পরে সটান পাড়ি দেন দিল্লিতে।
এরপর শুরু সন্দীপবাবুর দিল্লি-অধ্যায়। তিনি বলছিলেন, ‘‘দিল্লিতে প্রথমদিকে অসুবিধা হচ্ছিল। তবে দিল্লির ফুটবল ঘরানার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়নি। দিল্লির হয়ে একে একে সন্তোষ ট্রফি, ডুরান্ড কাপ, রোভার্স কাপ, জাতীয় যুব পর্যায়েও অংশ নি-ই। ২০০০-২০০৮’এর মধ্যে শাস্ত্রী ক্লাব, তরুণ সংঘ, মুনলাইটে খেলে দিল্লির ঘরের ছেলে হয়ে উঠেছিলাম।’’
সুদেভায় কোচিংয়ের পাশাপাশি দিল্লির সন্তোষ ট্রফির কোচ তিনি। এয়ারফোর্সেও এখনও কোচিং করান। সন্দীপবাবুর কোচিংয়েই বেড়ে উঠছেন জে ধামি, আশিস শিবি-র মতো প্রতিশ্রুতিমান গোলকিপাররা। ছাত্র জে ধামি বর্তমানে যুব পর্যায়ে জাতীয় দলের গোলকিপার। দলের একনম্বর কিপার কেরালার আশিস শিবি আবার ফুটবল মহলের নজর কেড়ে নিয়েছে। যেকোনও দিন ডাক পেতে পারেন জাতীয় দলে।
নতুন ফুটবলার তুলে আনাই ব্রত। দিল্লির ফুটবল বদলে উঠছে এর বাঙালির হাত ধরে! এর থেকে গর্বের আর কী হতে পারে।