Advertisment

সোনালি ইতিহাস সত্ত্বেও ব্রাত্য দুই প্রধানে, অভিমানে নতুন ঠিকানায় বঙ্গসন্তান

ফোনে কিংশুকের গলায় হতাশা, কখনও আবার অবিশ্বাস! পর মুহূর্তেই আবার জেদের স্ফূলিঙ্গ ফোনের ওপারে। সদ্য প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গলী হলেও, নিজেকে মোহনবাগানি বলতেই ভালবাসেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
kingshuk

দুই প্রধান আপাতত ইতিহাস কিংশুকের কাছে (ফেসবুক)

লাল-হলুদ হোক বা সবুজ-মেরুন। দুই প্রধানেই খেলেছেন। সমর্থকদের হৃদয় জিতেছেন বছরের পর বছর। আর বদলে যাওয়া ময়দানি সংস্কৃতিতে তাঁকেই ব্রাত্যদের ব্র্যাকেটে চলে যেতে হল। কার্যত 'রিসাইকেল বিনে' পাঠিয়ে দেওয়া হল কিংশুক দেবনাথকে। আসন্ন কলকাতা লিগে তিনি খেলবেন ভবানীপুরের জার্সিতে। যেখানে তিনি জুটি বাঁধবেন কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তীর সঙ্গে। আরও একবার মাঠে নামবেন নিজেকে প্রমাণ করার জন্য়।

Advertisment

বড় ক্লাবের তারকারা কত তাড়াতাড়ি হারিয়ে যান? এখন হয়তো বলতে পারবেন শ্রীরামপুরের বঙ্গসন্তান। লাখো লাখো সমর্থকের বৃত্তে পরিবেষ্টিত হয়ে মাঠে নামতেন একসময়। জয়ধ্বনি দেওয়া হত ম্যাচের পরে। কত ডার্বিতে গোল বাঁচিয়ে সমর্থকদের হৃদয়ের বাসিন্দা হয়ে গিয়েছিলেন। এবার যখন তিনি বড় ক্লাবের বিপক্ষে মাঠে নামবেন, জনসমর্থন থাকবে প্রতিপক্ষ দলের ফুটবলারদের প্রতি। যাঁরা তাঁকে নিয়ে মাতামাতি করতেন, তাঁরাই যে এবার তাঁর অপোনেন্ট!

আরও পড়ুন

তারকা বিদেশিকে নিয়ে কর্তা-কোচের মন কষাকষি, চরম ডামাডোল ইস্টবেঙ্গলে

ফোনে কিংশুকের গলায় হতাশা, কখনও আবার অবিশ্বাস! পর মুহূর্তেই আবার জেদের স্ফূলিঙ্গ ফোনের ওপারে। সদ্য প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গলী হলেও, নিজেকে মোহনবাগানি বলতেই ভালবাসেন। কারণ উত্থান যে সবুজ মেরুন জার্সিতেই। সাত বছর কাটিয়েছেন গঙ্গাপাড়ের ক্লাবে। তারপরে এসেছিল সেই অভিশপ্ত সুপার কাপ। সুপার কাপে সুনীল ছেত্রী-মিকু দের বেঙ্গালুরু এফসি মোহনবাগান রক্ষণে বুলডোজার চালিয়েছিলেন। আর সেই ম্যাচের পরেই অলিখিতভাবে সমর্থকদের কাছে 'ভিলেন' বনে গিয়েছিলেন। মোহনবাগান অধ্যায়ের সেটাই ছিল ফুলস্টপ।

অবশ্য সুভাষ ভৌমিক-পর্বে তাঁকে ডেকে নেওয়া হয় পড়শি ক্লাবে। তারপর গঙ্গা দিয়ে গড়িয়েছে অনেক জল। ইস্টবেঙ্গলে ইনভেস্টররা কোচ আলেয়ান্দ্রোকে কোচ করে এনেছেন। তাঁর হাত ধরেই স্প্যানিশ রামধনু আঁকা হয়েছে লাল-হলুদ তাঁবুতে। তবে আলেয়ান্দ্রোর স্কোয়াডে প্রথম একাদশেও নো এন্ট্রি বোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল কিংশুকের কাছে। মরশুমের মাঝপথেই রিলিজ চেয়েছিলেন। নাকচ হয়ে গিয়েছিল সেই দাবি-ও।

নতুন মরশুমে আলেয়ান্দ্রোর 'খপ্পর' থেকে বেরোতে চাইছিলেন তিনি। অনেক আশা ছিল, হয়তো ডাক আসবে মোহনবাগান থেকে। স্প্যানিশ কোচের জমানা শুরু বাগানেও। তবে ডাক আসেনি। বরং ফিরিয়ে আনা হয়েছে ধনচন্দ্র সিংকে। ইস্টবেঙ্গল থেকে সই করানো হয়েছে কৌশিক সরকারকে। আর স্টপার পজিশনে স্পেনের চতুর্থ ডিভিশনে খেলা ফ্যান মোরান্তেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। কোথাও ঠাঁই হয়নি প্রাক্তন তারকার। কিংশুক সেই কর্ণেলের মতো, যাঁর ঠিকানায় কেউ আর চিঠি লেখে না।

আক্ষেপ আর হাহাকার কিংশুকের জন্য। সেসব ভুলেই আপাতত ভবানীপুরের জার্সিতে আরও একবার খেলতে নামবেন। প্রমাণ করার আর কিছুই নেই। ভবানীপুরের অনুশীলন শুরু হয়ে গিয়েছে। আর সোমবার থেকেই নয়া ঠিকানায় রওনা দিচ্ছেন কিংশুক। জেদ আর প্রতিজ্ঞা তারকা ফুটবলারকে ফের একবার ফিনিক্স পাখি হতে শেখাবে? অপেক্ষায় ময়দান।

East Bengal Kolkata Football Mohun Bagan Calcutta Football League
Advertisment