মর্গ্যান মর্গ্যান শব্দব্রহ্ম এখনও তাড়া করে তাঁকে। স্মৃতি তাঁকে এখনও অলস করে তোলে লাল-হলুদ জার্সির প্রসঙ্গ উঠলে। আর প্রিয় ক্লাব নামছে নতুন মরশুমের প্ৰথম ডার্বিতে। তার আগে নিজের আবেগ গোপন রাখলেন না। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে উজাড় করে দিলেন মনের কথা।
এখনও কি ইস্টবেঙ্গল, ভারতীয় ফুটবল নিয়মিত ফলো করেন?
মর্গ্যান: আইএসএল তো বটেই আইলিগের ফলাফলই নিয়মিত ফলো করি।
রবিবার কি ডার্বি দেখবেন?
মর্গ্যান: ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে রেজাল্ট জেনে নেব।
আইএসএল-এ নাম লেখানোর পর থেকেই সমর্থকদের কাছে মনে রাখার মত কিছু করতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। বারবার বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সংঘাত দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে। এই বিষয়ে আপনার মত কী?
মর্গ্যান: আমি যেটুকু বুঝি, ক্লাবের স্ট্রাকচারে সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক পদে রাখতে হবে। শেষ ১০ বছরে বহু কোচকে ছাঁটাই করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও কতজন ক্লাব কর্তা ময়দান ছেড়েছেন?
আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গলে চোট পাওয়া বিদেশি, ম্যান ইউ-র বিরুদ্ধে দুরন্ত গোলের মালিকও এবার ISL-এ
সময় যখন সঠিক থাকে না। তখন তাঁদের সমর্থন প্রয়োজন। সফল হওয়ার অন্যতম শর্তও হল স্থিরতা। গত কয়েক মরশুম ধরেই প্লেয়ার হোক বা কোচ বারবার অদলবদল ঘটেছে ইস্টবেঙ্গলে। তাই ট্রফি জয়ের জন্য মানসিকতা বা সংস্কৃতি গড়ে ওঠার মত পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়নি। বর্তমান বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে এখন তা ঘটতে পারে।
ডার্বিতে কারা ফেভারিট হিসাবে মাঠে নামবে বলে মনে হয়?
মর্গ্যান: বলতে হৃদয়ে যন্ত্রণা দেয়, তবে মোহনবাগান এই মুহূর্তে ডার্বির জন্য ফেভারিট। কারণ ওঁদের একটা সেটলড স্কোয়াড রয়েছে। ফুটবলাররা একে অন্যকে চেনে এবং একসঙ্গে খেলছে। ইস্টবেঙ্গল কোনওরকমে স্কোয়াড গড়েছে। অনেকেই প্রথমবার ডার্বিতে নামার স্বাদ পাবে। তবে কখনও কখনও জেতার অদম্য ইচ্ছা, প্যাশন, খিদের কাছে ট্যাকটিক্স ম্লান হয়ে যায়। সেটাই যেন এবার ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে হয়।
আরও পড়ুন: দোহার্তিকে সই করিয়ে কি বড় ভুল করল ইস্টবেঙ্গল! সমর্থকদের চিন্তা বাড়ছে ভয়ঙ্কর আপডেটে
এখনও কি পুরোনো ছাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে?
মর্গ্যান: বেশ কয়েকজন ছাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল একটা সময় পর্যন্ত। আসলে ওঁদের কাছ থেকে শুনতে ভালোই লাগে।
ইস্টবেঙ্গলের কোচ বাছাইয়ে জর্জে কোস্তার বদলে স্টিফেন কনস্টানটাইনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যিনি কখনও এর আগে ভারতীয় ক্লাব ফুটবলে কোচিংই করেননি। সঠিক বাছাই হল?
মর্গ্যান: কনস্টানটাইনের ভারতীয় ক্লাব ফুটবলে প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা না থাকলেও ক্লাব কর্তারা তাঁকেই চেয়েছেন। তবে জাতীয় দলে কোচিং করানোর সময় মিস্টার কনস্টানটাইন ফুটবলারদের দায়িত্ব, দক্ষতা সম্পর্কে নিশ্চয় ওয়াকিবহাল হয়েছেন। তবে এবার সঠিক বিদেশি বাছাই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তবে বিদেশিরা যেন মনে না করে, স্থানীয় ফুটবলারদের থেকে ওঁরা এগিয়ে। ওঁরা যদি কঠোর পরিশ্রম করে, তাহলে ক্লাব সঠিক গন্তব্যের দিকে এগোতে পারবে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সেরা ক্লাব হওয়ার সামর্থ্য রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। সেটা দেখতে মুখিয়ে রয়েছি।
লাল-হলুদ তাঁবুতে নিজের সোনালি অধ্যায় ফেলে এসেছেন ট্রেভর মর্গ্যান (ফেসবুক)
ভারতীয় ফুটবলে ফিফার নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আপনার অভিমত কী?
মর্গ্যান: ফিফা যে হালকাভাবে এবং কোনও চিন্তাভাবনা না করেই ভারতীয় ফুটবলকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে, এমনটা নয়। ভারতীয় ফুটবল প্রশাসনে যত স্থিরতা আসবে, ততই এই বিপর্যয়ের ধাক্কা কমে আসবে। ফুটবলেরই এতে উন্নতি হবে।
ইস্টবেঙ্গল জীবন কতটা মনে রেখেছেন?
মর্গ্যান: আমার ফুটবল কেরিয়ারের অন্যতম সেরা দিন ছিল সেগুলো। এমন প্লেয়ারদের স্কোয়াড ছিল আমার ইস্টবেঙ্গলে যাঁরা পরস্পরের জন্য ইঁটের দেওয়ালে ধাক্কা খেতেও পিছপা হত না। মানুষ হিসাবেও ওঁরা অসম্ভব ভালো ছিল। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা যেন আরও সেসব দিন ফিরে পান।