শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের 'এগ্রিমেন্ট' কার্যত 'ডেথ ওয়ারেন্ট' হয়ে দাঁড়িয়েছে! নজিরবিহীনভাবে এবার দিলীপ ঘোষের তোপের মুখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার শয়ে শয়ে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের বিদ্রোহী মূর্তি দেখেছে শহর। সই জটিলতায় ক্লাবের ভবিষ্যৎ চরম সঙ্কটের মুখে পড়তেই কর্মকর্তাদের 'গদি ছাড়ার' স্লোগান ভেসে উঠছে লেসলি ক্লডিয়াস সরণিতে। সমর্থকদের চরম বিক্ষোভ ঠেকাতে কলকাতা পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে, বলে অভিযোগ উঠেছে। রক্তাক্ত, রণক্লান্ত সমর্থকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন লাল হলুদ প্রাক্তনীরাও।
আরো পড়ুন: আগে ডাকেনি, এখন প্রাক্তনদের টার্মশিট দেখানোর জন্য কর্তারা ব্যস্ত কেন: গৌতম সরকার
বেনজির ধুন্ধুমারের পরেই এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দাগলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তিনি নিজের টুইটার একাউন্টে একটি ভিডিও পোস্ট করে তীব্র ভাষায় মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধেছেন।
তিনি বলেছেন, "আজ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সমর্থকদের নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে দেখে মনটা খুব খারাপ লাগল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর ভরসা করে ওঁদের আজ এই দুর্দশা। আইএসএলে ক্লাবকে তুলে দেবেন বলে তিনি কথা দিয়েছিলেন। একটি কোম্পনির সঙ্গে তিনি ক্লাবকে সই করাতে বাধ্য করেছিলেন। হয়ত তখন নির্বাচন ছিল। তাই নবান্নে নিয়ে গিয়ে এগ্রিমেন্ট করিয়েছিলেন। সেই এগ্রিমেন্টে আজকে ডেথ ওয়ারেন্টে পর্যবসিত হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার জন্য এমন করেছেন। কোটি কোটি মানুষের সেন্টিমেন্ট নিয়ে খেলা করেছেন। দুর্ভাগ্যবশত ক্লাব আজ অন্ধকার গলিতে পৌঁছে গিয়েছে। আগামীকাল কী হবে, কেউ জানে না।"
আরো পড়ুন: ক্লাবের সামনেই মারামারি লাল-হলুদের দুই সমর্থক গোষ্ঠীর, শতবর্ষে লজ্জার সাক্ষী ইস্টবেঙ্গল
এরপরে নিজের ভিডিওতে দিলীপ ঘোষ আরো বলেছেন, "ক্লাব কি আদৌ প্লেয়ার কিনতে পারবে, আইএসএল খেলতে পারবে- এমন প্রশ্নের সামনে সমর্থকরা দাঁড়িয়ে আছেন। এই এগ্রিমেন্ট যদি ক্লাব সই করে, তাহলে ক্লাব আর ক্লাব থাকবে না। একটা কোম্পানি হয়ে যাবে। ক্লাবের সমর্থক, মেম্বার আর কেউ ক্লাবে ঢুকতে পারবেন না। সেক্রেটারি সহ যাঁরা আছেন, তারা নামমাত্র ক্লাবে বসতে পারবেন। ক্লাবের লোগো ব্যবহার করতে হলেও কোম্পানির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। জানি না এর পিছনে রহস্য কী আছে! শ্রী সিমেন্টের কাটমানির খেলা কী এটা! যে ক্লাবকে নিয়ে আমরা আবেগে ভাসি। বছরের পর বছর সমর্থকরা দৌড়াদৌড়ি করেন, লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটেন খেলা দেখার জন্য- সেই কোটি কোটি মানুষের আবেগকে নিয়ে খেলার অধিকার কে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এটা শুধু ফুটবলের অপমান নয়। এটা বাঙালির অপমান, বাংলার অপমান।"
কোয়েসের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ইস্টবেঙ্গলকে বিনিযোগকারী সংস্থা খুঁজে দিতে সাহায্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আইএসএলের ঠিক আগে মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যস্থতায় শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে মৌ চুক্তি স্বাক্ষর করে ইস্টবেঙ্গল। তবে মূল চুক্তিপত্র নিয়ে টানাপোড়েন চলছেই। ক্লাবের সমর্থকদের অপমান করা হবে চুক্তিপত্রে সই করলে, এমন দাবি তুলেই কার্যকরী কমিটির সদস্যরা মূল চুক্তিপত্রে সই করতে রাজি হননি। তারপরেই সমর্থকদের ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙেছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন