অনিশ্চয়তা প্রতিদিন গ্রাস করছে। ক্লাবের তরফে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল। তবে অনন্ত অপেক্ষার অভিশাপ নিয়ে ট্র্যাজেডিতে নাম লেখাতে চাইলেন না শঙ্কর রায়। তাই ইস্টবেঙ্গল থেকে তিনি মঙ্গলবারেই নাম লিখিয়ে ফেললেন মহামেডানে। শহর ছাড়লেন না। ফিরে গেলেন পুরোনো ক্লাবে। যে ক্লাবে খেলে তারকা গোলকিপারের উত্থান।
ইস্টবেঙ্গল এখন পুরোনো সেই অসুখে দীর্ণ। প্রতি মরশুমে যা নিত্য নৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিনিয়োগকারী হিসাবে ইমামির সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলকে জুড়ে দেওয়ার ঘোষণা হয়ে গিয়েছে এক বেশ কয়েক সপ্তাহ। মাস গড়িয়ে গেলেও চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে এখনও সই হয়নি। এখনও হিসাব-পাল্টা হিসাবের অংক চলছে লাল-হলুদ তাঁবুতে। আর এর মাঝেই ফুটবলের দল গঠন চলে গিয়েছে পিছনের সারিতে। ইনভেস্টর ইমামির শীর্ষ কর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে সাফ ইঙ্গিত দিয়েছেন, চুক্তি পত্রে সই পর্ব মেটার পরেই দল গঠনের কাজে হাত দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: চুক্তিপত্র চূড়ান্ত না হলে দল গঠনও পিছবে! ইস্টবেঙ্গলে ফের হাজির ডামাডোল আর সংশয়
সমর্থকদের সঙ্গেই প্রাক্তনীরা এই বিলম্বে ব্যাপক ক্ষুব্ধ। সোমবারেই ক্লাব তাঁবুতে মিটিংয়ের পর ইস্টবেঙ্গলকে কড়া চিঠি দিয়েছেন বিকাশ পাঁজি, রহিম নবি, প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়রা। এদিকে, দল গঠনের জন্য ইস্টবেঙ্গলের তরফে বারবার ফুটবলারদের বলা হচ্ছে 'অপেক্ষা করতে'। ঘটনা হল, আইএসএলের সমস্ত দলের দল গঠন পর্ব প্রায় চূড়ান্ত। সকলেই নিজেদের দল গুছিয়ে নিয়েছে। এমন অবস্থায় লাল হলুদ ফুটবলারদের হতাশা ক্রমশ বাড়ছিল। শুরু হচ্ছিল অনিশ্চয়তা। শেষমেশ দল গঠন না হলে যে কার্যত পথে বসে যেতে হবে!
হীরা মন্ডল সহ বাকিরা এখনও অপেক্ষায় থাকলেও সকলে অবশ্য ইস্পাত কঠিন মানসিকতা ধরে রাখতে পারছেন না। রফিক সই করেছেন চেন্নাইয়ে। সেই পথেই এবার পা বাড়ালেন শঙ্কর রায়। সই করে ফেললেন নিজের পুরোনো ক্লাবে। সূত্রের খবর, শঙ্কর অনেক ফুটবলারের মত চাকরি করেন না সরকারি সংস্থায়। ভবিষ্যৎ নিয়ে ক্রমশ আশঙ্কা গ্রাস করছিল। তাই মহামেডানের অফারের পর আর দ্বিধা করেননি। সই করে দিয়েছেন তৎক্ষণাৎ।
আরও পড়ুন: সবুজ মেরুন ছাড়লেন ইউরোপা লিগের কোচ! কলকাতার পর নতুন গন্তব্য মেক্সিকো
সাদা কালো জার্সিতেই শঙ্করের উত্থান কয়েক মরশুম আগে। প্রতিভাবান তারকা মহামেডান ছেড়ে পরের তিন মরশুম খেলেন মোহনবাগানের জার্সিতে। আইলিগও জিতেছেন কিবু ভিকুনা কোচ থাকাকালীন। ২০১৯-এ বাগানের আইলিগ জয়ী সিজনে ফার্স্ট চয়েস গোলকিপার ছিলেন শঙ্কর। প্ৰথমদিকে দেবজিত মজুমদার শুরুর এগারোয় নিয়মিত ছিলেন। তবে চার্চিল ব্রাদার্স ম্যাচে ভয়ঙ্কর ভুল করে বসেন তিনি। সেই ভুলের খেসারত দিয়ে মোহনবাগান ২-৪ ব্যবধানে ম্যাচ হেরেছিল। তারপরে শঙ্করই হয়ে ওঠেন কিবুর তুরুপের তাস। সবমিলিয়ে ১৪টি ম্যাচে তেকাঠির নীচে ছিলেন। নামের পাশে ছিল সাতটা ক্লিনশিট।
আরও পড়ুন: খালিদ জামিলের ইস্টবেঙ্গলের সুপার স্ট্রাইকার! ঝড় তুলতে ফের আসছেন কলকাতায়
তিন মরশুম সবুজ মেরুন সংসারে থাকার পর শঙ্কর নাম লেখান পড়শি ইস্টবেঙ্গলে। রবি ফাউলার এবং মানোলো দিয়াজের প্রশিক্ষণে খেলেছেন দুই মরশুমেই। তবে অরিন্দম ভট্টাচার্য প্ৰথম চয়েস গোলকিপার থাকায় নিয়মিত সুযোগ জোটেনি প্ৰথম একাদশে।
চেনা সাদা কালো জার্সিতে শঙ্কর তারকা হওয়ার পথে হাঁটতে পারেন কিনা, তা তো সময়ই বলবে!