২৪ ঘন্টা আগেই ইমামির সঙ্গে বোর্ড মিটিং সম্পন্ন হয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। তবে সেই মিটিং নিয়ে কাটাছেঁড়া করার আগেই যে এরকম বড়সড় বোমা ভেসে আসবে ইস্টবেঙ্গলের তরফ থেকে, কে ভাবতে পেরেছিল। পাঁচজন লাল-হলুদ কর্তা বিষ্ফোরকভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলে দিলেন, মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত অনৈতিকভাবে তাঁদের বিনিয়োগকারী কর্তার কাছে মেসেজ করেছেন।
বৃহস্পতিবার ইমামি হাউসে ইস্টবেঙ্গলের বোর্ড মিটিং ছিল বিনিয়োগকারী কর্তাদের সঙ্গে। সেই বৈঠকের আগেই রুবির কাছে বেশ কয়েকজন লাল-হলুদ সমর্থক ইমামির বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
এরপরেই নাকি বাগান কর্তা দেবাশিস দত্ত মেসেজ পাঠান ইমামি কর্তা আদিত্য আগারওয়ালকে। সরাসরি বলে দেন, ইস্টবেঙ্গল কর্তা নীতু সরকারের ঘনিষ্ঠ সমর্থকরাই বিক্ষোভ দেখিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গলে চাকরি ছেড়েই ইউরোপে দেশের ফুটবলে বিশাল দায়িত্বে তারকা! বড় আপডেট সরাসরি
শুক্রবার তারপরে তড়িঘড়ি প্রেস কনফারেন্স আয়োজন করে লাল-হলুদ কর্তা রজত গুহ বিস্ফোরকভাবে বলে যান, "বোর্ড মিটিংয়ের আগে দলের কিছু সমর্থক সোচ্চার হয়েছিলেন। এই ভিডিও মোহনবাগান সচিব পাঠিয়েছেন আদিত্য আগারওয়ালকে। যা পুরোপুরি অখেলোয়ারচিত। এটা ময়দানের সুস্থ পরিবেশ নষ্ট করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ্য ময়দানে যাতে সুস্থ পরিবেশ বজায় থাকে।"
তাঁর আরও সংযোজন, "মোহন বাগানেও রিমুভ এটিকে স্লোগান উঠেছে। দায়িত্বশীল কোনও ইস্টবেঙ্গল কর্তা তা নিয়ে কিন্তু কখনও কুরুচিকর মন্তব্য করেননি।"
ইস্টবেঙ্গলের গনগনে প্রেস কনফারেন্স শুক্রবার হাজির ছিল কর্মসমিতির পাঁচ সদস্য রজত গুহ, সদানন্দ দাশগুপ্ত, শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত, সৈকত গঙ্গোপাধ্যায় এবং দীপঙ্কর চক্রবর্তী। তাঁরা সকলেই বাগান কর্তার এমন কাণ্ডের তীব্র নিন্দা করেন। অতীতের সৌজন্যের উদাহরণ তুলে বলা হয়, ৭৫-এ ইস্টবেঙ্গল যখন পাঁচ গোলে এগিয়ে তখন সৌজন্য দেখিয়ে গোল না দেওয়ার পথে হেঁটেছিল। শিল্ড ফাইনালে একবার মোহনবাগান জয়ের পর মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে পড়শি ক্লাবে হাজির হন।
আরও পড়ুন: স্টিফেনের বিদায়ঘন্টা ইমামি-ইস্টবেঙ্গল মিটিংয়েই! লাল-হলুদে অতীত ইংরেজ কোচ
ইস্টবেঙ্গলের তরফে পাল্টা দিয়ে বলা হয়, "মোহনবাগান সচিব ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে বেশি ভাবছেন। এটা ভালো। তবে উনি সৌজন্য হারিয়ে ফেলছেন। দীর্ঘদিন লক্ষ্য করা যাচ্ছে, উনি ইস্টবেঙ্গলে ক্লাব এবং ব্যক্তিকে আলাদা করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে উনি সফল হবেন না। আমাদের ক্লাবে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের কোনও জায়গা নেই। আমাদের সমষ্টিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মোহনবাগান সচিব সৌজন্য হারাচ্ছেন।"
শুধু ইমামির ক্ষেত্রেই নয়, আগেও নাকি এই কুকীর্তি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। দীপঙ্কর চক্রবর্তী বললেন, "কোয়েসের ক্ষেত্রেও অতীতে এরকম বার্তা গিয়েছে। আমাদের ইনভেস্টরের কাছে আমাদের কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। সবাই সৌজন্য বজায় রাখুক। অজিত আইজ্যাক, শ্রী সিমেন্টের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। আমাদের অনুরোধ, দুই ক্লাবের মধ্যে যেন পারস্পরিক সৌহার্দ্য বজায় থাকে।"
ঘটনাচক্রে, যাঁর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ। লাল হলুদ কর্তারা তাঁবুতে বসে বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছেন, তিনি সেই সময় সবুজ মেরুন তাঁবুতেই ছিলেন। মোহনবাগানে শুক্রবারই উদ্বোধন হল পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামাঙ্কিত জিমের। সেই উপলক্ষ্যে চাঁদের হাঁট বাগান তাঁবুতে। সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রদীপ চৌধুরী, শিশির ঘোষ- কে ছিলেন না সবুজ মেরুন তাঁবুতে। ছিলেন সবুজ তোতা ব্যারেটোও। দেবাশিস দত্ত অবশ্য এই ব্যস্ততাট মধ্যে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাব দিতে অস্বীকার করেছেন।