East Bengal Transfer Update: 'দুঃখের কথা একটাই...', দায়িত্ব নিয়েই ইস্টবেঙ্গলের সাফল্য প্রত্যাশী সন্দীপ নন্দী

East Bengal FC: আগামী মরশুমে (ISL 2025-26) যে করেই হোক সাফল্য আনতে হবে। আপাতত সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছে ইস্টবেঙ্গল এফসি। ইতিমধ্যে তারা দলগঠনের কাজ শুরু করে দিয়েছে। আলোচনা হয়েছে বেশ কয়েকজন ভারতীয় এবং বিদেশি ফুটবলারের সঙ্গেও। পাশাপাশি দলের কোচিং স্টাফেও আসতে চলেছে বড়সড় রদ-বদল। একসময় লাল-হলুদ ব্রিগেডে যিনি ছিলেন অতন্দ্র প্রহরী, আজ সেই সন্দীপ নন্দীর (Sandip Nandy) হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছে লাল-হলুদের গোলকিপিং কোচের দায়িত্ব। এই প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার পক্ষ থেকে সন্দীপ নন্দীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কথা বলতে গিয়ে শোনা গেল এক অজানা কাহিনী। আসুন, সেই ব্যাপারে আলোচনা করা যাক।

বাড়ি বর্ধমানে। ছোটবেলা থেকেই ফুটবল খেলার প্রতি ছিল এক অমোঘ আগ্রহ। শিশির ঘোষ ছিলেন আইডল ফুটবলার। ইচ্ছে ছিল, তাঁর মতই স্ট্রাইকার হয়ে কাঁপাবেন ফুটবল ময়দান। কিন্তু, ফুটবল বিধাতা সন্দীপ নন্দীর কপালে বোধহয় অন্য কথাই লিখে রেখেছিল। ছোটবেলার কোচ গৌতম সরকার তাঁকে পরামর্শ দিলেন গোলকিপার হওয়ার। বোধহয়, তিনিই প্রথম স্বপ্নটা দেখেছিলেন যে সন্দীপের দূর্ভেদ্য প্রাচীরে আটকে যাবে বিপক্ষের একের পর এক শানিত আক্রমণ।

East Bengal Transfer Update: কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল, বাদের খাতায় তারকা ফুটবলার

ইচ্ছে ছিল স্ট্রাইকার হওয়ার, হয়ে গেলেন গোলকিপার

সন্দীপ নন্দী বললেন, 'ছোটবেলায় তো সকলেরই এই ইচ্ছেটা থাকে। বন্ধুদের সবাই খালি পায়ে খেলে। আমারও সেই গোল করার ইচ্ছেটাই ছিল। ছোটবেলা থেকে গোল করার নেশাতেই খেলতাম। মোটামুটি ভালই খেলতে পারতাম। তখন মোহনবাগান আমার রক্তে। শিশির ঘোষ আমার কাছে আইডল ছিলেন। তখন শিশির'দা-র একেবারে গোল্ডেন টাইম চলছে। ওঁর খেলা দেখে আমি বড় হয়েছি। বিশেষ করে হেড দেওয়ার দক্ষতা আমাকে খুবই টানত। আমারও হেডিং খুব একটা খারাপ ছিল না। মোটামুটি করতে পারতাম।'

East Bengal Transfer Update: ভাঙল ইস্টবেঙ্গলের সুখের সংসার, লাল-হলুদের 'বাঘা' ফুটবলার যোগ দিলেন মোহনবাগানে!

তাঁর কথায়, 'এরপর আমি ছোটবেলার কোচ গৌতম সরকারের হাতে গিয়ে পড়লাম। উনিই আমাকে গোলকিপার হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কারণ আমার বডি ফিটনেস, ডাইভিং যথেষ্ট ভাল ছিল। এরপর আমিও সেই পরামর্শ মেনে নিই। স্ট্রাইকার হওয়ার স্বপ্ন ছেড়ে, গোলকিপার হওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। তবে একটা কথা অবশ্যই বলতে চাই যে ঈশ্বর যাঁকে যে দায়িত্বটা বেছে দেন, সেটা আখেরে ভালই হয়। হয়ত স্ট্রাইকার হতে চাইলে আমি শেষপর্যন্ত সাফল্য নাও পেতে পারতাম। ঈশ্বরের আশীর্বাদ ছিল বলেই আজ এই সাফল্য পেয়েছি।'

East Bengal FC: আগুন পারফরম্য়ান্স ইস্টবেঙ্গলের, জয় দিয়ে অভিযান শুরু লাল-হলুদ ব্রিগেডের

আসিয়ান জয়ী ইস্টবেঙ্গল দলের সদস্য ছিলেন সন্দীপ নন্দী

এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি, আসিয়ানজয়ী ইস্টবেঙ্গল দলের সদস্য ছিলেন এই সন্দীপ নন্দী। লাল-হলুদ জার্সিতে সাক্ষী থেকেছেন একাধিক যুদ্ধের। খেলোয়াড় হিসেবে অবসর গ্রহণ করলেও গোলকিপার কোচ হিসেবে তিনি যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছেন। ইতিমধ্যে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড, মহমেডান স্পোর্টিং, ডায়মন্ড হারবার, রাজস্থান ইউনাইটেড হয়ে কোচিং করিয়েছেন। আর এবার দায়িত্ব পেয়েছেন অস্কার ব্রুঁজো ব্রিগেডের। ইস্টবেঙ্গলের নয়া গোলকিপার কোচ জানালেন, 'এই দায়িত্বটা পেয়ে সত্যিই খুব ভাল লাগছে। কারণ যে ক্লাব থেকে আমি সাফল্য পেয়েছি, সেই ক্লাবের হয়েই এত বড় একটা দায়িত্ব পেলাম। তবে কোচিংয়ের কাজটা সবসময়ই বেশ চ্যালেঞ্জিং। এই চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করতে পেরে সত্যিই খুব ভাল লাগছে।'

East Bengal CFL Preview: ফের ময়দান কাঁপাতে নামছে ইস্টবেঙ্গল, CFL অভিযানের শুরুতেই লাল-হলুদের প্রতিপক্ষ কে?

দুঃখের কথা শেয়ার করলেন ইস্টবেঙ্গলের নয়া গোলকিপিং কোচ

সঙ্গে তিনি আরও যোগ করলেন, 'আজ দুঃখ একটাই। বিগত কয়েক বছর ইস্টবেঙ্গল ফুটবল ক্লাব সেভাবে সাফল্য পায়নি। শুধুমাত্র আমি একা নই, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রত্যেক সমর্থক, কোচিং স্টাফ এবং ক্লাব ম্যানেজমেন্টও এই একই দুঃখের ভাগীদার। এখন লক্ষ্য একটাই, সাফল্য়ের সরণীতে ফেরা। এই দলের প্রাক্তন ফুটবলার হিসেবে আমি যে সাফল্য পেয়ে এসেছি, কোচ হিসেবে সেই সাফল্যটাই আবারও ফিরিয়ে দিতে চাইব। এর চেয়ে বড় তৃপ্তি আর কিছু হতে পারে না।'