ইস্টবেঙ্গল: ৩ (পিন্টু মাহাতো, কোলাডো, মার্কোস )
মহামেডান: ২ (বোরহা-আত্মঘাতী, কুয়াসি)
বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে মহমেডানকে ৩-২ গোলে হারিয়ে খেতাবি লড়াইয়ে অনেকটা এগিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল। এদিন কলকাতা লিগে ট্রফির দোরগোড়ায় যাওয়ার জন্য দু'দলের কাছেই ছিল এই জয় ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ম্যাচ হেরে প্রায় চার দশক পর কালো-সাদা জার্সিধারীদের লিগ জয়ের স্বপ্ন এবারের মতো অধরাই থেকে গেল।
এদিন প্রথমার্ধেই চলে আসে ম্যাচের তিন গোল। প্রথম একাদশে পাঁচটি পরিবর্তন করেছিলেন লাল হলুদ কোচ আলেয়ান্দ্রো গার্সিয়া। মার্তি, আশির, মার্কোস, রোহলুপুইয়া, সামাদকে বাইরে রেখে প্রথম একাদশে তিনি খেলালেন বোরহা, কমলপ্রীত, কোলাডো, ডিডিকা ও মেহতাবকে। অন্যদিকে মোহনবাগান ও পিয়ারলেসকে হারানো দলই এদিন শুরুতে খেলালেন মহমেডান কোচ শাহিদ রামন।
আরও পড়ুন শতবর্ষের এজিএমে দল নিয়ে সওয়াল ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের, বদলের বার্তা দেবব্রতর
প্রথমার্ধ:
শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। ফ্লাডলাইটে জ্বলে উঠেছিল আলেয়ান্দ্রোর শিষ্যরা। আর ১২ মিনিটেই বৃষ্টিস্নাত সল্টলেক স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটালেন পিন্টু মাহাতো। কমলপ্রীতের অসাধারণ সেন্টার থেকে নিখুঁত জোরালো হেডারে দলকে এগিয়ে দেন লাল-হলুদের জঙ্গলমহলের ছেলে। (১-০)
এই গোলের ছ'মিনিটের মধ্যে ইস্টবেঙ্গলের বুকে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছিলেন সত্যম শর্মা। তাঁর বিদ্যুৎগতির শট ক্রসপিস ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। আর ম্যাচের যখন ২৩ মিনিট বয়স তখন মহামেডানকে অনাবশ্যক গোল উপহার দিয়ে বসলেন বোরহা গোমেজ। করিমের গোত্তা খাওয়া ফ্রি-কিক বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালেই হেড করে ঢুকিয়ে দেন তিনি। (১-১)
বিরতির ঠিক দু'মিনিট আগে একপ্রস্থ নাটক দেখল ইস্টবেঙ্গল-মহমেডান ম্যাচ। ডিডিকার কর্নার থেকে কোলাডো হেড গোল করে বল ঢুকিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও সইফুল রহমান হাত দিয়ে বল আটকানোর প্রচেষ্টা করেন। দেখা মাত্রই সঙ্গেসঙ্গেই রেফারি সাইফুলকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বার করে দেন। ইস্টবেঙ্গলকে দেন অবধারিত পেনাল্টি। বলাই বাহুল্য অনবদ্য প্লেসিংয়ে গোল করতে কোনও ভুল করলেন না কোলাডো। বিরতিতে ২-১ গোলে এগিয়ে মাঠ ছাড়ে ইস্টবেঙ্গল। মহমেডান ১০ জনের দলে পরিণত হয়ে যায়। (২-১)
দ্বিতীয়ার্ধ:
দ্বিতীয়ার্ধের ৫৯ মিনিটেই লালহলুদ স্কোরলাইন ৩-১ করে। ডিডিকার মাইনাস থেকে পিন্টুর পরিবর্তে আসা মার্কোস গোল করে বেরিয়ে যান। প্রথমার্ধের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধে মহমেডান অনেক সংঘবদ্ধ ফুটবল খেলে। শেষ দিকটায় ম্যাচটা ড্র করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে মহামেডান। আর তার পরিণামও তারা পেয়ে যায় ৮৩ মিনিটে। থ্রু বল ধরে গোল করে দেন কোফি। কিন্তু এরপর দু'দলই গোলের জন্য ঝাঁপিয়েও স্কোরলাইনে কোনও ফারাক গড়তে পারেনি। (৩-২)
মহমেডানকে হারিয়ে ২০ পয়েন্ট নিয়ে লিগের শীর্ষে পৌঁছে গেল ইস্টবেঙ্গল। পিয়ারলেস যদি বাকি দু'টি ম্যাচে রেনবো বা জর্জ টেলিগ্রাফের কাছে পয়েন্ট নষ্ট করে, তা হলে শেষ ম্যাচে কাস্টমসকে হারালেই ইস্টবেঙ্গলকে প্রথম ট্রফি এনে দেবেন তাঁদের প্রিয় আলে স্যার।
ইস্টবেঙ্গল: লালথামুইয়া, বোরহা (আশির), কমলপ্রীত, কোলাডো, পিন্টু (মার্কোস), নাওরেম, রোনাল্ডো, ডিডিকা, খুয়ান মেরা, অভিষেক ও মেহতাব
মহমেডান: প্রিয়ান্ত, সুজিত, প্রসেনজিৎ, ওমালাজা, সৈফুল, মুসা (কোফি), ফিরোজ (সামসাদ), তীর্থঙ্কর, সত্যম, চাংতে ও চিডি।