ইংল্যান্ড: ২ (স্টার্লিং, হ্যারি কেন)
জার্মানি: ০
হ্যারি কেন যখন ডাইভ দিয়ে হেডে দ্বিতীয় গোল করে জার্মানদের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দিলেন, তখন ক্যামেরা ধরল ইংরেজ কোচ সাউথগেটকে। কি আশ্চর্য নিশ্চুপ, ভাবলেশহীন! যেন তিনি জানতেনই ওয়েম্বলিতে এভাবে রাজ করবে ইংল্যান্ড। মাঠে দাপিয়ে বেড়াবে লুক শ, স্টার্লিং, ট্রিপলাররা। আর হাজারো হাজারো সমর্থক গর্জন করে যাবে সারাক্ষণ। আর দিনের শেষে মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়বে চিরশত্রু জার্মানরা।
যুদ্ধের ময়দানে যতই সেয়ানে সেয়ানে লড়াই হোক। ফুটবলে দুই দেশ মুখোমুখি হওয়া মানে অবধারিত হার ইংল্যান্ডের। এমনটাই হয়ে এসেছে এতকাল। শেষ সাত সাক্ষাতেও পতিসংখ্যান বড্ড একপেশে। সাত ম্যাচে ইংল্যান্ডের জয় মাত্র ২টোয়। তবে ওয়েম্বলির রাত বোধহয় সমস্ত অতীতের হিসেব নিকেশ চুকিয়ে দিল। এভাবে জার্মানদের গোলা-বারুদ ভিজিয়ে দিয়ে যে তিন সিংহের গর্জন ছাড়বেন হ্যারি কেনরা তা কি কেউ ভাবতে পেরেছিল।
আরো পড়ুন: ইতিহাস গড়া ম্যাচে ফের মেসি ম্যাজিক! বলিভিয়াকে চূর্ণ করেই একনম্বর আর্জেন্টিনা
ম্যাচের শুরু থেকে শেষ খেলল ইংল্যান্ডই। গোল আসতেই যা ৭৫ মিনিট লেগে গেল এই যা। সেই বিশ্ববিখ্যাত জার্মান দলের প্রতিনিধি হিসাবে ছিলেন কেবল টনি ক্রুজ, ম্যাট হ্যামেলস আর টমাস মুলার। কিন্তু দুজনেই বৃদ্ধ হয়েছেন। হ্যামেলস নিজের ফর্মের আশেপাশে নেই। বাকি কাই হাভার্টজ, টিমো ওয়ার্নার, রবিন গোসেন্স, রুডিগার, গিনটার, গোরেৎজকারা আর যাই হোক ফিলিপ লাম, সোয়েনস্টাইগারদের বিকল্প হতে পারেন না।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি নয়, বিরতির আগেই দু-গোলের লিড নিয়ে ফেলতে পারত ইংল্যান্ড। হ্যারি মিগুয়ের গোল মিস করলেন। হ্যারি কেন একবার ফাঁকা ন্যুয়ারকে পেয়েও জালে বল ঠেলতে পারলেন না। হ্যামেলসের সেই ক্লিয়ারেন্স না থাকলে হয়ত আগেই জার্মানদের জালে বল জড়াত।
একের পর এক আক্রমণের স্রোত ভেসে আসছিল জার্মানির অর্ধে। আসলে ট্রিপিয়ার, ফিলিপ, রাইস, শ ইংল্যান্ডের হয়ে মাঝমাঠের দখল নিয়েই খেলা থেকে সরিয়ে দিয়েছিল জার্মানিকে। জার্মানি টানা তিন-চারটে পাস ও খেলতে পারছিল না।
এমন অবস্থায় বেশিক্ষণ যে ইংরেজ আক্রমণকে আটকে রাখতে পারবে না জার্মানি, তা কার্যত নির্ধারিতই ছিল। তাকে মান্যতা দিয়েই ৭৫ মিনিটে রাহিম স্টার্লিংয়ের গোল।
স্টার্লিংয়ের গোলের পরে সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল জার্মানি। মাঝমাঠ থেকে দুরন্ত থ্রু বল পেয়েছিলেন মুলার। তবে এই মুলার যেন নিজের অতীতের ছায়ামাত্র। সামনে একমাত্র আগুয়ান ইংরেজ গোলকিপার পিকফোর্ডকে পেয়েও জালে বল রাখতে পারলেন না। শাস্তি হিসেবে মুলারকে তুলেই নিলেন কোচ লো। এরপরে হ্যারি কেনের দুর্দান্ত ফিনিশ ঠিক ৯ মিনিট পরে।
ও হ্যাঁ, বলা হল না, মুলারের মতই বিশ্বজয়ী জোয়াকিম লো-ও ওয়েম্বলিতে অতীত হয়ে গেলেন। জার্মান কোচের হটসিটে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন