স্পেন: ৫ (পাবলো সারাবিয়া, সিজার এজপিলিকুয়েটা, ফেরান তোরেস, আলভারো মোরাতা, ওয়ারজাবাল)
ক্রোয়েশিয়া: ৩ (পেদ্রি- আত্মঘাতী, ওরসিচ, পাসলিক)
৮ গোলের থ্রিলার কোপেনহেগেনে। ইউরোয় অবিশ্বাস্য রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ উপহার দিয়ে গেল স্পেন বনাম ক্রোয়েশিয়া মহারণ। সম্ভবত চলতি ইউরোর এখনো পর্যন্ত সেরা ম্যাচ! টানটান উত্তেজনা, রোমহর্ষক নাটক। যা গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। আর এক্সট্রা টাইমেই জোড়া গোল করে শেষ হাসি স্পেনের।
৮৪ মিনিট পর্যন্ত খেলার ফলাফল ছিল স্পেনের পক্ষে ৩-১। সেই ম্যাচই নব্বই মিনিটের শেষে স্কোরলাইন দাঁড়িয়েছিল ৩-৩। শেষ সাত মিনিটে জোড়া গোল করে বিশ্বকাপের ফাইনালিস্টরা খেলা নিয়ে গিয়েছিল টাইব্রেকারে। তবে সেখানে স্পেন আরো দু-গোল করে শেষ আটের টিকিট নিশ্চিত করে।
খেলার মিনিটে মিনিটে উত্তেজনা। প্রবল দাপট নিয়ে স্পেন ম্যাচ শুরু করেছিল। গ্রুপের শেষ ম্যাচে স্লোভাকিয়ার বিরুদ্ধে যেমন একপেশে খেলা উপহার দিয়েছিল স্পেন, সেই ম্যাচেরই যেন পুনরাবৃত্তি ঘটানোর লক্ষ্য নিয়ে ম্যাচের সূচনা করে। তবে স্পেন নয়। ২০ মিনিটে পেদ্রির আত্মঘাতী গোলে লিড নেয় ক্রোয়েশিয়া। ডিফেন্ডার পেদ্রি ব্যাকপাস করেছিলেন গোলকিপারের উদ্দেশ্যে। তবে উনাই সিমোন বলের বাউন্স বুঝতে না পেরে নিজের গোলেই বল ঢুকিয়ে দেন।
আরো পড়ুন: অবসর জল্পনা উস্কে মাঠেই ‘ইঙ্গিত’ রোনাল্ডোর! হতাশায় একী করলেন মহাতারকা
১গোলে পিছিয়ে পরে আহত বাঘের মত ঝাঁপিয়ে পড়ে স্প্যানিয়ার্ডরা। একের একের পর এক ঢেউয়ের মত আক্রমণ আছড়ে পড়ছিল ক্রোয়েশিয়ানদের অর্ধে। সেই ঢেউ সামলাতে না পেরেই গোল!
৩৮ মিনিটেই পাবলো সারাবিয়ার গোলে সমতা ফেরায় স্পেন। গ্যায়ার শট বক্সের মধ্যে থেকে বাঁচিয়ে দেন ক্রোট গোলকিপার লিভাকোভিচ। তবে ফিরতি বল থেকেই দুরন্ত ফিনিশ করে যান পাবলো সারাবিয়া।
বিরতিতে ১-১ স্কোরলাইন রেখে খেলা শেষ হয়। তবে বিরতির পরেই সিজার এজেপিলিকুয়েটা কেরিয়ারের প্ৰথম আন্তর্জাতিক গোল করে যান ফেরান তোরেসের দুরন্ত ক্রস ধরে।
৭৭ মিনিটে স্কোরলাইন স্পেনের হয়ে ৩-১ করে দেন ফেরান তোরেস। পাউ তোরেসের পাস বুক দিয়ে রিসিভ করে দর্শনীয় গোল করেন তিনি।
ঠিক এই সময়েই যখন মনে হচ্ছিল স্পেন একপেশেভাবে খেলা শেষ করতে চলেছে। তখনই টুইস্ট। পরিবর্ত হিসাবে মাঠে নেমেছিলেন মিরোস্লাভ ওরসিচ। তিনি এসেই খেলার মোড় ঘোরান। স্পেনের ডিফেন্সকে একাই নাস্তানাবুদ করতে থাকেন। তারই ফলশ্রুতি হিসেবে ৮৫ মিনিটে গোল করে ব্যবধান কমান তিনি। এরপরে সংযোজিত সময়ে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে ৩-৩ করে যান পাসালিচ।
রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ এরপরে গড়ায় এক্সট্রা টাইমে। যেখানে মোরাতা এবং ওরবাজাল জোড়া গোল করে ক্রোয়েশিয়ার স্বপ্নের প্রত্যাবর্তনে জল ঢেলে দেন। গ্রুপের শেষ ম্যাচে স্লোভাকিয়র পর এদিনও আবার স্পেনের ৫ গোল। ইউরোর ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে পরপর দুই ম্যাচে ৫ গোলের নজির গড়লেন স্প্যানিশ ফুটবলাররা।
আরো পড়ুন: সবুজ মেরুনে কি নাম লেখাচ্ছেন সুপারস্টার মান্দজুকিচ! বিশাল আপডেট দিলেন কোচ হাবাস
ইউরোর সবথেকে গোলের রেকর্ড গড়ার তালিকায় সোমবার রাতের এই ম্যাচ আপাতত তালিকায় দ্বিতীয়। ১৯৬০-এ ফ্রান্স বনাম যুগোস্লোভাকিয়া ম্যাচে শেষ হয় ৪-৫ ফলাফলে। সেটাই তালিকায় প্রথম।
২৪ ঘন্টা আগেই ছিটকে গিয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। এবার সেই তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেললেন তাঁর প্রাক্তন সতীর্থ লুকা মদ্রিচও। এদিন ক্রোট সুপারস্টারকে থামিয়ে দিল জোনাল মার্কিং। বল ধরলেই মার্ক করেছেন ৩-৪ জন। এগোতে না পেরে পাস করতে বাধ্য হয়েছেন। পেরিসচের অভাবও অনেকটা টের পেল ক্রোয়েশিয়া।
স্পেন আপাতত কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্স-সুইজারল্যান্ড ম্যাচের বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন