কোলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ, ক্রোয়েশিয়ার প্রথম মহিলা রাষ্ট্রপ্রধান। রাশিয়া বিশ্বকাপে স্পোর্টসম্যানশিপের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসডর হয়ে গিয়েছেন তিনি। ফাইনালের পর কিতারোভিচের খেলোয়াড়ি সুলভ মানসিকতায় মুগ্ধ হয়েছে আপামোর ফুটবল ফ্যানেরা।
ক্রোয়েশিয়ার হারের পরেও বৃষ্টি মাথায় নিয়ে নেমে পড়েছিলেন মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি একই ভাবে লুকা মদরিচ ও কিলিয়ান এমবাপেদের জড়িয়ে ধরলেন। দেখলে কেউ বলবে না যে, তাঁর দেশ বিশ্বকাপের ফাইনালে শেষ হাসি হাসতে পারেনি। সবসময় কিতারোভিচের মুখে এক গাল হাসি লেগেই রয়েছে।ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাকরেঁর সঙ্গে যেন বন্ধুর মতো মিশেছেন। বোঝা যাচ্ছে না যে, তাঁরা ইউরোপের দুই দেশের প্রেসিডেন্ট। কিতারোভিচের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সোশ্যাল মিডিয়া। টুইটারে শুভেচ্ছায় ভেসে যাচ্ছেন তিনি।
বিশ্বকাপে দেশের জার্সি গায়ে চাপিয়ে কখনও স্ট্যান্ড থেকে, তো কখনও ভিআইপি বক্স থেকে গলা ফাটিয়েছেন লুকা মদরিচ ও ইভান র্যাকিটিচদের জন্য।ম্যাচের পর ড্রেসিংরুম গিয়ে ড্যানিয়েল সুবাচিচদের জড়িয়ে ধরে তাতিয়ে এসেছেন, তো কখনও গোটা দলের সঙ্গে নেচে-গেয়ে জয় সেলিব্রেট করছেন। গ্রুপ পর্যায়ের পর থেকে প্রায় সব ম্যাচেই মাঠে ছিলেন তিনি। শুধু সেমিফাইনাল ম্যাচে থাকতে পারেননি তিনি। সেসময় ব্রাসেলসে ন্যাটোর সামিটে ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন:FIFA World Cup 2018: রুশ প্রধানমন্ত্রীর সামনে ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্টের সেলিব্রেশন ভাইরাল
আবার কখনও রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ ও ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ানি ইনফ্যান্টিনোকে পাশে রেখেই। ক্রোয়েশিয়ার জয়ে একেবারে শিশুর মতো নেচে উঠেছেন কিতারোভিচ।কোনও সন্দেহ নেই যে, ক্রোট রাষ্ট্রপ্রধানই সদ্যসমাপ্ত বিশ্বকাপের সেরা সুপার ফ্যান।
ইউরোপের ছোট্ট দেশের প্রেসিডেন্ট কোনও প্রটোকলের তোয়াক্কাই করেননি। নিজে লাইনে দাঁড়িয়ে ফ্যান আইডি সংগ্রহ করে টিকিট জোগার করে চলে যেতেন নির্দিষ্ট সিটে।কখনও খোলা গ্যালারিতে বসে খেলা দেখেছেন,তো আবার ইকোনমি ক্লাসের টিকিট কেটে যাতায়াত করছেন। ফ্যানেদের সঙ্গে হাসি মুখে পোজ দিয়ে ছবি তুলতেও আপত্তি ছিল না তাঁর।
কিতারোভিচ পিএইচডি করেছেন, ফুলব্রাইট স্কলার ও হারভার্ডের স্নাতকও। ন্যাটোর অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি জেনারেল ও মার্কিন মুলুকের হয়ে ক্রোয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজও করেছেন। সাতটি ভাষায় সাবলীল ভাবে কথা বলতে পারেন তিনি।বছর পঞ্চাশের ‘যুবতী’ আবার দুই সন্তানের মাও বটে। এসারা পৃথিবীকে আপন করে নিয়েছেন অবলীলায়। অনেকেই বলছেন কিতারোভিচই এখন বেস্ট প্রেসিডেন্ট।