আইএসএল ও বটেই। হুয়ান ফেরান্দোর এবার চ্যালেঞ্জ ছিল এএফসিতে কোনও ভারতীয় ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন করা। সেই লক্ষ্যেই এবার দুর্ধর্ষ দল বানিয়েছে এটিকে মোহনবাগান। রক্ষণ সংগঠন মজবুত করার জন্য এএফসি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অভিজ্ঞতা থাকা ব্রেন্ডন হ্যামিল, ফ্লোরেন্তিন পোগবার মত সুপারস্টারকে সই করিয়েছেন হুয়ান ফেরান্দো। কলকাতা লিগে অংশ নেওয়ার পরিবর্তে এএফসির জন্য প্রস্তুতি সারবে সবুজ মেরুন শিবির।
অন্যদিকে, ইস্টবেঙ্গল আবার গত সপ্তাহেই একসঙ্গে পাঁচ বিদেশিকে সই করার সরকারি ঘোষণা করেছে। এখনও ষষ্ঠ বিদেশি বাছাই বাকি রয়েছে।
তবে সোমবার রাতে ফিফা ভারতীয় ফুটবলকে নির্বাসনে পাঠানোয় একই সঙ্গে বিধ্বস্ত ইস্ট-মোহন। হঠাৎ করেই আচমকা ধাক্কার অভিঘাত বুঝতেই কার্যত যেন সব হারানোর সুর দুই প্রধানে। ক্ষতির ধাক্কার হিসাব-নিকেশ করা হচ্ছে দুই প্রধানেই।
আরও পড়ুন: বাগানে বড় দুঃসংবাদ! হ্যামিল সহ চার তারকাকে নিয়ে ঘুম উড়ল কোচ ফেরান্দোর
ফিফার নিষেধাজ্ঞার জেরে এটিকে মোহনবাগান আপাতত এএফসি কাপের অভিযানে নামতে পারবে না। একইভাবে ইস্টবেঙ্গল ষষ্ঠ বিদেশি বাছাই করতে পারবে না পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে। কারণ আন্তর্জাতিক ফুটবলারদের ভারতের ফুটবলে ক্লাবে ট্রান্সফার আপাতত স্থগিত হয়ে যাচ্ছে।
ঘটনা হল, ফিফার তরফে সাফ জানানো হয়েছে, ফেডারেশনে নির্বাচিত কমিটি তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়া দায়িত্ব নিলে নির্বাসন তুলে নেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বার্তা দেওয়া হয়েছে ফেডারেশনের নির্বাচন ইস্যুতে যেন তড়িঘড়ি শুনানির ব্যবস্থা করে সুপ্রিমকোর্ট।
তবে যতই দ্রুত সুপ্রিমকোর্টের শুনানি বা ফেডারেশনের নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং কমিটি গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হোক না কেন, এটিকে মোহনবাগানের ৭ সেপ্টেম্বরের এএফসি কাপের ইন্টার-জোনাল সেমিফাইনাল ম্যাচে নামার সম্ভবনা যে কার্যত নেই, তা একপ্রকার নিশ্চিত।
আরও পড়ুন: আশিয়ানের সেই বেক তেরো সাসানা! সেখানকার ব্রাজিলীয়ই এবার ইস্টবেঙ্গলের তুরুপের তাস
অন্যদিকে, আরও বড় সমস্যায় লাল-হলুদ শিবির। পাঁচ বিদেশিকে সই করার কথা ঘোষণা করা হলেও আন্তর্জাতিক ছাড়পত্র সকলের রয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। কোনও বিদেশির কাছে এখনও ইন্টারন্যাশনাল ক্লিয়ারেন্স না থাকলে নতুন করে তা আর ফিফার তরফে ইস্যু করা হবে না। অর্থাৎ ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েও তাঁরা মাঠে নামতে পারবেন না। সেইসঙ্গে ষষ্ঠ বিদেশিকে নতুন করে এই মুহূর্তে আর সই করতে পারবে না স্টিফেন কনস্টানটাইনের দল।
এমনিতেই ইস্টবেঙ্গল বহু পরে দল গঠন শুরু করেছে। দল গঠন যখন গতি নিয়েছে তখনই এই ধাক্কা। দেশীয় ফুটবলার নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্য কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকছে না। ট্রান্সফার উইন্ডো শেষ হওয়ার আগে নির্বাসন না উঠলে ইস্টবেঙ্গল যে কার্যত ভয়ঙ্কর অবস্থায় আইএসএল, ডুরান্ডে নামতে হবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
শুধু ইস্টবেঙ্গল-এটিকে মোহনবাগানই নয়, ভারতের সমস্ত ক্লাবেই আপাতত বিদেশি বাছাই বন্ধ হয়ে গেল। ভারতের কোনও ক্লাব যেমন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারবে না, তেমনই টিম ইন্ডিয়া ফিফা ফ্রেন্ডলিতেও খেলতে পারবে না। সেপ্টেম্বরে সিঙ্গাপুর এবং ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে জোড়া ফ্রেন্ডলি ম্যাচে নামার কথা সুনীল ছেত্রীদের। আগামী বছর এশিয়ান কাপের প্রস্তুতি হিসাবে এই দুই ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে এই দুই ম্যাচে যেমন ভারত খেলতে পারবে না, তেমনই চলতি বছরে অক্টোবরে মহিলা বিশ্বকাপের আয়োজন থেকেও ভারতকে সরিয়ে দেওয়া হল।