ভারত-বাংলাদেশ হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ হতে চলেছে। বলে দিচ্ছেন দলের বর্ষীয়ান ফুটবলার মামুনুল ইসলাম। মঙ্গলবারের সন্ধেয় ভারত ফিফা বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনকারী ম্যাচে খেলতে নামছে পড়শি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। ক্রিকেটের মতো উত্তাপ ছুঁয়ে গিয়েছে এই শহরকেও। শক্তি সামর্থ্যে ভারত অনেকটাই এগিয়ে। তবে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্য়াচ হতে চলেছে। এমনই ভবিষ্যৎবাণী করে রাখলেন দলের অভিজ্ঞতম মামুনুল। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলে দিলেন, "একপেশে হবে, এমন ভবিষ্যৎবাণী কখনই করা যায় না আগে থেকে। আশা করছি, এই ম্যাচে ৫০-৫০ লড়াই হবে। চাপের মুখে যাঁরা পারফর্ম করতে পারবে, তাঁরাই বিজয়ী হবে।"
শহর কলকাতায় অবশ্য মামুনুল এবারেই প্রথম নন। এর আগেও এটিকের জার্সিতে ইন্ডিয়ান সুপার লিগে খেলে গিয়েছেন বাংলাদেশের তারকা মিডফিল্ডার। ২০১৪ সালের সুপার লিগে অবশ্য রিজার্ভ বেঞ্চেই বসে থাকতে হয়েছিল তাঁকে। সেই বিষয়ে অবশ্য এখন আক্ষেপ নেই। নিজের দ্বিতীয় হোমটাউনে খেলতে এসে তিনি দলকে সতর্ক করছেন। কাতারের কাছে শেষ ম্যাচে ০-২ ফলাফলে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। তবে সেই ম্যাচ ভুলে নতুন করে দলকে শুরু করার বার্তা দিচ্ছেন। একান্ত সাক্ষাৎকারে বলছেন, "শেষ ম্যাচে কী হয়েছিল, তা ভুলে ভারতের বিরুদ্ধে নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে নামতে হবে।"
আরও পড়ুন ইস্ট-মোহনের ডেরায় ভারত-বধে বাংলাদেশের কোচের অনুপ্রেরণা স্টোকসরা
এটিকের জার্সিতে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের অংশ থাকাই নয়। বাংলাদেশের ক্লাব পর্যায়ের হয়েও এদেশে খেলে গিয়েছেন মাঝমাঠের বাঙালি তারকা। ২০১৩ সালে আইএফএ শিল্ডে মামুনুলের নেতৃত্বেই ধানমণ্ডীর হয়ে খেলতে এসেছিলেন তিনি। সেবারে অবশ্য মহামেডানের কাছে পেনাল্টি শ্যুট আউটে হেরে রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল মামুনুলের ধানমণ্ডীকে। সেই শহরে খেলতে নামার আগে বেশ উত্তেজিত মামুনুল। তিনি জানিয়ে দিচ্ছেন, "দলের একে অন্যকে প্রতিনিয়ত সাহায্য করে চলেছি আমরা। ৬০ হাজারেরও বেশি দর্শকের সামনে আমরা সেদিন ম্যাচ খেলব, এটা আমাদের শক্তিই জোগাবে। আমাদের বিশ্বাস, বিশাল দর্শকদের সামনে আমরা নিজেদের সেরা ফুটবলই উপহার দেব।"
আরও পড়ুন চোটে বাংলাদেশ ম্যাচে নেই ভারতীয় ডিফেন্ডার রাহুল ভেকে
সুনীল ছেত্রীদের বিরুদ্ধে ভারতের মাঠে মামুনুলের অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তবে তারকা মিডফিল্ডার শুধু নিজের অভিজ্ঞতাই নয়, দলের অন্যান্যদের অভিজ্ঞতার উপরেও ভরসা রাখছেন। তিনি বলছেন, "দলের মধ্যে বেশি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন ফুটবলারের সংখ্যা হাতে গোনা। সোহেল রানা, জামাল ভুইঞাঁদের মতো ফুটবলারদের অনেক ম্য়াচে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তবে বাকিরা ৪-৫টি ম্যাচের বেশি খেলেননি। তাই আমাদেরল অভিজ্ঞতা দিয়ে বাকিদের সাহায্য করার প্রচেষ্টা করে চলেছি আমরা।"
আরও পড়ুন ভারত বনাম বাংলাদেশ: ভেকের পর ছিটকে গেলেন সন্দেশ
ভারত ম্যাচে তাঁর ভূমিকা কী হতে চলেছে? মামুনুল সাফ জানাচ্ছেন, "দলের সিনিয়র ফুটবলার হিসেবে ভারত ম্যাচে দলকে কীভাবে সাহায্য করব, তরুণদের সঙ্গে কী কৌশলে খেলব, তা টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে এই বিষয়ে বসে আলোচনা করব।" কোচের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, "কোচ ছোটখাটো বিষয় নিয়ে আমাদের বোঝাচ্ছেন, যেমন প্রথম পাস রিসিভ করার পরে আমাদের মুভমেন্ট কী হবে, বল পজেশন বেশি থাকলে কীভাবে আমরা আক্রমণ সাজাব!"
১৩ বছর ধরে জাতীয় দলের জার্সিতে খেলছেন মামুনুল। তবে অবসরের চিন্তা তাঁর ভালমতোই রয়েছে। বাংলাদেশে ভারতের অ্যাওয়ে ম্যাচেই সম্ভবত বুটজোড়া তুলে ফেলতে পারেন দেশের দর্শকদের সামনে। এমন ইঙ্গিত দিয়ে বাংলাদেশের তারকা ফুটবলার জানিয়ে রাখছেন, "টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করার পরে ভারতের বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে অবসর নেওয়া যায় কিনা, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।"
Read the full article in ENGLISH