২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে মারিও গোতজের একটি দুরন্ত ভলি মেসির আর্জেন্টিনার খেতাবের স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছিল। গোতজের সেই গোলের সুবাদে জার্মানি ১-০ গোলে বিশ্বকাপ জেতে। সেই খেলাটির চার বছর কেটে যাবার পর কোচ জোয়াকিম লোর নেতৃত্বে আবার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখছে। ফুটবল ইতিহাসে এখনও অবধি ব্রাজিলই পরপর দুবার (১৯৫৮ এবং ১৯৬২) বিশ্বকাপ জিতেছে। জার্মানি এবছর বিশ্বকাপ জিততে পারলে ব্রাজিলের পর দ্বিতীয় দেশ হিসাবে এই তালিকায় নাম লেখাবে।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/06/fifa-world-cup-2018-GARMANY-VS-MACSICO.jpg)
আর এই স্বপ্ন পূরণ করতে কোন খামতিই রাখছে না জার্মানি। খেলার ছক অনুযায়ী ফুটবলার বাছাইয়ের পর, দলকে প্রতিপক্ষের চেয়ে এগিয়ে রাখতে জোয়াকিম লোর বড় ভরসা নতুন প্রযুক্তির ওপর। ফোর্বসের একটি সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ডাই ম্যানশ্যাফট (দ্য টিম) এজন্য বিখ্যাত সফটওয়্যার কোম্পানি স্যাপের (SAP) সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে। স্যাপ জার্মানি দলের প্রতিটি ম্যাচের মূহূর্ত খতিয়ে দেখবার জন্য একটি অ্যাপ্লিকেশন বানিয়েছে। এই অ্যাপ্লিকেশনটির মাধ্যমে দলের প্রতিটি ফুটবলারদের ভুলত্রুটি খতিয়ে দেখে তাদের প্রত্যেককে আলাদা করে পরামর্শও দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: FIFA World Cup 2018: তারকা নয়, ছকেই আস্থা রাখেন জার্মানির কোচ জোয়াকিম লো
জার্মান ফুটবল দলের ম্যানেজার অলিভার বিয়েরহফ এ প্রসঙ্গে ফোর্বসকে বলেন, "জার্মানির জাতীয় দলের প্রতিটি ফুটবলারের খেলার বিপুল ডেটা আমাদের কাছে রয়েছে। এই ডেটা আমরা দলের খেলার মানোন্নয়নের জন্য ট্রেনার, অ্যানালিস্ট এবং ফুটবলারদের প্রয়োজনমত দিই।" তিনি আরও বলেন, "দলের খেলায় এবং এই ডেটা অ্যানালিটিকস অ্যাপ্লিকেশনে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং মেশিন লার্নিংয়ের মত আধুনিক প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
খেলার মানোন্নয়ন করতে কিভাবে প্রযুক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে জার্মান দল?
* প্রতিটি ফুটবলারের খেলার পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য রেকর্ড করে রাখতে মাঠের চারদিকে লাগানো হয় প্রচুর আধুনিক ক্যামেরা।
* এই রেকর্ডেড ডেটা ব্যবহার করে পজেশন টাইম, অতিক্রান্ত দূরত্ব, প্লেয়ার মুভমেন্ট সমেত প্রতিটি বিষয় বিশ্লেষণ করা হয়।
* স্যাপ চ্যালেঞ্জার ইনসাইটস নামের একটি অ্যাপ্লিকেশন এই ডেটা ব্যবহার করে বিপক্ষের খেলোয়াড়দের বিশেষত্ব এবং ম্যাচের বিভিন্ন সময়ে তারা কিভাবে খেলে তার বিশদ ব্যাখ্যা দেয়।
* পেনাল্টি ইনসাইটস ফাংশন নামের আরেকটি অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হয় বিপক্ষের ফুটবলাররা কিভাবে পেনাল্টি মারেন। এই তথ্য খেলার বিশেষ সময়ে দলের গোলকিপার এবং কোচকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: FIFA World Cup 2018: এই বিশ্বকাপের তিন ডার্ক হর্স
এই রিপোর্টের মতে, ২০১৪ বিশ্বকাপে এই অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে জার্মানি দল পাসিং স্পিড বাড়াতে ২০১০ বিশ্বকাপে তাদের ৩.৪ সেকেন্ড পজেশন টাইমকে কমিয়ে ১.১ সেকেন্ড করেছিল। জার্মানি দলের ফুটবলারদের গড় বয়স কমাতেও ব্যবহার করা হয়েছে এই প্রযুক্তি। উল্লেখ্য, জার্মানি দলের ফুটবলারদের বর্তমান গড় বয়স ২৫.৭।