Manoj Tiwari-Gautam Gambhir: ভারতীয় দলের হেড কোচ গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে বাংলার জাতীয় তারকা মনোজ তিওয়ারির বিবাদ একধাপ এগোল। এবার প্রাক্তন ভারতীয় ব্যাটার মনোজ তাঁর অভিযোগের ঝাঁপি খুলে জানালেন, 'গৌতম গম্ভীর আমাকে হুমকি দিয়েছিল। বলেছিল এরপর তোকে আর কেকেআরে খেলতে দেব না। এটা ওয়াসিম আক্রমও জানতেন।' এমনটাই দাবি করেছেন মনোজ।
এমনিতে গৌতম গম্ভীরের একগুঁয়ে ব্যক্তিত্ব তাঁকে প্রচুর সাফল্য এনে দিয়েছে। আবার তাঁকে সমস্যাতেও ফেলেছে। তার মধ্যে কিছু সামনে এসেছে। এবার যেমন মনোজ তিওয়ারির সঙ্গে তাঁর বিবাদ ক্রমশ সামনে আসছে। ২০১৫ সালে ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে দিল্লি এবং বাংলার মধ্যে রঞ্জি ট্রফির ম্যাচে গম্ভীর এবং তিওয়ারির কুখ্যাত লড়াই ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত ঝগড়াগুলোর অন্যতম। কিন্তু, এবার জানা গেল যে, সেটাই শেষ না। তিওয়ারি এবং গম্ভীরের মধ্যে আরও ঝগড়া হয়েছে।
তিওয়ারি অতীতে বহুবার গম্ভীরের সমালোচনা করেছেন। এবার নতুন সাক্ষাৎকারেও তিনি, প্রাক্তন ভারতীয় ব্যাটসম্যান তথা তাঁর প্রাক্তন সতীর্থের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন। কলকাতা নাইট রাইডার্সের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে তিওয়ারি জানিয়েছেন যে, তিনি এবং গম্ভীর প্রথমে ভালোভাবেই মিশতেন। কিন্তু, পরে তাঁদের সম্পর্ক খারাপ হয়ে গিয়েছিল।
তিওয়ারি বলেছেন, 'কোনও কারণ ছাড়াই গম্ভীর আমাকে তিরস্কার করত। আমি বুঝতে পারতাম না কেন ও আমাকে উলটোপালটা বলছে! আমি ২০১০ সালে কেকেআরে আসি, তখন ও এবং আমি ভালোভাবেই মেলামেশা করতাম। কিন্তু তারপর হঠাৎ করেই ও আমার ওপর খেপে গেল। খুব আজেবাজে কথা বলত। তখন আমি বুঝতে পারি যে কেকেআরের সমস্ত স্থানীয় ছেলেদের মধ্যে, আমিই ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করছি। আমি একজন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ। মিডিয়া আমার ওপর মনোযোগ দিচ্ছে। এটাই ও ভালোভাবে নিতে পারছে না।'
তিওয়ারি বলেন, '২০১৫ সালের রঞ্জি ট্রফিতে আমাদের ঝগড়ার আগে থেকেই ও আমার ওপর রেগে ছিল। কেকেআর-এ আমাদের মধ্যে ঝগড়া হত। কেকেআর-এর ব্যাটিং অর্ডারে আমার ক্রমাগত অবনতি হচ্ছিল। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একটি প্রীতি ম্যাচে আমি সর্বোচ্চ রান করেছিলাম। আমি ১২৯ রান করেছিলাম, আর গম্ভীর ১১০ রান করেছিল। তারপরে ও আরও মেজাজ হারিয়ে ফেলে। আমি সানস্ক্রিন লাগাচ্ছিলাম, ঠিক তখনই ও হঠাৎ আমার কাছে এসে চিৎকার করে বলল, তুই এখানে কী করছিস? বাকিরা মাঠে আছে!'
গম্ভীর এবং তিওয়ারির মধ্যে সমস্যা আছে, সেটা কেকেআরের সহকারি কোচ ওয়াসিম আক্রমও দেখেছিলেন। তিওয়ারি দাবি করেন যে গম্ভীর তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন আর কখনও কেকেআর-এর হয়ে খেলতে দেবেন না। এই ব্যাপারে মনোজ বলেন, 'একবার, ইডেন গার্ডেনে আমার ব্যাটিং পজিশন নিয়ে প্রচণ্ড তর্ক হচ্ছিল। আমি বিরক্ত হয়ে ওয়াশরুমে চলে যাই। ও ভিতরে ঢুকে বলল, এইরকম মানসিকতা নিয়ে চলবে না। আমি তোকে একটা ম্যাচও খেলতে দেব না। আমি কথাটা ভালোভাবে নিইনি। ও আমাকে হুমকি দিচ্ছিল। ওয়াসিম আক্রম এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। আক্রম বলেছিলেন, তুমি অধিনায়ক। শান্ত হও। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, কী ঘটেছে। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত আক্রম আমার প্রশংসা করেছেন।'
আরও পড়ুন- ইডেনে ছক্কার বন্যা! অভিষেককে মন ছুঁয়ে যাওয়া বার্তা যুবরাজের
তিওয়ারি জানিয়েছেন যে তিনি ব্যাপারটা আর দলের মালিক শাহরুখ খানকে জানাননি। এই ঘটনার জেরেই দুই বছর পর ২০১৫ সালে কোটলায় যা ঘটার ঘটেছিল। ২০১৩ সালে তাঁদের সেই মুখোমুখি লড়াইয়ের পর, তিওয়ারিকে পরের বছর কেকেআর ছেড়ে দেয়। পরবর্তী দুই মরশুম তিওয়ারি দিল্লি ক্যাপিটালসের (তখন ডেয়ারডেভিলস) হয়ে খেলেন।