গত বুধবারই ইগর স্টিমাচকে কোচ হিসেবে বেছে নিয়েছে এআইএফএফ। স্টিফেন কনস্ট্যানটাইনের জুতোয় পা গলিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার নাগরিক। আগামী দু'বছর সুনীল ছেত্রীদের হেড স্যার হিসেবে দায়িত্ব সামলাবেন কিংবদন্তি ক্রোট ফুটবলার। ভারতীয় ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে হাই-প্রোফাইল কোচ স্টিমাচ। এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই কারোরই। মেটকোভিচের ৫১ বছরের বাসিন্দার বায়োডেটায় চোখ রাখলে দেখা যাবে যে, তাঁর চরিত্র যেমনই বর্ণময় তেমনই বিতর্কিত। স্টিমাচের এক অঙ্গে যে কত রূপ রয়েছে তা এককথায় অকল্পনীয়।
ক্রোয়েশিয়ার প্রথম সোনালী প্রজন্মের রক্ষণভাগের পিলার ছিলেন তিনি। ইংল্যান্ডের ক্লাব ফুটবলের চর্চিত নাম হয়ে গিয়েছিলেন স্টিমাচ। তিনি শুধুই ফুটবলার নন, একজন পপ শিল্পী, একজন অসফল ব্যবসায়ী। অত্যন্ত সফল ওয়াইন মেকার, স্বঘোষিত জাতীয়তাবাদী। সমকাম নিয়ে সোচ্চার হওয়া মানুষটাই এখন সুনীলদের কোচ।
আরও পড়ুন: সুনীলদের হেড স্যার বেছে নিল ফেডারেশন
সালটা ২০০০। ফুটবল মাঠের বাইরে নতুন কিছু করার চেষ্টা করলেন তিনি। শুরু করলেন বেটিং কোম্পানি। পাঁচ বছরের মধ্যে যেটা দেউলিয়া হয়ে যায়। এরপর পৈতৃক ব্যবসায় যোগ দেন। অলিভ ওয়েল আর ওয়াই প্রস্তুত করতেন। তাঁর হবি ছিল মিউজিক। ভোকালিস্ট আর গিটারিস্ট হিসেবে যুক্ত ছিলেন 'দ্য় বোহেমস'-এর সঙ্গে। তাঁর সিঙ্গেল 'ম্য়ারি অ্যান্ড কেটি' ক্রোয়েশিয়াতে ১৯৯৮ বিশ্বকাপের সময় এক নম্বরে ছিল চার মাসের জন্য়। এখানেই শেষ নয়, দু'টি ডিস্কোথেকও চালু করেন স্টিমাচ। তাঁর ফুটবলের মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বী সিনসিয়া মিহাজিলোভিচ তাঁকে সমকামী আখ্যা দিয়েছিলেন। বলকান যুদ্ধের সময় লড়াই না করতে পারার আক্ষেপের কথাও তিনি জানিয়েছিলেন ক্রোয়েশিয়ার কোচ হওয়ার পর।
১৯৯০-২০০২ পর্যন্ত দেশের হয়ে রক্ষণ ভাগ সামলেছেন। ৯৮ সালে বিশ্বকাপ তৃতীয় স্থানে শেষ করা ক্রোয়েশিয়া দলের স্টার ছিলেন তিনি। গতবছর রাশিয়া বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়া রানার্স হয়েছিল। তার আগে ক্রোটেদের ৯৮ বিশ্বকাপই ছিল সেরা পারফরম্যান্স। ৯৬ সালে ইউরো কাপের শেষ আটে গিয়েছিলেন। ২০১২-২০১8 পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়ার কোচ হিসেবেও পাওয়া গিয়েছে স্টিমাচকে। তাঁর কোচিংয়ের ক্রোটরা ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করেছিল। স্টিমাচের হাত ধরেই ক্রোয়েশিয়ার জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছিল ম্যাটিও কোভাচিচ, আন্তে রেবিচ, অ্যালেন হ্যালিলোভিচ, ইভান পেরিসিচের মতো ফুটবলাররা। তাঁর কোচিংয়েই ডারিও সানা, ড্যানিয়েল সুবাচিচ, ইভান স্ট্রিনিচ, কোভাচিচ, পেরিসিচরা নিজেদের এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। স্টিমাচ ভারতের কোচ হওয়ার আগে শেষবার কাতারের আল-শাহহানিয়া ক্লাবে কোচিং করিয়েছেন।
Read full story in English