Gautam Gambhir cheating court case: প্রতারণা মামলায় গৌতম গম্ভীরের বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্তের নির্দেশ দিল দিল্লির আদালত। খবরে প্রকাশ, বিচারক জানিয়েছেন যে গৌতম গম্ভীরই একমাত্র অভিযুক্ত, যাঁর সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের সরাসরি যোগাযোগ ছিল। অবশ্য তাঁকে এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। যার ফলে, বিরাট সমস্যায় পড়লেন, জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ।
শুক্রবার থেকে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে শুরু হচ্ছে ভারতের তৃতীয় টেস্ট। প্রাক্তন ওপেনিং ব্যাটার গম্ভীর সেই জন্য মুম্বইয়ে ভারতীয় দলের সঙ্গে আছেন। তিন ম্যাচের সিরিজের এই চূড়ান্ত খেলার আগে, দিল্লির আদালতে গম্ভীর বিপাকে পড়লেন। তিনি এবং আরও কয়েকজন একটি মামলায় ফ্ল্যাট ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ভারতীয় দলের হেড কোচ সেই অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, আদালত তাঁর আর্জি খারিজ করেছে।
সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশেষ বিচারক বিশাল গগনে এক ম্যাজিস্ট্রিয়াল আদালতের আদেশ বাতিল করে বলেছেন যে ওই আদেশ, গম্ভীরের বিরুদ্ধে অভিযোগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে 'মনের অপর্যাপ্ত অভিব্যক্তি'-কে প্রতিফলিত করেছে। বিচারক গগনে তাঁর ২৯ অক্টোবরের আদেশে লিখেছেন, 'অভিযোগগুলো গৌতম গম্ভীরের ভূমিকার ব্যাপারে আরও তদন্তের যোগ্যতা রাখে।'
খবরে প্রকাশ, রিয়েল এস্টেট সংস্থা রুদ্র বিল্ডওয়েল রিয়েলটি প্রাইভেট লিমিটেড, এইচ আর ইনফ্রাসিটি প্রাইভেট লিমিটেড, ইউ এম আর্কিটেকচারস অ্যান্ড কন্ট্রাক্টরস লিমিটেড ও গম্ভীরের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গম্ভীর এই সব পার্টনারশিপ কোম্পানিগুলোর অন্যতম পরিচালক এবং ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন। রুদ্র বিল্ডওয়েল রিয়েলটি প্রাইভেট লিমিটেডকে গম্ভীর ৬ কোটি টাকা দিয়ে যে ৪.৮৫ কোটি টাকা ফেরত পেয়েছিলেন, ম্যাজিস্ট্রিয়াল কোর্টের আদেশে তার উল্লেখ নেই বলেই জানা গিয়েছে।
বিচারক বলেছেন, 'চার্জশিটে স্পষ্ট করা হয়নি যে রুদ্র তাঁকে যে পরিমাণ অর্থ ফেরত দিয়েছে, সেই ব্যাপারে তাঁর কোনও যোগসাজশ ছিল কি না। অথবা প্রশ্নের মুখে পড়া এই প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে পাওয়া তহবিল সেই অর্থের উৎস কি না! যেহেতু অভিযোগের মূল বিষয়টি প্রতারণার অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই চার্জশিট এবং প্রতারণা করা অর্থের কোনও উপাদান গম্ভীরের হাতে এসেছিল কি না, তা অভিযোগপত্র (চার্জশিট)-এর মাধ্যমে স্পষ্ট করা দরকার ছিল।'
আদালত পর্যবেক্ষণ করেছে যে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে তাঁর ভূমিকার বাইরেও কোম্পানির সঙ্গে গম্ভীরের আর্থিক লেনদেন ছিল। তিনি ২০১১ সালের ২৯ জুন থেকে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর পর্যন্ত সংস্থার অতিরিক্ত পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। একইভাবে, প্রকল্পটির বিজ্ঞাপন দেওয়ার সময় তিনি ওই সংস্থার একজন কর্তা পদে ছিলেন। ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর, সংস্থার অতিরিক্ত পরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগের পরে গম্ভীরকে যে পরিমাণ অর্থ কোম্পানি দিয়েছিল, সেই ব্যাপারটাও নজরে রেখেছে আদালত।
নির্দেশে বলা হয়েছে, 'অন্যান্য অভিযুক্তদের (অভিযোগপত্রে নাম দেওয়া হয়নি) সম্পর্কে আদালতের পর্যবেক্ষণের সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানকে একত্রিত করে গম্ভীরের বিরুদ্ধে তদন্তকে সাধারণীকরণ করা হয়েছে। আদেশটি গম্ভীরের বিরুদ্ধে অভিযোগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মনের অপর্যাপ্ত অভিব্যক্তি প্রতিফলিত করেছে। অভিযোগগুলো গম্ভীরের ভূমিকা সম্পর্কে আরও তদন্তের যোগ্যতা রাখে।' আদালত, তাই, মামলাটিকে ম্যাজিস্ট্রিয়াল আদালতে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে 'প্রত্যেক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ উল্লেখ করে, সেই অভিযোগের ওপর একটি বিশদ নতুন আদেশ দেওয়ার' নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশ যেন অভিযুক্তদের অপরাধ এবং চার্জশিটে সংশ্লিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে হয়, তা-ও জানিয়েছে।
অভিযুক্তরা ২০১১ সালে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের ইন্দিরাপুরম-এ হতে চলা একটি আবাসন প্রকল্পের প্রচার ও বিজ্ঞাপন করেছিল বলে জানা গিয়েছে। ওই প্রকল্পের নাম ২০১৩ সালে বদলে 'পাভো রিয়েল' করা হয়েছিল। অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা প্রকল্পগুলোতে ফ্ল্যাট বুক করেছিলেন। আর, বিজ্ঞাপন এবং ব্রোশারগুলো দেখে ৬ থেকে ১৬ লক্ষ টাকার মত বিভিন্ন পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু, অর্থপ্রদানের পরেও ওই জমিত কোনও পরিকাঠামোগত বা অন্যান্য তাত্পর্যপূর্ণ উন্নয়ন করা হয়নি। ২০১৬ পর্যন্ত ওই জমির কোনও অগ্রগতি ঘটেনি। এমনই জানানো হয়েছে অভিযোগপত্রে।
আরও পড়ুন- ক্রিকেট কেরিয়ারে একবার ভারতকে টেস্ট সিরিজে হারাতে চাই! বড় মুখে গোপন ইচ্ছা ফাঁস কামিন্সের
অভিযোগকারীদের আরও অভিযোগ, পরবর্তীকালে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি সাইট প্ল্যান অনুসারে তৈরি হয়নি। রাজ্য সরকারও তা অনুমোদন করেনি। উলটে অভিযুক্ত কোম্পানিগুলো অভিযোগকারীদের থেকে প্রশ্ন শোনা এবং ফোনে যোগাযোগ করার ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়েছিল। জানিয়েছিল, আবাসন প্রকল্পের জায়গাটি নিয়ে মামলা চলছে। কারণ, ২০০৩ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট ওই জমির দখল নিয়ে একটি স্থগিতাদেশ দিয়েছে।