/indian-express-bangla/media/media_files/2025/01/11/eZ363QCg0B7wPUTic8S6.jpg)
Greg Chappell-Sachin Tendulkar: গ্রেগ চ্যাপেল ও শচীন তেন্ডুলকর। (ছবি- টুইটার)
Greg Chappell on Harry Brook & Sachin Tendulkar: স্বভাব বদলালেন না গ্রেগ চ্যাপেল। এবার আর সৌরভ না, তাঁর নিশানায় মাস্টার ব্লাস্টার শচীন তেন্ডুলকর। ইংল্যান্ডের এক ব্যাটারকে নিয়ে গালভরা দাবি করে বসেছেন গ্রেগ। তা-ও শচীনের ব্যাপারে। বিশ্ব ক্রিকেটের কিংবদন্তি শচীনকে নাকি ছাপিয়ে গেছে ব্রুক। এমনটাই দাবি অস্ট্রেলীয় গ্রেগের। ইংল্যান্ডের ব্যাটারের 'বিধ্বংসী কার্যকর ব্যাটিং পদ্ধতি'তে মুগ্ধ নিন্দুক বলে বিশ্বজোড়া খ্যাতির চূড়ায় থাকা গ্রেগের।
ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হ্যারি ব্রুক অবশ্য তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরুটা বেশ ভালোভাবেই করেছেন। সবেমাত্র ২৪টি টেস্ট খেলেছেন, গড় ৫৮.৪৮। দ্রুত ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপের মূল শক্তিও হয়ে উঠেছেন। ব্রুক তাঁর দলের অধিনায়ক বেন স্টোকস আর প্রধান কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের 'বাজবল' ছাঁচে পুরোপুরি ফিট করে গেছেন। মানে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন।
আর, তাতেই অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ব্যাটসম্যান গ্রেগ চ্যাপেল ব্রুককে মাস্টার ব্লাস্টার শচীন তেন্ডুলকরের সঙ্গে তুলনা করে বসেছেন। গ্রেগের দাবি, ইংল্যান্ড ব্যাটারের ব্যাটিংয়ের কায়দাটা বেশ সহজ-সরল আর ভীষণ 'ভীষণ বিধ্বংসী'। এতেই থামেননি। চ্যাপেল হ্যারি ব্রুক এবং শচীনের কেরিয়ারের প্রাথমিক পরিসংখ্যান পাশাপাশি রেখে নিজের বক্তব্যের পিছনে যুক্তি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। টেস্ট কেরিয়ারের শুরুতে শচীন ৬, ৭ নম্বর পজিশনে ব্যাট করতেন। আর ব্রুক টপ এবং মিডল অর্ডারে।
চ্যাপেল তাঁর কলামে লিখেছেন, 'হ্যারি ব্রুক, একজন ব্যাটিং সেনসেশন। ওঁর পারফরম্যান্স এবং পদ্ধতি গ্রেট শচীন তেন্ডুলকরের সঙ্গেই তুলনীয়। ব্রুকের কেরিয়ারের প্রাথমিক পরিসংখ্যান থেকেই বোঝা যায় যে একই সময়ে তিনি ভারতীয় মাস্টার ব্লাস্টারকেও ছাড়িয়ে যেতে পারেন। চ্যাপেলের কথায়, 'মাত্র ২৫ বছর বয়সে, দ্রুতই ব্রুক বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ক্রিকেটারদের একজন হয়ে উঠেছেন। ওঁর সহজ বিধ্বংসী ব্যাটিং নিয়ে গর্ব করা যায়। ব্রুক তেন্ডুলকরের মতই, ব্যাট করার সময় ক্রিজে বেশি নড়াচড়া করেন না।'
ব্রুক তাঁর ছোট্ট কেরিয়ারে ৮টি সেঞ্চুরি এবং ১০টি হাফ-সেঞ্চুরি করেছেন। সম্প্রতি তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ইংল্যান্ড নিউজিল্যান্ডকে পরাজিত করার পর তাঁকে সিরিজের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত করা হয়েছে। আর, ১৯৮৯ সালে টেস্ট কেরিয়ার শুরু করা শচীন ১৯৯২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৬ এবং ৭ নম্বরে ব্যাট করেছেন। তাঁর প্রথম ১৪টি টেস্টে শচীন লোয়ার-মিডল অর্ডারে ব্যাট করতেন। এরপর, ডানহাতি ব্যাটসম্যান ৪ নম্বর স্লটে নিজেকে সেট করে নেন।
চ্যাপেল বলেন, 'ব্রুকের স্টেবিলিটি আর কৌশলই ওঁকে বোলার কোন কোণকে টার্গেট করেছে আর, সেই বলটায় কীভাবে দুর্দান্ত স্ট্রোক নেওয়া যায়, তা বুঝতে সাহায্য করে। ফলাফল? বেশিরভাগ বল থেকেই ও রান নেয়। এটা একটা অসাধারণ ক্ষমতা। সে বল ফুল পিচ, শর্ট বা খারাপ লেংথ রেখে করা- যাই হোক না কেন।' চ্যাপেলের ধারণা, হ্যারি ব্রুক আর তেন্ডুলকরের কব্জির ফ্লিক, ক্রাঞ্চিং ড্রাইভ এবং ব্যাক-ফুট শট দিয়ে মাঠের বিভিন্ন জায়গায় বল পাঠানোর কায়দাটা প্রায় একই রকম।
তবে, হ্যারি ব্রুকের সেঞ্চুরি এসেছে ফ্ল্যাট ট্র্যাকে। টার্নিং পিচ এবং বাউন্সি ট্র্যাকে তাঁকে এখনও পরীক্ষা দিতে হয়নি। ২০২৫ সালের শেষের দিকে ইংল্যান্ড যখন অ্যাশেজের জন্য অস্ট্রেলিয়া সফর করবে, তখন ব্রুকের সেই পরীক্ষা হবে। গ্রেগের কথায়, 'তেন্ডুলকরের প্রথম দিকে বোলারের গতিকে নিজের সুবিধামত ব্যবহার করত। উইকেটের দুই দিকেই প্রচুর রান নিত। ব্রুকের চেহারা তুলনায় বেশ বড়সড়। ও বেশ শক্তিশালী খেলোয়াড়। ওঁর কব্জির ফ্লিক, ক্রাঞ্চিং ড্রাইভ এবং ব্যাক-ফুট শট গোটা মাঠে ছড়িয়ে পড়ে। এই সহজ পদ্ধতিই কিন্তু গ্রেটদের তৈরি বানায়।'
আরও পড়ুন- গোলের নামে অষ্টরম্ভা! কলকাতা ডার্বিকে সার্টিফিকেট বিলোলেন বাগানের বিশ্বকাপার ম্যাকলারেন
গ্রেগের কথায়, 'ওঁর প্রথম ১৫ টেস্টের সঙ্গে তুলনা করলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। তেন্ডুলকর ৪০-এরও কম গড়ে ৮৩৭ রান করেছিলেন, যার মধ্যে ছিল ২টি সেঞ্চুরি। অন্যদিকে ব্রুক প্রায় ৬০ গড়ে ১,৩৭৮ রান করেছেন। যার মধ্যে আছে ৫টি সেঞ্চুরি। সত্যি বলতে, শচীন তখনও কিশোর ছিল। আর ব্রুক ২০-এর মাঝামাঝি। ব্রুকের আক্রমণাত্মক মনোভাব এবং ধারাবাহিকতা ওঁকে বোলারদের কাছে দুঃস্বপ্ন করে তুলেছে। কারণ, তেন্ডুলকরের মতই ওঁকে আটকানো ভীষণ কঠিন। ইংল্যান্ডের জন্য, ও কেবল একজন উজ্জ্বল সম্ভাবনাই না। ও এমন একজন খেলোয়াড় যাঁকে ঘিরে ইংল্যান্ডের ভবিষ্যৎ গড়ে উঠতে পারে।'