Indian Super League 2024-25: মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের হয়ে অক্টোবরে তাঁর প্রথম কলকাতা ডার্বিতে গোল করেছিলেন জেমি ম্যাকলারেন। তারপর থেকেই তিনি সমর্থকদের মুখেমুখে 'ম্যাকাও' নামেই ফেরেন। লিগে এখনও অবধি ৫ গোল করেছেন। একটা গোলে সাহায্য করেছেন। কিন্তু, তাঁর সম্পর্কে যতটা শোনা গিয়েছে, তার ছিঁটেফোঁটা এখনও এই অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারের থেকে দেখা যায়নি। তিনি নাকি অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ লিগের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা। পাঁচবারের গোল্ডেন বুট বিজয়ী। তারপর আবার বিশ্বকাপার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খেলেছেন। সেই বিশ্বকাপার বিশ্ব ফুটবলে ১০০ ব়্যাংক থেকে দূরে থাকা ভারতের মাটিতে গোলমেশিন হয়ে উঠবেন বলেই সমর্থকদের ধারণা ছিল।
কিন্তু, কোথায় কী? শুক্রবার তো সাংবাদিকদের কাছে নিজেই স্বীকার করলেন, 'এখনও সেরাটা দিতে পারিনি। আরও গোল করতে চাই। গোল করায় সাহায্য করতে চাই। আইএসএলের সঙ্গে পুরোপুরি মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। আমাকে আরও উন্নতি করতে হবে। আগের ম্যাচ ভাগ্য সঙ্গ দেয়নি। শটটা পোস্টে গিয়ে লেগেছিল।' শুনলে মনে হবে কোনও বিশ্বকাপার না। যেন ময়দানে মাথা গুঁজতে আসা আফ্রিকার কোনও ছেলে কথাগুলো বলছে।
তবে, তার মধ্যেই বাগান তথা কলকাতার ফুটবল সমর্থকদের মনজয় কীভাবে করতে, সেই কৌশলটা দিব্যি দেখিয়ে দিলেন অজি তারকা। আবেগ ঢেলে বলে দিলেন, 'কলকাতায় খেলতে না পেরে না খুব খারাপ লাগছে। বিরাট স্টেডিয়ামে গিজগিজে লোক। তাঁরা আমাদের জন্য চিৎকার করছে। এই অভিজ্ঞতাটা বিরাট। এই সমর্থকরা গুয়াহাটিতে যেতে পারবেন না। এজন্য আমি হতাশ। আশাকরি গুয়াহাটিতেও একই পরিবেশ পাব।'
এটুকুতে ক্ষান্ত হলে, তা-ও না-হয় হত। কিন্তু, এরপর বাগানের বিশ্বকাপার বলে বসলেন, 'আমি বহু ডার্বি খেলেছি। মেলবোর্নে ডার্বি খেলেছি। স্কটল্যান্ডে ডার্বি খেলেছি। কিন্তু, এতবড় ডার্বি দেখিনি। এশিয়ার সবচেয়ে বড় ডার্বি এটাই।' তাঁর রেকর্ড বলছে, কয়েকটা দেশে খেলেছেন। তার মধ্যে নিজের দেশ অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি স্কটল্যান্ডের মত দেশও আছে। কিন্তু, এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তিনি খেলে বেড়াননি। তারপরও এশিয়ার সেরা ডার্বির সার্টিফিকেটটা কোত্থেকে ছাপালেন, বাগান তারকা নিজেই বলতে পারবেন।
আরও পড়ুন- চোট আঘাতে জর্জরিত বাগান, সমর্থকদের 'যতবার ডার্বি, ততবার হারবি' সুরে গলা মেলালেন না কোচ মোলিনা
তাঁর এজেন্ট বা পরামর্শদাতারা যে এই অজি বিশ্বকাপারকে কলকাতার ঘরের ছেলে করে তুলতে চেষ্টার কসুর করছেন না, সেটাও ঘুরিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন ম্যাকলারেন। কলকাতার ক্রিকেটপ্রেম ইতিমধ্যেই তাঁর কানে পৌঁছেছে। কার্যত সেটা বুঝিয়ে দিয়ে অজি তারকা বলেছেন, 'ক্রিকেটার মার্কাস স্টোইনিস আমার ছোটবেলার বন্ধু। কলকাতায় আসার আগে ওঁর থেকে টিপস নিয়েছি। আগের ডার্বিতে গোল করার পর ক্রিকেটার জাস্টিন ল্যাঙ্গার আমাকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন।' মুখে ক্রিকেট ছাড়া অন্য কোনও বিভাগের তারকার কথা শোনা গেল না। এসব দেখে বাকিটা বোধহয় কারও আর বুঝতে বাকি থাকার কথা না।