Advertisment

Sangwan has stumped Kohli: বাস ড্রাইভারের ট্যাকটিক্সেই কোহলিকে আউট, বড় স্বীকারোক্তি সাংগোয়ানের

Sangwan has stumped Kohli by surprise advice: বিরাট কোহলিকে আউট করে রাতারাতি সেনসেশনে পরিণত হয়েছেন হিমাংশু সাংগোয়ান। তিনি ভারতীয় সুপারস্টারের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন নিয়েও মুখ খুলেছেন।

author-image
IE Bangla Sports Desk
New Update
Virat Kohli-Himanshu Sangwan: বিরাট কোহলি ও হিমাংশু সাংগোয়ান

Virat Kohli-Himanshu Sangwan: বিরাট কোহলি ও হিমাংশু সাংগোয়ান। (ছবি- ইনস্টাগ্রাম)

Sangwan has stumped Kohli by surprise advice: বাস ড্রাইভার তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন 'বিরাট কোহলিকে পঞ্চম স্টাম্প লাইন বল কর।' তিনি সেই পরামর্শ মেনেছেন। আর, তাতেই হয়েছে কেল্লা ফতে। সংবাদমাধ্যমের কাছে এমনটাই দাবি করলেন রেলের পেসার হিমাংশু সাংগোয়ান। 

Advertisment

নয়াদিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে দিল্লি-রেল ম্যাচে ১২ বছর পর ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরেছেন বিরাট কোহলি। এই রঞ্জি ম্যাচে দিল্লি জয় পেলেও যাবতীয় মনোযোগ ছিনিয়ে নিয়েছেন রেলের পেসার হিমাংশু সাংগোয়ান। কারণ, তিনি ভারতের তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলিকে আউট করেছেন। ২৯ বছরের সাংগোয়ান ২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে রেলের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে হাতেখড়ি নেন। রঞ্জি ম্যাচে তিনি গোটা স্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে কোহলিকে প্যাভেলিয়নে ফেরান। মাত্র ২৩ মিনিট টিকেছিলেন ব্যাটার কোহলি। ১৫ বল খেলে ৬ রান করে তিনি সাংগোয়ানের অফ-স্টাম্প কার্টহুইলিঙে আউট হয়ে যান।

কোহলি সম্প্রতি অফ স্টাম্পের বাইরের বলে বারবার আউট হয়েছেন। তা গোটা ক্রিকেট দুনিয়া জানে। সেই কারণে অনেকেই আশা করেছিলেন যে সাংগোয়ানও কোহলিকে অফ স্টাম্পের বাইরেই বল করবেন। কিন্তু, রেলের পেসারের নিখুঁত ইনসুইঙ্গার কোহলির অফ-স্টাম্প ছিটকে দেয়। এরপরই সাংগোয়ান দাবি করেছেন, তিনি ও তাঁর দলের সতীর্থরা যে বাসে যাচ্ছিলেন, সেই বাসের চালক তাঁকে ওই বল করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই পরামর্শ শুনে তিনি নিজেও নাকি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। এমনটাই দাবি করেছেন রেলের পেসার।

সাংগোয়ান বলেছেন, 'ম্যাচের আগে, বিরাট কোহলি এবং ঋষভ পন্থের দিল্লির হয়ে খেলার কথা ছিল। সেসময়, আমরা জানতাম না যে ম্যাচটা সরাসরি সম্প্রচারিত হবে। আমরা পরে জানতে পারি যে ঋষভ পন্থ খেলবে না, কিন্তু বিরাট খেলবে। আর ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচারিত হবে। আমি রেলের পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দিচ্ছিলাম। দলের প্রত্যেক সদস্য আমাকে বলেছিল যে তারা নিশ্চিত আমিই বিরাট কোহলিকে আউট করব। আমরা যে বাসে যাচ্ছিলাম, সেই বাসচালকও আমাকে বলেছিল যে তুমি জানো- তোমাকে ৪র্থ-৫ম স্টাম্প লাইনে বল করতে হবে। বিরাট কোহলি তাতেই আউট হয়ে যাবে। আমার আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি অন্য কারও দুর্বলতার চেয়ে কেবল নিজের শক্তির ওপর মনোযোগ দিতে চেয়েছিলাম। সেটা করেছি আর, শেষ পর্যন্ত উইকেট পেয়েছি।'

Advertisment

৮১টি প্রথম শ্রেণির উইকেটের মালিক সাংগোয়ান বলেছেন যে তিনি কোহলির জন্য আলাদা কোনও পরিকল্পনা করেননি। তিনি উলটে কোহলির সঙ্গে গিয়ে কথাবার্তা বলেছেন। ম্যাচের বলে তাঁর সইও নিয়েছেন। সাংগোয়ানের কথায়, 'এমনিতে বিরাট কোহলির জন্য আলাদা কোনও পরিকল্পনা করিনি। কোচরা আমাদের বলেছিলেন যে দিল্লির খেলোয়াড়রা আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করে। ওঁরা সবাই স্ট্রোক প্লেয়ার। আমাদের বলা হয়েছিল, লাইন-লেংথ রেখে বল করতে।'

সাংগোয়ান বলেন, 'যখন আমাদের ইনিংস শেষ হল, আমি ড্রেসিংরুমে যাচ্ছিলাম। বিরাট কোহলি মাঠে আসছিলেন। আয়ুশ বাদোনি ও বিরাট সেখানে ছিলেন। বিরাট ভাইয়া নিজেই আমার সঙ্গে করমর্দন করে বললেন, খুব ভালো বোলিং করেছ। আমি তখন বললাম, আমি মধ্যাহ্নভোজের বিরতির সময় ওঁর সঙ্গে একটি ছবি তুলতে চাই। আমি দিল্লির ড্রেসিংরুমে গেছিলাম। আমি যে বল দিয়ে ওঁকে আউট করেছি, সেই বলই নিয়ে গেছিলাম। ও আমাকে জিজ্ঞাসা করল, এটাই কি সেই বল? খুব মজা পেয়েছ, হ্যাঁ?'

রঞ্জি ট্রফির দ্বিতীয় দিনে বিরাট কোহলিকে আউট করার পর সাংগোয়ান সংবাদ শিরোনামে উঠে আসেন। পেসারের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল 'ব্যক্তিগত' দেখে ভক্তরা অবাক হন। তবে, সাংগোয়ান এখন তাঁর প্রোফাইল জনসমক্ষে প্রকাশ করেছেন। কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁর ফলোয়ার সংখ্যা ৭৫০ থেকে বেড়ে ১৮,০০০-এরও বেশি হয়ে গিয়েছে। কোহলির এত বিশাল ফ্যান ফলোয়ার রয়েছে যে দিল্লিতে রঞ্জি ট্রফির প্রথম দুই দিনে অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ১০,০০০-এরও বেশি দর্শক এসেছিলেন। তাঁদেরই সুনজরে পড়েছেন সাংগোয়ান।

সাংগোয়ান বলেন, 'এই ম্যাচ আমার জীবন বদলে দিয়েছে। যখন বাড়ি ফিরেছিলাম, দেখি যে ৩০০টি মিসড কল এবং ২০০-২৩০টি মেসেজ। আমার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট সবসময় ব্যক্তিগত ছিল। আমি এখন অনেক ভালোবাসা পাচ্ছি, ফলোয়ার সংখ্যাও বেড়েছে। আমি এখন আমার ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল জনসমক্ষে প্রকাশ করেছি। এই মাঠে যা দর্শক হয়েছিল, সেটাই আমার দেখা সবচেয়ে বড় ভিড়। আমাদের কোচ এবং খেলোয়াড়দের কেউই এর আগে এত ভিড় দেখেনি। মনে হচ্ছিল যেন একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছি। কারণ একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচেই হার্দিক, শামি এবং বুমরার মতো বিভিন্ন খেলোয়াড়ের নামে স্লোগান শোনা যায়। এখানে অবশ্য শুধু 'বিরাট বিরাট' স্লোগানই শোনা যাচ্ছিল। দিল্লিতে খেলে আমি বেশ মজা পেয়েছি।'

সাংগোয়ান বলেন, 'ঋষভ পন্থকে খেলতে না দেখে হতাশ হয়েছি।' সাগোয়ান ও পন্থ দিল্লি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে একসঙ্গে খেলেছেন। রাজকোটে সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আগের রঞ্জি ম্যাচে পন্থ খেলেছেন। সাংগোয়ান তাই ভেবেছিলেন যে পন্থ রেল ম্যাচেও খেলবেন। এই ব্যাপারে সাংগোয়ান বলেন, 'ঋষভ পন্থকে আমাদের বিরুদ্ধে খেলতে না দেখে আমি একটু হতাশ হয়েছি। কারণ আমরা একসঙ্গে অনূর্ধ্ব-১৯ খেলেছি। তারপর থেকে ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আর আইপিএল খেলছে। আমার অনেকদিন ওঁর সঙ্গে দেখা হয়নি। ওঁর সঙ্গে দেখা হবে, কথা হবে ভাবছিলাম।'

সাংগোয়ানের অতীত বেশ কষ্টদায়ক। মাত্র ১৩-১৪ বছর বয়সে বাড়ি ছাড়েন। ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভাড়া বাড়িতে থাকছেন। এই ব্যাপারে সাংগোয়ান বলেন, 'সে একটা কঠিন সময় গেছে। আমি ১৩-১৪ বছর বয়সে দিল্লি চলে আসি। ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভাড়া বাড়িতে থাকি। আমার আত্মবিশ্বাস ছিল। খেলা চালিয়ে গেছি। যে পরিবারের সঙ্গে থাকি, তারা আমার পাশে আছে। তারা আমাকে নিজের সন্তানের মত দেখে। আমি সবসময় এমন একজনকে পাশে পেয়েছি যে ম্যাচের সময় খারাপ পারফর্ম করলেও আমার কষ্টের কথা শুনত।'

এরপর সাংগোয়ান বলেন, 'যখন আমি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে শুরু করি, তখন আমি সবসময়ই কঠোর পরিশ্রমকে গুরুত্ব দিয়েছি। কখনও শর্টকাট না নেওয়ার শিক্ষা নিয়েছি। আইপিএল একটি ভালো প্ল্যাটফর্ম। আইপিএল খেলার পর খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারে। কিন্তু আমার মনে হয় আইপিএল খেলা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার একমাত্র সিঁড়ি নয়। ঘরোয়া ক্রিকেটও সেই সিঁড়ি। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া একটি দীর্ঘ পথ। কিন্তু কঠোর পরিশ্রম সর্বদা ফলপ্রসূ হয়। ঘরোয়া ক্রিকেটের ক্ষেত্রে ভারতের একটি খুব ভালো কাঠামো আছে।'

আরও পড়ুন- বিরাট দুঃসংবাদ! তর্জনীতে আঘাত সঞ্জু স্যামসনের, খেলতে পারবেন না গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ

শুধু কোহলিই নন। সাংগোয়ানের খেলায় মুগ্ধ গ্লেন ম্যাকগ্রাথও। এই ব্যাপারে রেলের পেসার বলেন, 'আমি ২০১৮-য় এমআরএফ পেস একাডেমিতে যাই। ওখানে ২৫ জন ছেলে ছিল। ভিডিও বিশ্লেষকরা আমাদের বোলিং অ্যাকশন দেখছিলেন। গ্লেন ম্যাকগ্রা আমাদের কোথায় উন্নতি করতে হবে, সে ব্যাপারে বলছিলেন। আমি সবার শেষে এসেছি। ম্যাকগ্রা স্যার আমাকে জানান যে আমার অ্যাকশন নিখুঁত। রান-আপ ভালো। পেটানো শরীর। কবজি ঠিকঠাক জায়গায় থাকে। উনি আমাকে খেলা চালিয়ে যেতে বলেছিলেন। উৎসাহ দিয়ে বলেছিলেন যে আমার বেস বেশ শক্তিশালী। তাই আমি যেন ক্রিকেট না ছাড়ি।'

cricket indian railway Cricket News Indian Cricket Team Team-India Team India
Advertisment