ঘরের মাঠে চলতি শতকের শুরুতে সৌরভের টিম ইন্ডিয়ার হাতে অস্ট্রেলিয়ার পরাজয় দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের ল্যান্ডমার্ক মুহূর্ত। স্রেফ প্রবল প্রতাপশালী দুর্দমনীয় অস্ট্রেলিয়াকে হারানোই নয়, অজি-বধ দেশের ক্রিকেটারদের ওপর এক চিরন্তন বিশ্বাসের ভিত গড়ে দিয়েছিল।
ঐতিহাসিক সেই সিরিজে প্ৰথম টেস্টে মুম্বইয়ে ভারত হার হজম করেছিল। আর ইডেন গার্ডেন্সে ভারত টেস্টের অধিকাংশ সময়ই ব্যাকফুটে ছিল। প্ৰথম ইনিংসে ভারত ফলো-অনের মুখে পড়ে। তারপরেই টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সম্ভবত সেরার সেরা পার্টনারশিপ গড়ে যান রাহুল দ্রাবিড় এবং ভিভিএস লক্ষ্মণ। ৩৭৬ রানের ম্যারাথন জুটি ম্যাচের রঙ বদলে দেয়।
আরও পড়ুন: IPL-এ কলঙ্কের এক শেষ CSK-র! সেরার সেরা তিন তারকাকে বাদ দেওয়ার পথে ধোনিরা
২৮১ রানের ইনিংস উপহার দেন লক্ষ্মণ। সেই সময় সেটাই ছিল টেস্টের দুনিয়ায় কোনও ভারতীয়র ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর। দ্রাবিড় ১৮০-তে আউট হয়ে যান। দ্রাবিড়-লক্ষ্মণের সেই অমর পার্টনারশিপ দেশের ক্রিকেট উপকথায় পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নেয় তারপরে।
তবে দ্রাবিড়, লক্ষ্মণ ছাড়াও সেই রূপকথার অংশ ছিলেন হরভজন সিং। সেই সময় বছর ২০-র হরভজন প্ৰথম ইনিংসে হ্যাটট্রিক নিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন। দ্বিতীয় ইনিংসে অজি ইনিংস একাই মুড়িয়ে দেন, মাত্র ৩২ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট তুলে নিয়ে। সেই সিরিজের তিন টেস্টে হরভজন থামেন ৩২ উইকেট দখল করে। সিরিজের তিনিই হন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী।
পুরোনো সেই দিনের কথা স্মরণ করে হরভজন জানিয়ে দেন, সৌরভ তাঁকে ব্যাক না করলে তাঁর কেরিয়ার যেমন শেষ হয়ে যেত, তেমন সৌরভও নেতৃত্ব হারাতে পারতেন। বোর্ডের বর্তমান সভাপতি এখনও তাঁর কাছে ঈশ্বর তুল্য।
আরও পড়ুন: শাস্ত্রীর দখলে দুর্মূল্য ‘জাতীয় সম্পত্তি’! হঠাৎ ফাঁস হয়ে গেল সেই ছবি
স্পোর্টস ক্রীড়ায় হরভজন বলেছেন, "আমাকে সৌরভ ব্যাক না করলে সেই সিরিজ ভারত হারত এবং তারপরে নেতৃত্ব হারাত সৌরভ। ঈশ্বর হিসাবে ও যেন আবির্ভূত হয়েছিল আমার সামনে। আমার হাত ধরেছিল। আমিও নিজের কাজ করে যাই। এটা আমার কেরিয়ার যেমন গড়ে দিয়েছিল, তেমনই ওঁর নেতৃত্বের মেয়াদ বেড়ে গিয়েছিল। ও আমাকে একটা সুযোগ দেয়। সুযোগের সদ্ব্যবহার করার বিষয়টি ছিল আমার ওপরে।"
কলকাতায় খেলতে নামার আগে টানা ১৬ টেস্ট অপরাজিত ছিল অস্ট্রেলিয়ানরা। তৃতীয় টেস্টেও ভারত ২ উইকেটে অজিদের পরাস্ত করে ইতিহাস গড়া নিশ্চিত করে। চোট পাওয়া অনিল কুম্বলের জায়গায় খেলতে নেমেই নজির গড়ে যান হরভজন।