অবসর ভেঙে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন ঠিক বিশ্বকাপের আগেই। তবে প্রোটিয়াজ টিম ম্যানেজমেন্টই নাকি তাতে আগ্রহ দেখায়নি। এবি ডিভিলিয়ার্সের অবসর নিয়ে এমন বিস্ফোরক তথ্য এবার প্রকাশ্যে। ভারতের বিরুদ্ধে হারের পরেই দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরের বেআব্রু দশা প্রকট। এমন গনগনে অবস্থাতেই এবিডিকে নিয়ে ফাঁস হয়ে গেল প্রাক-বিশ্বকাপের মুহূর্ত।
টানা তিনটে ম্যাচে হার। প্রথমে ইংল্যান্ড, তারপর বাংলাদেশ এবং বুধবার ভারত। তারপরে দক্ষিণ আফ্রিকান সমর্থকরা স্লোগান তুলেছেন 'ব্রিং ব্য়াক এবিডি'। চোট আঘাতে জর্জরিত দক্ষিণ আফ্রিকান বোলিং আক্রমণ রাবাদাকে নিউক্লিয়াস বানিয়ে উন্নতির লক্ষণ দেখালেও, ব্যাটিংয়ের শোচনীয় অবস্থার কোনও পরিবর্তন ঘটেনি। আগের দুই ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারত ম্যাচেও মুখ থুবড়ে পড়ার 'ঐতিহ্য' বজায় রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তারপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সমর্থকরা। ব্যাটিং বিপর্যয়ের দাওয়াই হতে পারেন একমাত্র এবি ডিভিলিয়ার্স। এমনটাই বলছেন ফ্যান-রা। যদিও তা হওয়ার নয়।
আরও পড়ুন গোপনে নারী-সঙ্গ রবি শাস্ত্রীর, অভিযান শুরুর দিনেই বিতর্ক তুঙ্গে
দক্ষিণ আফ্রিকান ট্রেন্ডস নামের এক টুইটার অ্যাকাউন্টে ভারতীয় এক ওয়েবসাইটের নামোল্লেখ করে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, এবিডি-কে নেওয়ার বিষয়ে কোনও আগ্রহই দেখায়নি দক্ষিণ আফ্রিকান টিম ম্যানেজমেন্ট। জাতীয় দল থেকে তিন ফর্ম্যাটে আগেই অবসর নিয়ে ফেলেছিলেন। তবে বিশ্বকাপের আগেই আইপিএলের ফর্ম বিবেচনা করে অবসর ভেঙেব ময়দানে ফেরার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। সেই ক্রিকেট ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপগামী চূড়ান্ত ১৫ জনের স্কোয়াডে তাঁকে রাখার জন্য ফাফ ডুপ্লেসিসকে বার্তা দিয়েছিলেন এবিডি। পাশাপাশি, নিজের মত পরিবর্তনের কথা তিনি জানিয়েছিলেন, কোচ ওটিস গিবসন এবং নির্বাচকদের প্রতিনিধি লিন্ডা জন্ডিকে। যদি তাঁকে সেই সময় বলা হয়, সেটা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটের সূত্রের খবর, এবি-র অনুরোধ কার্যত গ্রাহ্যই করা হয়নি।
AB de Villiers wanted to come out of retirement for #WorldCup, offer rejected by #SouthAfrica management... https://t.co/oSPdSS52gB pic.twitter.com/qRyU9M7R9m
— South Africa Trends (@SATrending) June 6, 2019
কেন ডিভিলিয়ার্সকে হতাশ হতে হল? দক্ষিণ আফ্রিকান টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্রে তুলে ধরা হচ্ছে, জোড়া কারণ। প্রথম, জাতীয় দলে প্রবেশাধিকারের প্রথম শর্তই হল ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করা। বিশ্বকাপ নির্বাচনের ঠিক একবছর আগে এবি অবসর নিয়ে ফেলেছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটেও তিনি অংশ নেননি। দ্বিতীয়ত, এবি-কে সুযোগ দেওয়া হলে, উঠতি ক্রিকেটারদের প্রতি অবিচার হত। বাদ পড়তে হত, ভ্যান ডার দুসেনকে। যিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করে আন্তর্জাতিক ম্যাচেও ছাপ ফেলেছেন। জানুয়ারিতে, অভিষেক পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিষেক ঘটানোর পরে প্রথম চার ইনিংসেই তিনটে শতরান করেছিলেন তিনি। সবমিলিয়ে বিতর্ককে দূরে রাখতে চেয়েই এবি-কে 'না' বলে দেওয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, আইপিএল চলাকালীন এবি-ও অবসর ভেঙে ফেরার বিষয়ে বার্তা দিয়েছিলেন ভারতীয় এক টিভি চ্যানেলে। সেখানে তিনি বলেছিলেন, "আমি বিশ্বকাপে খেলতে আগ্রহী। তবে আমি জাতীয় দল ছেড়ে দিয়েছি। অবসর নিয়ে ফেলেছি।" পাশাপাশি তাঁর সংযোজন ছিল, "শেষ তিন বছর ধরে আমাকে ক্রমাগত সমালোচিত হতে হয়েছে। বলা হয়েছে, নিজের ইচ্ছেমতো জাতীয় দলে খেলছি, আবার বসে থাকছি। দেশে ভীষণভাবে সমালোচনা করা হচ্ছিল। এটাও আমার অবসরের অন্যতম কারণ।"
দক্ষিণ আফ্রিকাকে শেষ চারে উঠতে হলে বাকি ছ-ম্যাচের প্রত্যেকটিতেই জিততে হবে। তাই কার্যত বিদায়ের মুখে দাঁড়িয়ে প্রোটিয়াজরা। এর মধ্যেই এবি-এপিসোড বিতর্কের নয়া মাত্রা সংযোজন করল।