খেলার প্রতিটি মুহূর্তে টেনশন। মুহূর্ত বদলের সঙ্গে সঙ্গেই নতুন মোচড়। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচ। চূড়ান্ত শ্বাসরূদ্ধকর বিশ্বকাপ ফাইনাল আপাতত ক্রিকেটের গা থেকে সরিয়ে দিয়েছে 'বোরিং' ট্যাগ। ১০২ ওভার পরেও মীমাংসা হয়নি বিজয়ীর। কোনওরকমে জোড়াতালি দেওয়া নিয়মে ইংল্যান্ডকে হয়তো চ্যাম্পিয়ন করে দেওয়া হয়েছে। তবে সেই কৃতিত্বে কলঙ্ক অনেক বেশি।
যাইহোক, কেমন ছিল সেই ম্যাচ! স্রেফ একটি উদাহরণেই বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব। নিউজিল্যান্ডের তারকা অলরাউন্ডার জিমি নিশামের শৈশবের কোচ ডেভিড জেমস গর্ডন মারা যান সুপার ওভার চলাকালীন। খেলার চূড়ান্ত উত্তেজনা সহ্য না করতে পেরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন কোহলিদের কোচের দৌড়ে এগিয়ে কারা? চমক একাধিক নামে
ইংল্যান্ড ২৪১ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ২৪১-এ থেমে যাওয়ার পরে সুপার ওভারে খেলার ফয়সালা করার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। শুরুতে ব্য়াট করতে নেমে বেন স্টোকস এবং বাটলার ১৫ তোলেন। সেই রান তাড়া করতে নেমে জোফ্রা আর্চারের বলে জিমি নিশাম দ্বিতীয় বলেই সোজা ওভার বাউন্ডারি হাকিয়েছিলেন। সেই সময়ে শেষ ৪ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ৭ রান।
তবে ছাত্রের ব্যাটে বিশাল ছক্কা দেখে আনন্দের আতিশয্যে এতটাই উৎফুল্ল হয়ে পড়েছিলেন যে হৃদরোগের শিকার হন। গর্ডনের কন্যা লিওনে জানান, "সোমবার সকালে নিশাম যখন দ্বিতীয় বলেই ছক্কা হাকিয়েছিল, সেই সময় বাবার হঠাৎ নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। সুপার ওভারের সময় একজন নার্স এসে বললেন, নিঃশ্বাস থমকে যাচ্ছে।"
গুরুর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে টুইট করেছেন নিউজিল্যান্ডের সুপার ওভারের ট্র্যাজিক নায়ক। তিনি লেখেন, আমার হাইস্কুল শিক্ষক, বন্ধু এবং কোচ ডেভ গর্ডন, ক্রিকেটের প্রতি আপনার ভালবাসা ভীষণ ছোঁয়াচে ছিল। আমরা যারা আপনার অধীনে খেলতে পেরেছি, তারা ভীষণ ভাগ্যবান। আশা করি আপনি আমার খেলায় গর্বিত হয়েছেন। সমস্ত কিছুর জন্য ধন্যবাদ।
অবশ্য শুধু নিশামও নন, গর্ডনের কোচিংয়ে বেড়ে উঠেছেন নিউজিল্যান্ডের আরও লকি ফার্গুসন সহ আরও তারকা ক্রিকেটাররা। তবে নিশামের জন্য বরাবরই তাঁর হৃদয়ে আলাদা স্থান ছিল। কন্যা লিওনে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, "জিমির বাবার বন্ধু উনি। বরাবর উনি জিমির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে গিয়েছেন। জিমির জন্য ওঁর হৃদয়ে আলাদা জায়গা ছিল। উনি সত্যিই জিমির জন্য গর্বিত।"