বাংলাদেশের ক্রিকেটের ধোনি বলা হয় তাঁকে। বলা হয়, বাংলাদেশের ক্রিকেট বিশ্বে পরাশক্তি হিসেবে উঠে আসারও রূপকার তিনি। সেই মাশরাফি বিন মোর্তাজা-ই সম্ভবত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচ খেলে বিদায় জানাতে পারেন। এমনই ইঙ্গিত বাংলাদেশের একাধিক প্রচারমাধ্যমের। বারেবারেই চোট পেয়েছেন ৩৬ বছরের পেসার। আর চোটকে তুড়ি মেরে অস্ত্রোপচার করে ফিরে এসেছেন তিনি। চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অধিনায়কও তিনি। তাঁর নেতৃত্বেই মনে রাখার মতো পারফরম্যান্স মেলে রেখেছে শাকিব আল হাসানরা।
তিনি-ই কী সরে দাঁড়াবেন? বাংলাদেশ ম্যাচের আগের দিনই ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাশরাফি জানিয়ে দিয়েছেন, "কোনও সন্দেহ নেই। এটাই আমার শেষ বিশ্বকাপ। তবে বিশ্বকাপ শেষে আমি অবসর নিচ্ছি না। ওয়ানডে খেলব। বোর্ড থেকে এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি। এলে আলাদা কথা। ব্যক্তিগতভাবে এখন আমার অবসর নেওয়ার চিন্তা নেই।"
আরও পড়ুন বাংলাদেশের বিপক্ষে ‘মিশন ইমপসিবলে’র সামনে পাকিস্তান
মাশরাফি নিজে অবসর নেওয়ার পক্ষপাতী না হলেও পরিস্থিতি অবশ্য তাঁকে অবসর নিতে বাধ্য করাতে পারে। কারণ একটাই পারফরম্যান্স! বিশ্বকাপে দলের একনম্বর পেসার হয়েও তাঁর উইকেটসংখ্যা মাত্র ১। সব ম্যাচে আবার নিজের পুরো ১০ ওভারের কোটাও বোলিং করতে পারেননি। ভারত ম্যাচে বল তো বটেই, ব্যাট হাতে শেষ দিকে দলকে জেতার দিশা দেখাতে পারেননি। আর তাই মাশরাফি-র অবসর নিয়ে বাংলাদেশি গণমাধ্যমের সুর বেশ চড়া। হাসিনার দলের তারকা-সাংসদের অবসর নেওয়ার আওয়াজ উঠেছে প্রায় প্রতিটি সংবাদমাধ্যমই।
সংবাদমাধ্যমকে এড়ানোর জন্যই পাকিস্তান ম্যাচের আগের দু-দিন সাংবাদিক সম্মেলনেই হাজির হলেন না। দলের মধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে মাশরাফিকে নিয়ে। বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রচারমাধ্যমের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ দলের মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম জানিয়েছেন, স্বস্তি বোধ করেননি বলে মাশরাফি প্রেস কনফারেন্সে আসেননি। ম্যাচের আগে এই বিষয়ে প্রশ্নের কোনও জবাব পাওয়া যায়নি কোচ স্টিভ রোডসের কাছ থেকেও।
মাশরাফির অবসরের প্রসঙ্গে সবথেকে যে বড় যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, তা হল টাইমিং। এমন দারুণ অবসরের টাইমিং কখনও পাবেন না মাশরাফি। চলতি বিশ্বকাপের পরে ঘরের মাঠে বেশ কয়েকমাস ওয়ান ডে সিরিজ নেই। সামনেই অবশ্য শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ান ডে সিরিজ রয়েছে। তবে তা, শ্রীলঙ্কার মাটিতে। সেই সিরিজ শেষেও নাকি বিদায় জানাতে পারেন তিনি। তবে লর্ডসে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। ঐতিহ্যমণ্ডিত লর্ডসে মাশরাফি বিদায় স্মরণীয় হয়ে থাকবে শ্রীলঙ্কার মাঠের থেকে। এমনটাই দাবি সমর্থকদের।
সময়ের দাবি মেনেই কী সরে যাবেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটের ধোনি! সেটাই আপাতত দেখার।