আর মাত্র ৪ দিন! তারপরেই বাইশ গজে ব্য়াট-বলের মহোৎসব! ক্রিকেট বিশ্বকাপ নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। এর মধ্যেই বোমা ফাটালেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন স্পিনার মন্টি পানেসর। তিনি জানিয়ে দিলেন অবৈধভাবে বল বিকৃতি করত ইংল্যান্ডও। যা নিয়ে বিশ্বকাপের প্রাক-লগ্নেই তোলপাড় ক্রিকেট বিশ্ব।
কিছুদিন আগেই প্রাক্তন অফস্পিনার আত্মজীবনী 'দ্য ফুল মন্টি' প্রকাশ করেছেন। সেই বইয়েই উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। মন্টি সরাসরি জানিয়েছেন, তিনি নিজে তো বটেই তাঁর সময়ে বাকি ইংরেজ বোলাররাও বল বিকৃতি করত সুনিপুণভাবে! তিনি জানিয়েছেন, ইংল্যান্ডের বোলাররা বেশিরভাগ সময় রিভার্স সুইং করার জন্য লজেন্স ব্যবহার করে। তিনি এক সময়ে বলেছেন, প্রথম একাদশে তাঁর নির্বাচনের বিষয়টিও ছিল শর্তসাপেক্ষ! কী ছিল সেই শর্ত? পানেসর ফাঁস করেছেন, আমাকে নেওয়ার শর্তই ছিল কোনওভাবেই বলের চকচকে দিক নষ্ট করা যাবে না।
বল বিকৃতি ও রিভার্স সুইংয়েই বেসামাল ক্রিকেটবিশ্ব
নির্বাসিত স্মিথ ইনস্টাগ্রামে, কী বললেন বল বিকৃতিতে অভিযুক্ত অস্ট্রেলিয় ক্রিকেটার?
ইংল্যান্ড রিভার্স সুইং কার্যত শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা একথা বলে থাকেন। জিমি অ্যান্ডারসন থেকে স্টুয়ার্ট ব্রডদের রিভার্স সুইংয়ে কাত হয়েছে বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু সেখানেও রয়েছে জালিয়াতি। পানেসর বলছেন, ইংল্যান্ডের প্রথম একাদশে স্পিনারদের নয়, পেসারদের ভূমিকাই ছিল মুখ্য। "ইংল্যান্ড দলে আসার পর আমার কাজই ছিল সিমারদের জন্য বল তৈরি করা। এমনকি জেমস অ্যান্ডারসন আমাকে নির্দেশ দিত, যতটা সম্ভব বলকে শুকনো রাখার চেষ্টা করো।" এমনটাই বলছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইংরেজ স্পিনার।
মুখের চুইংগাম, লজেন্স ছাড়াও প্যান্টের জিপ-ও ব্যবহার করা হত বল বিকৃতি ঘটানোর ক্ষেত্রে। পানেসর জানাচ্ছেন এমনই কথা।
মন্টি তার আত্মজীবনীতে জানিয়েছেন, ক্রিকেটীয় স্পিরিটের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েই বল-বিকৃতি ঘটাতে প্যান্টের ‘জিপ’ ব্যবহার করেছেন। বিস্ফোরক পানেসরের স্বীকারোক্তি, "লজেন্স খাওয়ার পরে মুখের লালা এবং সানক্রিম ঠিক মতো ব্যবহার করলে দারুণ রিভার্স সুইং পাওয়া যায়। আমি তো অনেক সময়েই প্যান্টের জিপে বল ঘষতাম। এতে বলের আকৃতি কিছুটা পাল্টে যেত। উপকৃত হত বোলাররা।
তবে পানেসর নিজেদের স্বপক্ষে যুক্তিও দিয়েছেন। বলেছেন, "পুরো বিষয়টি ক্রিকেট আদর্শের পরিপন্থী হতে পারে। তবে নিয়মে এ-ও বলা রয়েছে, বলের পালিশ ঠিক রাখতে পোশাক ব্যবহার করা যেতে পারে। এটাই আমি কাজে লাগিয়েছি।"
গত বছরেই ওয়ার্নারদের বল বিকৃতি কাণ্ডে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল বিশ্বে। এক বছর সাসপেন্ড থাকতে হয়েছিল তারকা দুই অজি ক্রিকেটারদের। তারপরে প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন, কিছুদিন আগে। এমনিতে এই বিশ্বকাপে ফেভারিটের তকমা দেওয়া হচ্ছে ইংল্যান্ডকে। তবে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হওয়ার আগেই এমন বিস্ফোরক ঘটনার প্রভাব কতটা থাকে, সেটাই আপাতত দেখার।