তাঁর স্টাম্পিং নিয়ে আলোচনা হয় বিশ্ব ক্রিকেটে। রিফ্লেক্স, উইকেটের পিছনে অসাধারণ ক্ষিপ্রতা নিয়ে ক্রিকেটের থিসিস লেখা যায় নিঃসন্দেহে। ব্যাটসম্যান বোলারের পাশাপাশি অবচেতনে চিন্তিত থাকেন তাঁকেও নিয়েও। সেই মহেন্দ্র সিংহ ধোনিই এবার উইকেটকিপারের 'শিকার'। শনিবারের ভারত-আফগানিস্তান ম্যাচে দেখা গেল বিরল দৃশ্য। ধোনি নিজেই কিনা স্টাম্প আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন।
এমনিতে, সাউদাম্পটনের রোজ বোল স্টেডিয়াম রূদ্ধশ্বাস লো স্কোরিং ম্যাচের সাক্ষী থাকল। ভারত মাত্র ২২৪ রানে আউট হয়ে যাওয়ার পরে আফগানিস্তান সেই রান প্রায় স্কোরবোর্ডে তুলেও দিয়েছিল। তবে শেষদিকে সামির হ্যাটট্রিকে আফগানদের ভারতকে হারানোর স্বপ্নপূরণ আর হয়নি। এই টানটান ম্যাচেই ধোনি শিরোনামে। মন্থরতম ব্যাটিংয়ের জন্য চূড়ান্ত আলোচিত তিনি। দলকে ভাল স্কোরে পৌঁছে দিতে না পারার ব্যর্থতায় ধোনি যেমন সমালোচিত হচ্ছেন, তেমনই তাঁর স্টাম্প আউট নিয়েও বিস্তর লেখালেখি হচ্ছে। ব্যাটসম্যানদের সামান্য অসতর্কতায় যিনি দুরন্ত ক্ষিপ্রতায় বেল নড়িয়ে দেন, তিনিই এবার অবিকল সেইভাবে আউট।
পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যাচ্ছে, এই নিয়ে কেরিয়ারে মোট দু-বার স্টাম্প আউটের শিকার হলেন তিনি। ঘটনাচক্রে, দু-বারই বিশ্বকাপে। ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ধোনি স্টাম্পিংয়ের শিকার হন। সেবার ঘাতক উইকেটকিপার হলেন থমাস। আর তার আট বছর পর এবার ধোনি-ঘাতক উইকেটকিপার আফগানিস্তানের ইকরাম আলিখিল।
বেশ কঠিন পরিস্থিতিতে ধোনি ক্রিজে এসেছিলেন। থিতু হতে পারছিলেন না কোনও ব্যাটসম্যানই। ক্রিজের একপ্রান্ত আগলে ছিলেন কোহলি। কোহলির সঙ্গে প্রাথমিকভাবে জুটি বেঁধেছিলেন তিনি। মাঝে কোহলি আউট হয়ে গেলেও ধোনি ব্যাটিং করে চলেছিলেন। তবে স্লো পিচে ধোনি রানের গতিবেগ বাড়াতে পারেননি। ক্রমাগত বল নষ্ট করে চলেছিলেন তিনি। শেষদিকে, বেপরোয়া হয়ে রানের গতি বাড়াতে গিয়েই আউট তিনি। রশিদ খানের ফ্লাইটে এগিয়ে এসে ওভার বাউন্ডারির বাইরে ফেলতে চেয়েছিলেন। ব্যাটে বলে সংযোগ হয়নি। সরাসরি স্টাম্প করে দেন আফগানিস্তানের উইকেটরক্ষক। ৫২ বলে মাত্র ২৮ রান করে বিদায় নেন তিনি।
ঘটনাচক্রে, ধোনির এই স্টাম্প আউট নিয়েই আবার ভারতীয় সমর্থকরা উচ্ছ্বসিত। তাঁরা বলছেন, ধোনির কেরিয়ারের প্রথমবার স্টাম্প আউট হওয়া বিশ্বকাপেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। দ্বিতীয়বারেও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে! সত্যিই কী তাই, দেখা যাক।