মাত্র একটা ম্যাচে বাইশ গজে দেখা গিয়েছে টিম ব্লু-কে। আর তারপরেই আইসিসি বনাম বিসিসিআই সংঘাত চরমে। নেপথ্যে মহেন্দ্র সিং ধোনির গ্লাভস। গ্লাভসে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতীক 'বলিদান'-এর চিহ্ন লাগিয়ে কিপিং করেছিলেন মহাতারকা। এমন ঘটনা প্রকাশ্য়ে আসার পরেই আপত্তি জানিয়েছিল ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা। বলা হয়েছিল, সেনাবাহিনীর প্রতীক গ্লাভস থেকে সরিয়ে মাঠে নামুক ধোনি। তবে আইসিসি-র বক্তব্য প্রকাশ পাওয়ার পরেই আসরে নামল বিসিসিআই। আইসিসি-কে আপাতত ভারতীয় বোর্ডের অনুরোধ, ধোনি-কে 'বলিদান' চিহ্ন লাগাতে অনুমতি দেওয়া হোক।
বোর্ডের প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান বিনোদ রাই সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, "ভারতীয় বোর্ড ইতিমধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে আধা সেনার চিহ্ন লাগানোর জন্য অনুমোদন চেয়েছে আইসিসির কাছ থেকে।" ধোনির বলিদান-বিতর্কে বরং বোর্ড কর্তার যুক্তি, "আইসিসি-র নিয়ম অনুযায়ী, ক্রিকেটাররা কোনওরকম বানিজ্যিক, ধর্মীয় কিংবা মিলিটারি লোগো লাগাতে পারেন না। ধোনির প্রতীকে কোনও ধর্মীয় কিংবা বানিজ্যিক বিষয়ের অংশ-ই নয়। আর এটা কোনও দমনকারী প্য়ারামিলিটারি ছোড়া-র প্রতীকও নয়। তাই ধোনি কোনওভাবেই আইসিসি-র নিয়মভঙ্গ করছেন না।"
আরও পড়ুন ধোনির নাম জড়াল আইসিস জঙ্গিদের সঙ্গে, দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের পরেই চাঞ্চল্য
ধোনি-বিতর্কে ভারতীয় বোর্ড যে পুরোদস্তুর মাঠে নামতে প্রস্তুত তা-ও ইঙ্গিত দিয়েছেন রাই। তিনি বলেছেন, "আইসিসি-র তরফে গ্লাভসে প্রতীক সরানোর অনুরোধ জানানো হয়েছিল। নির্দেশ দেওয়া হয়নি। বিসিসিআইয়ের সিইও রাহুল জহুরি অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের আগেই ইংল্যান্ডে গিয়ে আইসিসি-র আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলবেন।"
আসলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই ধোনি নিজের গ্লাভসে আধাসেনার প্রতীক লাগিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। গ্লাভসে সেনার প্রতীক লাগিয়ে দেশের জওয়ানদের প্রতি এমন শ্রদ্ধার্ঘ্যকে কুর্নিশও করেছে গোটা বিশ্ব। ভারতীয় আধা সেনা তিন কোনা এক বিশেষ ধরনের ছুড়ির ছবি প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করে। এর প্রতীকী নাম ‘বলিদান’। সেই বলিদান-গ্লাভসই এবার দেখা গিয়েছিল বিশ্বকাপে। সৌজন্যে মাহি। বুধবারে ম্যাচ চলাকালীন সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার ফেলুকাওয়ে-কে স্ট্যাম্পিং করার সময়ে ঘটনাটি নজরে আসে ভক্তদের।
তারপরেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার পরে আইসিসি-র জেনারেল ম্যানেজার ক্লেয়ার ফার্লং জানিয়েছিলেন, উইকেটকিপারের গ্লাভসে প্রস্তুতকারক সংস্থার লোগো থাকতে পারে। তাই ধোনি-র গ্লাভসে বলিদান-এর প্রতীকে নিয়মভঙ্গ করেছেন তিনি। তবে এদিন তিনি জানিয়েছেন, "বিসিসিআইয়ের অনুরোধ গ্রাহ্য হবে কিনা, তা একমাত্র আইসিসি-ই ঠিক করবে।"
ঘটনাচক্রে, ধোনির পাশে বিসিসিআইয়ের মতোই দাঁড়িয়েছেন আপামর ভারতীয় সমর্থককুল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ধোনির গ্লাভস বিতর্কে 'ধোনিকিপদ্যগ্লাভস' হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ডিং হয়ে গিয়েছে। অনেকেই বলছেন, ধোনির গ্লাভস থেকে বলিদান-প্রতীক সরানো হলে, ইংল্যান্ডের জার্সি থেকে 'থ্রি লায়ন্স' লোগোও সরিয়ে দেওয়া উচিত। যা অপশাসনের প্রতীক। অনেকেই আবার আইসিসি-কে স্মরণ করে দিয়েছেন, ধোনির গ্লাভসের জন্য সময় খরচ না করে আইসিসি-র উচিত ভাল মানের আম্পায়ারের দিকে নজর দেওয়া।
সবমিলিয়ে, ধোনিকে নিয়ে আইসিসি বনাম বিসিসিআই দ্বৈরথে জয়ী কে হয়, তার ফয়সালা কী হবে, সেদিকেই তাকিয়ে সবাই।
Read the full story in English