ভারতের পেস আক্রমণে ফালাফালা হয়ে গিয়েছে ইংল্যান্ড। শামি, বুমরার পেস, সুইং আছড়ে ফেলেছে ইংরেজদের হেভিওয়েট ব্যাটিং লাইনআপকে। আর লখনৌয়ে বল হাতে শামি-বুমরার আগুনে বোলিং দেখার পর খুল্লামখুল্লা প্রশংসা করে বসলেন স্বয়ং মিসবাহ উল হক, ওয়াসিম আক্রমরা। আক্রম তো সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, বুমরা একজন কমপ্লিট বোলার।
এ স্পোর্টস-এ এক প্যানেল ডিসকাশানে পাক কিংবদন্তি বলেছেন, "এই মুহূর্তে ও বিশ্বের সেরা বোলার। বলের ওপর কন্ট্রোল হোক বা পেস, বৈচিত্র্য- বুমরা একজন পরিপূর্ণ বোলার। এই পিচে যেভাবে বলের মুভমেন্ট আদায় করে নিল, সেই সঙ্গে পেস, ক্যারি, ফলো থ্রু করে গেল ও যে একজন কমপ্লিট বোলার, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।
আক্রম সেই সঙ্গে জানাচ্ছেন, কেন বুমরা ব্যাটসম্যানদের কাছে ত্রাস। বলতে কার্পণ্য করছেন না যে তাঁর থেকেও বুমরার বল কন্ট্রোল ভাল। "এরাউন্ড দ্য উইকেট থেকে বুমরা যখন কোনও বাঁ-হাতি ব্যাটারকে বল করে, তখন সিমকে হিট করার চেষ্টা করে। আর ও যখন ক্রিজের ওয়াইড প্রান্ত ব্যবহার করে বল করে ব্যাটসম্যানের মনে ধারণা হয়েই যায় হয়ত ইনকামিং বল ফেস করতে হবে। এই কৌনিক বিভ্রম তৈরি করাই ওঁর উদ্দেশ্য। আর বল পিচে হিট করার পর ভিতরে না ঢুকে বাইরের দিকে মুভ করে। বেশিরভাগ সময়ই এতে ব্যাটাররা বিট হয়ে যায়।"
"আমি যখন ডান হাতি ব্যাটারদের ক্ষেত্রে নতুন বলে আউটসুইং করার চেষ্টা করতাম, অনেক সময়েই বল কন্ট্রোল করতে পারতাম না। তবে নতুন বলে বুমরার কন্ট্রোল আমার থেকে ভালো। নতুন বলে যে লেন্থে ও বল করে যায়, তাতে ব্যাটারদের মনে অনিশ্চিয়তা তৈরি হয়।"
পাকিস্তানি বোলারদের বুমরার কাছ থেকে শেখার পরামর্শক দিয়েছেন আক্রম। বলেছেন, "কেন বুমরা পাক পেসারদের থেকেও ভয়ঙ্কর? কারণ ও অনেক টেস্ট খেলে। অন্যদিকে, আমাদের বোলাররা লম্বা ফরম্যাটে কার্যত খেলেই না।" বুমরাকে নিয়ে এক নিশ্বাসে বলে দিয়েছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা পেসার। কিভাবে বুমরাকে থামানো যায়, সেই উপায়ও বাতলে দিয়েছেন মজা করে, "বুমরার ওপর চাপ তৈরি করার একটাই উপায়। ওঁর বোলিং স্পাইক চুরি করে নাও। আর অন্য কোনও উপায়-ই নেই।"
আক্রমের সঙ্গেই বুমরার প্রশংসায় পঞ্চমুখ পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক মিসবাহ উল হক। তিনি বলেছেন, "সুইংয়ের পাশাপাশি ও যে লাইন-লেন্থে বুমরা বল করে যে ব্যাটসম্যানদের কাছে কোনও সুযোগই থাকে না।" বুমরা ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের ঝড়ে পড়া সূত্রপাত করেছিলেন। তবে শামির ওপেনিং স্পেলেই কার্যত কুপোকাত হয় ইংরেজরা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ধর্মশালায় চলতি বিশ্বকাপের প্ৰথম ম্যাচ খেলতে নেমেই পাঁচ উইকেট শিকার করেছিলেন মহম্মদ শামি। তারপর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চার উইকেট।
বুমরার সঙ্গে শামির প্রশংসায় মুখ খুলেছেন আক্রম, "কী দুর্ধর্ষ ওয়ার্ল্ড কাপ যাচ্ছে শামির! স্রেফ দেখার মত, কীভাবে ও পিচে সিম হিট করায়।" মিসবাহ-র সংযোজন, "ব্যাটাররা সুইং ম্যানেজ করতে পারে। রিস্ট পজিশন দেখে সুইং আন্দাজ করা যায়। সুইংয়ের ম্যানেজ করার জন্য ২০ গজের একটা দূরত্ব থাকে। তবে সিম মুভমেন্টের ক্ষেত্রে ব্যাটারের ক্ষেত্রে এই দূরত্ব গিয়ে দাঁড়ায় ৫ মিটারের। বল বাউন্স করার সঙ্গেই ব্যাটার বলের লাইনে চলে যায়। তারপর হঠাৎ করেই সিম মুভমেন্ট চমকে দেয় ব্যাটসম্যানকে। প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য খুব কম সময় পাওয়া যায়। ব্যাটের যে কোনও কানায় লাগার সম্ভাবনা থাকে। আর পিচে বল হিট করার পর গতি দ্বিগুন বেড়ে যায়।"