ভারত: ২৩৭/৩
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২২১/৩
লক্ষ্য ছিল পাহাড়প্রমাণ, ২৩৮। টি২০-র ইতিহাসে যা চতুর্থ সর্বোচ্চ স্কোর। সেই পাহাড় ডিঙিয়ে জয় পেতে হলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে যে রেকর্ড গড়তে হবে, তা জানাই ছিল। তবে আপ্রাণ চেষ্টা করেও গুয়াহাটিতে ২০ ওভারে ২২১ রানের বেশি তুলতে পারল না প্রোটিয়াজরা। ভারতের ২৩৭ রানের জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস খতম করল ২৩৭/৩-এ। রান বন্যার ম্যাচে ভারত ১৬ রানে জিতে সিরিজ দখল করে ফেলল।
রাহুল-সূর্যকুমারদের ব্যাটে ঝড় ওঠার পর পাল্টা এসেছিল ডিকক (৪৮ বলে ৬৯), ডেভিড মিলারদের (৪৭ বলে ১০৬) ব্যাটেও। তবে শেষমেশ শেষরক্ষা করতে পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা। রান চেজ করতে নেমে শেষ ওভারে জোড়া ছক্কা হাঁকিয়ে মাত্র ৪৬ বলে শতরানও করে গেলেন মিলার। তবে ভারতের স্কোর এতটাই বেশি ছিল যে সীমানা পেরোতে পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা।
পুরো ভারতের ব্যাটিং একসঙ্গে ক্লিক করে গেলে কী হয়, সেটা রবিবার গুয়াহাটিতে টের পেল দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাটিং বিস্ফোরণ ঘটিয়ে রানের আতসবাজি ধরিয়ে গেলেন কেএল রাহুল এবং সূর্যকুমার যাদব। প্ৰথমে ব্যাট করতে নেমে ভারত সম্মিলিত ব্যাটিং-বাজিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে স্কোরবোর্ডে ২৩৭ তুলেছিল।
রানের ফোয়ারার সূচনা করে গিয়েছিলেন কেএল রাহুল ২৮ বলে ৫৭ করে। তারপরেই সৌরঝড়। যে ঝড়ে স্রেফ নুইয়ে গেল প্রোটিয়াজদের বোলিং। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অধুনা ৩৬০ ডিগ্রি সূর্যকুমার যাদব ২২ বলে ৬১ রানের টর্নেডো উপহার দিয়ে গেলেন গুয়াহাটির বর্ষাপারে5 স্টেডিয়ামে। রানের এই মহোৎসবে যোগ দেন বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা এবং দীনেশ কার্তিকও।
প্ৰথম থেকেই ভারতের দুই ওপেনার ব্যাকফুটে ঠেলে দেয় প্রোটিয়াজ বোলারদের। প্ৰথম ওভারেই কাগিসো রাবাদাকে সংহারের মাধ্যমে বিরাট রানের রিংটোন সেট করে দেন কেএল রাহুল। তারপরে ওয়েন পার্নেল হোক বা কেশব মহারাজ, লুঙ্গি এনগিদি কেউই ভারতীয় ব্যাটিংয়ে লাগাম পড়াতে পারেননি। পাওয়ার প্লে-তেই রোহিত-রাহুল জুটিতে স্কোরবোর্ডে ৫৭/০ তুলে দিয়েছিল।
পাওয়ার প্লে-র পরেও দক্ষিণ আফ্রিকান বোলাররা বিন্দুমাত্র স্বস্তিতে থাকতে পারেননি। নবম ওভারে এনরিখ নর্জের ওভারে রোহিত-রাহুল মিলে তোলেন ২১ রান। বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকা ওপেনিং জুটিতে ভাঙন ধরান কেশব মহারাজ। স্লগ সুইপ করতে গিয়ে কেশব মহারাজের বলে উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসেন রোহিত।
অন্যদিকে বিধ্বংসী মেজাজে রাহুল নিজের হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মাত্র ২৪ বলে। আইডেন মারক্রামকে সপাটে ছক্কা হাঁকিয়ে। ঠিক তারপরের ওভারেই কেশব মহারাজেরই শিকার হয়ে ফেরেন কেএল।
রাহুল-রোহিত ঝড়ের পরে ইনিংসের শেষদিকে স্রেফ সূর্যকুমারের ব্যাট হাতে তান্ডব। নিজের ইনিংসের প্ৰথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সূচনা করেন মুম্বইকর। তারপর রাবাদা হোক বা পার্নেল- সূর্যকুমারের ব্যাটিং বিক্রমের কাছে স্রেফ খড়কুটোর মত উড়ে যায় প্রোটিয়াজদের যাবতীয় প্রচেষ্টা। পার্নেলের নো বলে ছক্কা হাঁকিয়ে সূর্যকুমার মাত্র ১৮ বলে ফিফটি হাঁকিয়ে যান।
আরও পড়ুন: প্রকাশ্যেই ছেলেকে রগড়ে দিলেন শাহ, ভ্যাবাচ্যাকা বোর্ড সচিব জয়! রইল ভিডিও
রানের ভোজে যোগ দেন কোহলিও। দুজনে মিলে মাত্র ৪১ বলে সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ গড়ে যান। তবে শতরানের পার্টনারশিপ হওয়ার পরেই সূর্যকুমার আউট হয়ে যান। শেষ ওভারের কোহলির জোড়া বাউন্ডারির পাশাপাশি দীনেশ কার্তিক একটা বাউন্ডারি এবং জোড়া ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ফিনিশিং টাচ দেন।
বিশাল রান তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই তেম্বা বাভুমা, রিলি রসৌকে ফিরিয়ে দেওয়ার পরে ম্যাচ কার্যত একপেশে হয়ে গিয়েছিল। তবে আইডেন মারক্রাম, কুইন্টন ডিকক এবং ডেভিড মিলারের ব্যাট। মারক্রাম ১৯ বলে ৩৩ রানের ঝড় তুলে ফেরত যাওয়ার পরে দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রাণপনে টানলেন ডেভিড মিলার এবং ডিকক। চতুর্থ উইকেটে ১৭৪ রানের ম্যারাথন পার্টনারশিপও গড়ে গেলেন দুই তারকা। তবে জয়ের কাজে তা লাগল না, এই যা!