Rohit Sharma Shubman Gill Run Out: আফগানিস্তানকে প্রবল কুয়াশা, ঠান্ডার মধ্যেই মোহালিতে হারিয়েছে ভারত। কোনও ঘাম ঝরাতে হয়নি টিম ইন্ডিয়াকে। তবে সেই ম্যাচেই ঘটে গিয়েছে অনভিপ্রেত বিতর্কিত ঘটনা। রোহিতের (Rohit Sharma) রান আউটকে কেন্দ্র করে হঠাৎই বেঁধে গিয়েছে বেনজির বিতর্ক। যে বিতর্কের রেশ আছড়ে পড়ছে ম্যাচের শেষেও (Rohit Sharma run out)।
ভারতের রান চেজ করার সময়ে প্ৰথম ওভারের দ্বিতীয় বলের ঘটনা। ফজলহক ফারুখির ওভার পিচড বল রোহিত মিড অফে খেলেন। সেই শট প্রবল ক্ষিপ্রতায় বাঁচিয়ে দেন কভারে ফিল্ডিং করা ইব্রাহিম জাদরান। রোহিত রানের জন্য ক্রিজ ছেড়ে দিলেও শুভমান গিলকে দেখা যায় রোহিতের রানের কল অগ্রাহ্য করে বলের দিকে দৃষ্টি নিবন্ধ রাখতে। এরপর দুজনে একই প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা এবং রোহিতের রান আউট হয়ে যাওয়া। রোহিত রানের জন্য কল করলেও দলের নেতাকেই ভরসা রাখতে পারেননি গিল (Shubman Gill)। বরং ক্রিজ না ছেড়ে বলের দিকে নজর দিতে গিয়ে ক্যাপ্টেনকেই রানআউট করে বসেন।
দলের তরুণ তুর্কির এই কাণ্ডে হতাশায় মাঠেই শুভমানকে একহাত নেন রোহিত। বাছা বাছা শব্দবন্ধনী প্রয়োগ করেন মাঠ ছাড়ার সময়। সেই 'ভাষণ' যে খুব মধুর ছিল না, তা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুন: এরকমটা হতেই পারে… গিলকে মাঠেই ধুয়ে দেওয়ার পর ফের বিস্ফোরক রোহিত! ঠিক না ভুল করলেন
এই ঘটনার পরেই উত্তাল হয়ে ওঠে ক্রিকেট দুনিয়া। দলের তরুণ তারকাকে শাসিয়ে রোহিত ভুল করলেন নাকি রোহিতকে অগ্রাহ্য করে আসল ভুল করলেন শুভমান- এই আলোচনা চালু হয়ে যায়।
আর এই বিতর্কে রোহিতের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন ধারাভাষ্যকার সাইমন ডুল। কিউই তারকা কমেন্ট্রি করার সময় সাফ বলে দেন, "শিবম দুবে কিন্তু গোটা ম্যাচেই ব্যাট করার সময়ে অন্য ব্যাটারের কথা শুনছিল। পার্টনারশিপে ব্যাট করাটা পুরোটাই ভরসার ব্যাপার। কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার না করা পর্যন্ত তাঁকে বিশ্বাস করতে হয়। শুভমান গিলের উচিত ছিল রোহিত শর্মাকে সর্বাগ্রে বিশ্বাস করা। ওঁর কলে সাড়া দিয়ে রান নেওয়া উচিত ছিল। বল কোথায় গিয়েছে, তা মোটেই ঘুরে দেখা উচিত হয়নি গিলের। রোহিত কিন্তু সহজেই রান সমাপ্ত করে ফেলেছিল। এখানে সমস্যা এটাই।"
"রোহিত যখন রান নেওয়ার জন্য কল করেছে, তাতে গিলের উচিত ছিল সাড়া দেওয়া। রোহিত কী বলেছে পরে, সেটা জানি না। তবে সেটা মোটেই মধুর বচন ছিল না। তবে রোহিত একদম ঠিক ছিল।"
সাইমন ডুলের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত হন সহ ধারাভাষ্যকার দীপ দাশগুপ্ত। বাংলার প্রাক্তন তারকা জানিয়েছেন, "বল একবার গিলকে পেরিয়ে যাওয়ার পর পার্টনারকে ও ভরসা করতে পারত। বলের দিকে অভাবে তাকানোই যায়না। এটাই মোদ্দা কথা। পার্টনারশিপে এই বিষয়টিই জরুরি। দীর্ঘদিন খেলে এই বিশ্বাস অর্জন করতে হয়। বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটলে পার্টনার ভরসা করা ছেড়ে দেবে। বিশ্ব ক্রিকেটে বেশ কয়েকজন ব্যাটার রয়েছেন যাঁদের মোটেই পার্টনাররা রান নেওয়ার সময় বিশ্বাস করেন না।"
লক্ষ্মণ শিবরামকৃষ্ণণ আবার বলেছেন, "রানিং বিটুইন দ্যা উইকেটস-এর সময় দুটো বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। একটা হল পার্টনারকে বিশ্বাস করা। দ্বিতীয় বিষয় হল, শট হাঁকানোর পর বলের গতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পার্টনার রান সম্পূর্ণ করতে পারবে কিনা, তা আঁচ করে নেওয়া। এটা স্রেফ নিজের ফিটনেস মাপা নয়, পার্টনার রান নিতে স্বচ্ছন্দ কিনা, সেটাও আগাম বুঝতে পারা।"
আরও পড়ুন- আর আদেশ মানা নয়, জয় শাহের বোর্ডের সঙ্গে বিদ্রোহের পথেই ঈশান! বিরাট আপডেট সরাসরি
রোহিতের আউটের পর শুভমান গিল বেশ কিছু মন মাতানো স্ট্রোক খেলে নিজের দোষ পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে যান। তবে তিনিও শেষমেশ ১২ বলে ২৩ করে আউট হয়ে যান। পাওয়ার প্লে-তেই ভারতকে ২ উইকেট হারাতে হয়।
রোহিত ব্যাট হাতে রানের দেখা না পেলেও জয়ী ক্যাপ্টেন হিসাবেই মাঠ ছেড়েছেন। ১৫৯ রান চেজ করতে নেমে ভারত পাওয়ার প্লেতেই দুই উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল। তবে আফগান বোলাররা এর ফায়দা নিতে পারেননি। গতিহীনতায় ভুগতে থাকা আফগান বোলিং আক্রমণ পেরিয়ে ভারতকে জয়ে পৌঁছে দেন শিবম দুবে। শুভমান গিল আউট হয়ে যাওয়ার পর তিলক ভার্মা (২২ বলে ২৬), জিতেশ শর্মা (২০ বলে ৩১) যোগ্য সহায়তা করেন। রিঙ্কু সিং যথারীতি অপরাজিত থাকেন ৯ বলে ১৬ রানের ঝোড়ো ইনিংসে। ছক্কা মেরে উইনিং স্ট্রোক হাঁকান ম্যাচের সেরা শিবম দুবে।