বাংলাদেশ সফরে বিপর্যয় তাড়া করেছে টিম ইন্ডিয়াকে। ভারতের সিরিজ হারের সঙ্গেই বড় ধাক্কা খেল একাধিক তারকা চোট-আঘাতের খপ্পরে পড়ায়। এমনকি রোহিত শর্মাও নতুন করে চোটপ্রাপ্তদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। তৃতীয় ওয়ানডে তো বটেই টেস্ট সিরিজেও সম্ভবত খেলতে পারবেন না তারকা।
তৃতীয় ওয়ানডেতে ছিটকে গিয়েছেন পেসার দীপক চাহার এবং কুলদীপ সেন। হতাশ হয়ে দ্রাবিড় তাই বলে দিয়েছেন, "দলে বেশ কয়েকজনের চোট আঘাতের সমস্যা রয়েছে। যা মোটেই ভাল নয়। পরের ম্যাচে রোহিত, দীপক চাহার এবং কুলদীপ সেন খেলতে পারবে না। কুলদীপ এবং দীপক সিরিজ থেকেই ছিটকে গিয়েছে। রোহিত তো পরের ম্যাচে খেলতে পারবে না। আপাতত মুম্বইয়ে ফিরে যাচ্ছেন রোহিত। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ করে দেখা হবে চোট কতটা গুরুতর। টেস্ট সিরিজের জন্য ও ফিরে আসবে কিনা, আমি নিশ্চিত নই। টেস্ট সিরিজের বিষয়ে বলতে পারব না। তবে পরের ম্যাচে যে ও থাকছে না, তা নিশ্চিত।”
আরও পড়ুন: ক্রিপ্টোর থেকেও দ্রুত গতিতে পড়ছে ভারতীয় ক্রিকেট! রোহিতদের ‘চড়াম চড়াম’ বোমা এবার শেওয়াগের
পিঠে সমস্যা হওয়ায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও খেলতে পারেননি কুলদীপ সেন। তাঁর জায়গায় নামানো হয় উমরান মালিককে। চাহার অন্যদিকে, মাত্র তিন ওভার বল করেই হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। পরে রোহিত এবং চাহার নামলেও মাঠে দুজনের অভাব অনুভূত হয় বাংলাদেশ ব্যাট করার সময়। বিশেষ করে বাংলাদেশ ৬৯/৬ হয়ে যাওয়ার পরেও যখন স্কোর ২৭১ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়।
দলের সিরিজ হারের থেকেও বড় হয়ে দাঁড়াচ্ছে একাধিক চোট-আঘাতের বিষয়। ভারতের দুই প্রিমিয়াম ফাস্ট বোলার মহম্মদ শামি, জসপ্রীত বুমরাও চোটের কারণে বাইরে। শামি ওয়ানডে থেকে ছিটকে গিয়েছেন সিরিজ শুরুর আগেই। টেস্ট সিরিজেও খেলতে পারবেন কিনা, কোনও স্পষ্ট ধারণা নেই এখনও পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: অনেক হয়েছে, আর নয়! বাংলাদেশের কাছে সিরিজ হারতেই কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করছে BCCI
একাধিক তারকা চোট-আঘাতের কবলে পড়ায় বিরক্তি চেপে রাখেননি রোহিত নিজে। পরোক্ষভাবে তিনি নিশানা করছেন এনসিএ-র রিহ্যাব সিস্টেমকে। যে এনসিএ-র ডিরেক্টর আবার ভিভিএস লক্ষ্মণ। সরাসরি বলে দিয়েছেন, "দলের চোট-আঘাত উদ্বেগজনক। এনসিএ টিমের সঙ্গে বসতে হবে। ওঁদের ওয়ার্কলোড নিয়ে নতুন করে পর্যালোচনা করতে হবে। এই বিষয়ে আমাদের নজর দিতেই হবে। হাফ-ফিট প্লেয়াররা এসে জাতীয় দলের জার্সিতে খেলবে, এটা হতে দেওয়া যায় না। দলের প্রতিনিধিত্ব করার মধ্যে সম্মান এবং গর্বের বিষয় জড়িয়ে থাকে। তাই ফিট না হয়েও খেলাটা মোটেই ভালো দেখায় না। এর একদম সঠিক কারণ বের করে সমাধানের ব্যবস্থা করতেই হবে।"
রোহিত কারোর নাম না নিলেও চাহারের চোট নিয়ে ভালোমতই অসন্তোষ রয়েছে টিমের মধ্যে। ফেব্রুয়ারিতে কোয়াড্রিসেপ মাসলে চোট পেয়ে এনসিএ-তে রিহ্যাব করছিলেন। তারপরেই পিঠে চোট পেয়ে পুরো আইপিএল থেকেই ছিটকে যান। এরপরে জিম্বাবোয়ে সফরে ফিরলেও চাহার টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপের আগে শেষ দুই ওয়ানডে খেলতে পারেননি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের চিকিৎসায় ভরসা নেই, অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে মুম্বইয়েই ফিরে আসছেন রক্তাক্ত রোহিত
রোহিত নিজেও চোট-আঘাতে বিপর্যস্ত। ক্যাপ্টেন হওয়ার পরে তিনি নিজে ওয়ার্কলোড ম্যানেজ করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। ২০২০ এবং ২০২১-এ রোহিত কাফ এবং হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের কবলে পড়েছিলেন। তারপরেই রোহিতকে বেছে বেছে সিরিজে খেলানোর পন্থা নিয়েছেন নির্বাচকরা।
রোহিত যদি টেস্ট সিরিজে খেলতে না পারেন, তাহলে নেতা কে, এমন প্রশ্ন এমনিতেই ঘুরপাক খাচ্ছে। কেএল রাহুল এমনিতে ডেপুটি। রোহিত খেলতে না পারলে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা তাঁর-ই। আইপিএলে পাঞ্জাব কিংস এবং লখনৌ সুপার জায়ান্টস দলের নেতৃত্বেও ছিলেন তিনি। তবে রাহুলের ব্যাট হাতে পারফরম্যান্স তাঁর জাতীয় দলের নেতা হওয়ার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দ্বিতীয় ম্যাচে রোহিত শর্মা চোট পেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরে নেতৃত্ব দেন রাহুল। একসময় বাংলাদেশ ৬৯/৬ হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় উমরান মালিকের পেস সামলাতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে আগুন ঝরাতে থাকা উমরানকে সরিয়ে হঠাৎই নেতা রাহুল আক্রমণে আনেন ওয়াশিংটন সুন্দর এবং অক্ষর প্যাটেলকে। এতেই মাঝের ওভারে ম্যাচে ফিরে আসার লাইফ লাইন পেয়ে যায় বাংলাদেশ। ঢাকায় দ্বিতীয় ওয়ানডে কেএল রাহুলের নেতৃত্ব দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।