ইংল্যান্ড: ৩৫৩/১০, ১৪৫/১০
ভারত: ৩০৭/১০, ১৯২/৫
IND vs ENG, 4th Test Match Report: ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন পূরণ হয়নি প্ৰথম ম্যাচেই হায়দরাবাদে টিম ইন্ডিয়া হেরে বসায়। তবে তারপর টানা তিনটে টেস্ট জিতে সিরিজ নিজেদের দখলে করে ফেলল ভারত। ভাইজ্যাগ, রাজকোটের পর এবার রাঁচি- অপ্রতিরোধ্য ভারতীয় দলকে থামাতে পারল না ইংল্যান্ড এবং তাঁদের বহু আলোচিত ট্যাকটিক্স 'বাজবল'।
চতুর্থ ইনিংসে ১৯২ রান চেজ করতে নেমে ভারত তৃতীয় দিনের শেষে রোহিত-শুভমানের ব্যাটে ভর করে ৪০ তুলে ফেলেছিল। বাকি ছিল মাত্র ১৫২ রান। ভারত চতুর্থ দিন মাত্র উইকেট খরচ করে লক্ষ্যে পৌঁছে গেল। দিনের শুরুতে ভারত মসৃণ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল। রোহিত ৫৫ করে ভারতকে জয়ের আরও কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন। তবে পরপর দু-ওভারে হার্টলে এবং বশির যথাক্রমে রোহিত এবং রজত পাতিদারকে হারিয়ে ইংল্যান্ডকে সাময়িকভাবে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিলেন।
লাঞ্চের পর সেই বশিরই সরফরাজ এবং রবীন্দ্র জাদেজাকে ফিরিয়ে ভারতের সামনে চরম টেনশনের প্রহর এনে হাজির হয়েছিলেন। ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ভারতের জয়ের জন্য তখনও ৭০ প্লাস রান দরকার ছিল। তবে শুভমান গিল এবং ধ্রুব জুরেলর মাথা ঠান্ডা রেখে ৭২ রানের পার্টনারশিপে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। হাফসেঞ্চুরি করে অপরাজিত থাকেন গিল। ধ্রুব জুরেল দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৯ রানে আবার-ও নিজের জাত চিনিয়ে দেন।
আরও পড়ুন: BPL তো সার্কাস, বাংলাদেশিদের লেভেল খুব খারাপ! টাইগারদের নিয়েই ‘খিল্লি’ এবার কোচ হাতুরুর
রাঁচিতে প্ৰথম দুই দিনের শেষে জয়ের জন্য এডভান্টেজ ছিল ইংল্যান্ডই। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে টপ অর্ডারে বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলে জো রুটের চওড়া ব্যাটে ভর করে স্কোরবোর্ডে সাড়ে তিনশো প্লাস স্কোর খাড়া করে দিয়েছিল। জবাবে একসময় ভারত একসময় ১৭৭/৭-এ ধসে গিয়েছিল। ভারত ম্যাচে ফেরে কুলদীপ যাদব এবং ধ্রুব জুরেলের অনভিজ্ঞ ব্যাটে। দুজনে দৃঢ়তা দেখিয়ে দ্বিতীয় দিনে অবিচ্ছিন্ন থেকে যান।
তৃতীয় দিনের ফার্স্ট সেশনেও দুজনের প্রতিরোধ গড়া পার্টনারশিপ জারি থাকে। দুজনে মূল্যবান ৭৬ রান যোগ করেন। কুলদীপ মাত্র ২৮ করলেও আল্ট্রা ডিফেন্সিভ টেকনিকে ১৩১ বল হজম করে ইংরেজ শিবিরে হতাশা নিয়ে আসেন। ধ্রুব জুরেল শেষমেশ আউট হলেও তাঁর আগে ম্যাচের মোড় ঘোরানো ৯০ রান করেন। সেঞ্চুরি হাতছাড়া হলেও ম্যাচের রং বদলে দেয় এই ইনিংস।
এরপরে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয় স্পিন আক্রমণের সামনে থই পায়নি ইংল্যান্ড। অশ্বিন একাই পাঁচ উইকেট নিয়ে ভেঙে দেন ইংরেজদের ব্যাটিং। কুলদীপ যোগ্য সহায়তা করে দখল করেন ৪ উইকেট। জ্যাক ক্রলি বাজবলোচিত ভঙ্গিতে ৬০ করলেও বাকিরা নূন্যতম প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি ভারতের কুলদীপ-অশ্বিনের ঘূর্ণির সামনে।
আরও পড়ুন- হিরো’ হতে চাইলেন সরফরাজ, মাঠেই ধমকে প্রাণ বাঁচালেন রোহিত! দেখুন বড় ভিডিও
১৪৫ রানে ইংল্যান্ড গুঁড়িয়ে যাওয়ার পর ভারতের জয় ছিল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। স্রেফ দেখার ছিল সোমবার ভারতীয় ব্যাটিং অঘটনের শিকার হয় কিনা। তা হয়নি। সিরিজ-ও পকেটে পুরতে দেরি হয়নি টিম ইন্ডিয়ার।
ভারতের এই সিরিজ জয় এল কার্যত দ্বিতীয় সারির দল নিয়েই। তারুণ্যের গরম রক্ত ভারতকে সিরিজ জেতাল। চলতি সিরিজেই চার জন তারকার অভিষেক ঘটানো হয়েছে বেনজির পরিস্থিতির মুখে। কোহলি-শামি গোটা সিরিজেই খেলেননি। কেএল রাহুল দ্বিতীয় টেস্টের পরেই চোটের কারণে বাইরে। শ্রেয়স আইয়ার, কেএস ভরত চূড়ান্ত অফফর্মের শিকার হয়ে বাদ পড়েছেন।
জসপ্রীত বুমরা-মহাম্মর সিরাজকে ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের কারণে বেছে বেছে ম্যাচ খেলানো হয়েছে। রজত পাতিদার, সরফরাজ খান, আকাশ দীপ, ধ্রুব জুরেলদের অভিষেক ঘটানো হয়েছে। শুভমান গিল, যশস্বী জয়সওয়াল, মুকেশ কুমারদের ধরলে নতুনদের নিয়ে কোনওরকমে জোড়াতালি দিয়ে সিরিজ খেলতে বাধ্য হয়েছে ভারত। এই নিয়েই ভারতের সিরিজ জিততে অবশ্য সমস্যা হল না। এটাই টিম ইন্ডিয়ার কাছে বাড়তি তৃপ্তির হয়ে থাকছে।