ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে চোয়াল ফেটে গিয়ে রক্তারক্তি কান্ড ঘটেছিল অনিল কুম্বলের। চোয়ালে ব্যান্ডেজ বেঁধে তারপরে মাঠে নেমে বল করার সেই দৃশ্য এখনও ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সাহসী ঘটনা। বেশিদিন আগের নয়, গত সপ্তাহেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো নেশনস লিগের ম্যাচে রক্তারক্তি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন চেক প্রজাতন্ত্রের গোলকিপারের সঙ্গে। তবুও মাঠ ছাড়েননি তিনি।
খেলার মাঠে সাহসীদের এই তালিকায় রবিবারের পরে আরও এক নামের সংযোজন ঘটল- রোহিত শর্মা। মুখ থেকে গলগল করে উঠে এল রক্ত। তবে তিনি ভ্রূক্ষেপ না করেই নেতৃত্ব চালিয়ে গেলেন। দেশকে জয় এনে দিয়েই মাঠ ছাড়লেন। কথায় আছে ক্যাপ্টেন লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট! আক্ষরিক অর্থেই সেই প্রবাদের সার্থক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল রবিবার ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচ।
আরও পড়ুন: মাঠেই ব্যাপক মারামারি পাঠান-জনসনের! কুৎসিত ঘটনায় ছিঃছিঃ-কার, দেখুন কেলেঙ্কারির ভিডিও
ব্যাট হাতে ওপেন করতে নেমে ৪৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে দলের বিরাট ২৩৬ রানে বেশ ভালোরকম অবদান রেখেছিলেন ক্যাপ্টেন কোহলি। ব্যাট হাতে গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে দারুণ সময় কাটালেও ফিল্ডিং করতে নেমে অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর হল না হিটম্যানের।
ঋষভ পন্থের গ্লাভসে বল লেগে সরাসরি আছড়ে পড়েছিল রোহিত শর্মার তলপেটে। এমনিতেই গুয়াহাটির আর্দ্রতায় কাবু ছিলেন মিলার থেকে রোহিত প্রায় প্রত্যেকেই। তবে এমন আবহাওয়ার মধ্যেই হঠাৎ করেই রোহিতের নাক থেকে গলগল করে রক্তপাত হতে থাকে। দক্ষিণ আফ্রিকান ইনিংসের ১২ তম ওভারের ঘটনা।
সেই সময়েই নাক থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত থামাতে তোয়ালে নিতে হয় রোহিতকে। তোয়ালে দিয়ে বারবার নাক মুছতে দেখা যায় তারকাকে। তখনও তিনি অবশ্য মাঠ ছাড়েননি। যথারীতি বোলিং পরিবর্তন থেকে ফিল্ডিং প্লেসমেন্ট চালু রাখেন।
তবে রক্তপাত একদমই বন্ধ না হওয়ায় শেষমেশ দলের মেডিক্যাল টিমের শরণাপন্ন হতে হয় ক্যাপ্টেনকে। রোহিত উঠে যাওয়ার পরে শাহবাজ আহমেদ পরিবর্ত ফিল্ডার হিসাবে মাঠে নামেন। সেই সময়ে নেতৃত্বের দায়িত্ব বর্তায় কেএল রাহুলের ওপর। অবশ্য বেশিক্ষণ বাইরে থাকতে হয়নি রোহিতকে। ১৫ তম ওভারে হর্শল প্যাটেলের ওভারের সময়েই পুনরায় মাঠে প্রবেশ করেন তারকা।
আরও পড়ুন: Video, নিজের ফিফটি নয়, দলই আগে! কার্তিককে ফিরিয়ে মাঠেই বেনজির সিদ্ধান্ত কোহলির
শারীরিক প্রতিকূলতাকে সঙ্গে নিয়েই যেভাবে ক্যাপ্টেন রোহিত ভারতকে নেতৃত্ব দিলেন তাকে কুর্নিশ করছেন ক্রিকেট মহল। ভারতও রোহিতের এই আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়ে যেন সিরিজ দখল করে প্রতিদান দিল। ভারত সূর্যকুমার, কেএল রাহুল, বিরাট কোহলিদের ব্যাটিং তান্ডবে ভর করে স্কোরবোর্ডে টি২০ ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ রান খাড়া করেছিল।
২৩৭ রান তুলেও ভারতকে অবশ্য স্বস্তি দিলেন না ডেভিড মিলার। কুইন্টন ডিককের সঙ্গে ১৭৪ রানের পার্টনারশিপ গড়ে মিলার কার্যত একার হাতে পাহাড়প্রমাণ রান টপকে দলকে স্মরণীয় জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছিলেন। নিজে মাত্র ৪৬ বলে সেঞ্চুরি করে দলকে জয়ের দোরগোড়ায় এনে দেন। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা স্কোরবোর্ডে ২২৩-এর বেশি তুলতে পারেনি।