জয় দিয়ে ক্যারিবিয়ান সফরে ওয়ানডে অভিযান শুরু করল টিম ইন্ডিয়া। প্ৰথম ওয়ানডেতে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ৩ রানে ভারত হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। শুভমান গিল (৫৩ বলে ৬৪) এবং শিখর ধাওয়ান (৯৯ বলে ৯৭) ১১৯ রানের পার্টনারশিপে দলকে দারুণ শুরু উপহার দিয়েছিলেন। তারপরে ক্যারিবীয় বোলাররা দারুণ প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে ভারতকে ৩০৮/৭-এ আটকে রেখেছিল।
কুইন্স পার্ক ওভালে রান তাড়া করে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ১৫ রান। তবে আগ্রাসী মেজাজে থাকা রোমারিও শেফার্ড (২৫ বলে ৩৮) মহম্মদ সিরাজের ওভারে ১২-র বেশি তুলতে পারেননি। টপ অর্ডারে কাইল মায়ের্স (৬৮ বলে ৭৫) এবং সামারা ব্রুকস (৬১ বলে ৪৬) ১১৭ রানের পার্টনারশিপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আশা জাগিয়ে তুলেছিলেন। এরপরে ব্রেন্ডন কিং (৬৬ বলে ৫৪) ম্যাচ প্রায় জিতিয়ে দিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। তবে শেষ পর্যন্ত স্কোরবোর্ডে ৩০৫-এর বেশি তুলতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
রান ডিফেন্ড করতে নেমে শার্দূল ঠাকুর ইনিংসের শুরুতেই জোড়া শিকার করেছিলেন। ক্রিজে সেট হয়ে যাওয়া সামারা ব্রুকস এবং কাইল মায়ের্স দুজনকেই আউট করেন শার্দূল। ক্যাপ্টেন নিকোলাস পুরান (২৬ বলে ২৫) মারমুখী মেজাজে শুরু করেন। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণকে দুটো সপাটে ছক্কা হাঁকান।
রান চেজ করার সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে একটা পর্যায়ে শেষ ৯০ বলে দরকার ছিল মাত্র ৬০ রান। ব্রেন্ডন কিং-আকিল হোসেন (৩২ বলে ৩২) ৫৬ রানের পার্টনারশিপে দলকে চালকের আসনে বসিয়ে দিয়েছিলেন। তবে একদম সঠিক সময়ে জুজবেন্দ্র চাহাল এই জুটিতে ভাঙন ঘটিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাজ আরও কঠিন করে দেন। রোমারিও শেফার্ড এবং আকিল হোসেন তবু শেষদিকে লড়াই ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।
২০২০-এর ডিসেম্বরের পর এই প্ৰথমবার ওয়ানডে খেলতে নেমেছিলেন শুভমান গিল। বেশ কিছু চোখ ধাঁধানো স্ট্রোক নেন তিনি। ধাওয়ান ধীরে শুরু করলেও পরে গিয়ার চেঞ্জ করেন। সম্প্রতি শর্ট বলে বারবার সমস্যায় পড়েছেন শ্রেয়স আইয়ার। তিনিও এদিন ৫৭ বলে ৫৪ করে যান। গিল-ধাওয়ানের মারকাটারি শুরুর পরে একসময় মনে হয়েছিল ভারত ৩৫০+ স্কোর খাড়া করবে। তবে ভারতীয় ইনিংসের ১৮তম ওভারে আচমকা রান আউট হয়ে যান গিল।
সেরা ছন্দে থাকলে দৃষ্টিনন্দন কারী স্ট্রোকের বাহার দেখা যায় গিলের ব্যাটে। এদিনও গিল আলজারি জোসেফকে দুর্ধর্ষ হুকে ছক্কা হাঁকালেন। তারপরে ব্যাকফুটে পাঞ্চ করে বাউন্ডারিও হাঁকাতে দেখা গেল। গিলের কভার ড্রাইভেও জ্বলে উঠছিল রংমশাল।
সবমিলিয়ে গিল নিজের ইনিংসে হাফডজন বাউন্ডারি, একজোড়া ছক্কা হাঁকান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্যাপ্টেন নিকোলাস পুরানের ডিরেক্ট থ্রো শেষমেশ গিলকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে দেয়। এই নিয়ে কেরিয়ারের চতুর্থ একদিনের ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ফেললেন গিল। এখন কেবলমাত্র ওয়ানডেতেই ধাওয়ানকে জাতীয় দলে জায়গা দেওয়া হয়। ইংল্যান্ডে সেভাবে রানের মধ্যে না থাকলেও গিলের সঙ্গে ভালোভাবেই ইনিংস টানছিলেন। শেষ পর্যন্ত তারকা ব্যাটসম্যান নিজের ইনিংসে ১০টা বাউন্ডারি এবং তিনটে ছক্কা হাঁকান।
ভারত যখন মনে হয়েছিল রানের পাহাড় তুলতে কুইন্স পার্ক ওভালে। সেই সময়ে ভারতের মিডল অর্ডার ফের একবার বিপর্যয়ের মুখে পরে। ২১৩/১ থেকে ২৫২/৫ হয়ে গিয়েছিল একটা সময়ে। সুযোগ পেয়েও রান করতে ব্যর্থ সঞ্জু স্যামসন ()। লুজ শট খেলে আউট হয়ে যান সূর্যকুমার যাদবও (১৩)। ষষ্ঠ উইকেটে দীপক হুডা (২৭) এবং অক্ষর প্যাটেল (২১) ৪২ রানের পার্টনারশিপে দলকে উদ্ধার করেছিলেন।