/indian-express-bangla/media/media_files/2025/01/14/ibW892G2SYxqO2WvnK4F.jpg)
PV Sindhu: পিভি সিন্ধু। (ছবি- ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস/পিটিআই)
PV Sindhu, with new coach Irwansyah: তাঁর মধ্যে পদক জেতার খিদে আছে। নতুন কোচ ইরওয়ানস্যাহ-র অধীনে প্রশিক্ষণ শুরু করার কথা জানিয়ে এমনটাই দাবি করলেন ব্যাডমিন্টন তারকা পিভি সিন্ধু। ইন্দোনেশিয়া পুরুষ দলের প্রাক্তন কোচ ইরওয়ানস্যাহ। তিনি এখন ভারতে। তাঁর কাছেই প্রশিক্ষণ নেবেন সিন্ধু। ২৯ বছর বয়সি শাটলার সম্প্রতি বিয়ে করেছেন। কিন্তু, তাই বলে খেলার ওপর থেকে তিনি ফোকাস হারাতে নারাজ। আর, সেই কারণেই ইন্ডিয়া ওপেনের প্রাক্-টুর্নামেন্ট প্রেস ইভেন্টে সিন্ধু বলেছেন, 'সবকিছুই নতুন।' যে খেলা তাঁকে এতকিছু দিয়েছে, সেখানে আরও ভালো কিছু করার জন্য তিনি নতুন করে সব শুরু করেছেন। লক্ষ্য, অলিম্পিকে পদক জয়। আর, এই জন্যই নতুন কোচের অধীনে তিনি প্রশিক্ষণ শুরু করেছেন বলেও জানিয়েছেন সিন্ধু।
সিন্ধুর নতুন কোচ ইরওয়ানস্যাহ, তারকা শাটলার জোনাটান ক্রিস্টি ও অ্যান্থনি গিন্টিং-কে তুলে এনেছেন। বর্তমানে এই দুই খেলোয়াড়, বিশ্বে ব্যাডমিন্টন তারকাদের পয়েন্টের বিচারে দু'নম্বর স্থানে রয়েছেন। সিন্ধু এবং ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (বিএআই)-এর সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় মিশ্র নিশ্চিত করেছেন যে ইরওয়ানস্যাহ ভারতের মহিলা দলকে কোচিং করাবেন।
এই ব্যাপারে সোমবার দিল্লিতে বাছাই কিছু সংবাদমাধ্যমকে সিন্ধু বলেন, 'আমি ইন্দোনেশিয়ার ইরওয়ানস্যাহর কাছেই বেঙ্গালুরুতে প্রশিক্ষণ নেব। তিনি এখন জাতীয় মহিলা দলের একমাত্র কোচ। বিয়ের পর আমি জানুয়ারিতেই অনুশীলনে ফিরেছি। সেটাও প্রায় একসপ্তাহ হয়ে গেল। ইরওয়ানস্যাহ ইন্ডিয়ান ওপেনের জন্য আমাকে ট্রেনিং দিচ্ছেন। আমি শুনেছি যে উনি গিন্টিং ও ক্রিস্টিকে তৈরি করেছেন। আশাকরি, আমাকেও গড়ে তুলবেন। তিনি যেভাবে ব্যাডমিন্টন নিয়ে ভাবেন, কল্পনা করা যায় না। আমি ওঁর প্রশিক্ষণ নেওয়ার অপেক্ষায় আছি।
গত কয়েক বছর ধরে সিন্ধুর কোচিংয়ে নানা পরিবর্তন এসেছে। কোরিয়ার পার্ক তাই সাং-এর পর তিনি বেশ কয়েকজন কোচের কাছে ব্যক্তিগত প্রশিক্ষণ নিয়ছেন।। মালয়েশিয়ার মুহাম্মদ হাফিজ হাশিম, ইন্দোনেশিয়ার আগুস দ্বি সান্তোসো, কোরিয়ার লি হিউন-ইল, এবং সম্প্রতি ভারতীয় প্রাক্তন শাটলার বিমল কুমার, প্রকাশ পাড়ুকোন ও অনুপ শ্রীধরের কাছে সিন্ধু প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তার সঙ্গে এবারের পার্থক্য হল, ইরওয়ানসিয়াহ গোটা দলকে প্রশিক্ষণ দেবেন। অবশ্যই সিন্ধু সেই দলের প্রধান সম্পদ হিসেবে। নতুন কোচের ব্যাপারে সিন্ধু বলেছেন, 'আমি ওঁর কোচিংয়ের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। একজন কোচ এবং একজন ক্রীড়াবিদের পরস্পরকে বোঝাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বেশ কয়েকটি সেশনে আমরা ওঁর কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ পাব। আর, আমি সেই সুযোগ পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।'
ইরওয়ানস্যাহ-র পাশাপাশি ট্যান কিম হারেরও নিয়োগ নিশ্চিত করে বিএআই স্পষ্ট জানিয়েছে যে তিনি জাতীয় দলের ডাবলস কোচ হিসেবে আসছেন। এই ব্যাপারে বিএআই বলেছে, ‘আমাদের ব্যাডমিন্টন তারকাদের উন্নতি অব্যাহত রাখতে এবং খেলোয়াড়দের একটি বড় দলকে প্রশিক্ষণ দিতে আর ভবিষ্যতের জন্য প্রতিভার উঠে আসা অব্যাহত রাখতে সাহায্য করার জন্যই ট্যান আসছেন।’
বিএআই-এর সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় মিশ্র দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'বিএআই, সাই এবং ক্রীড়া মন্ত্রক যৌথভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে যাতে ব্যক্তিগত কোচ নিয়োগের দরকার না হয়। যে বিদেশি কোচরা আসবেন, তাঁরা খেলোয়াড়দের একটি দলের অগ্রগতিতে নজর দেবেন। সিন্ধু নিঃসন্দেহে জাতীয় সম্পদ। তবে সর্বদা প্রশ্ন ওঠে, তাঁর পরে জাতীয় তারকা কে? তাই অন্তত ৪-৫ জন প্রতিভাবান জুনিয়র মেয়েদের একটি দল সিন্ধুর সঙ্গে প্রশিক্ষণ নেবে। যাতে তাঁরা একজন কিংবদন্তির সঙ্গে খেলে আত্মবিশ্বাস অর্জন করতে পারে। এছাড়াও, আমাদের এই দলের সঙ্গে কয়েকজন জুনিয়র কোচও থাকবেন। তাঁরাও ইন্দোনেশিয়ার কোচের কাছ থেকে শিখতে পারেন। আমরা চাই ইরওয়ানসিয়ারের মূল মনোযোগ সিন্ধুর ওপর থাকুক। তবে, এর সঙ্গে আমরা চাই যে নতুন প্রতিভারও বিকাশ ঘটুক।'
প্যারিসের পর থেকে একটা প্রশ্ন বারবার সিন্ধুকে তাড়া করছে, তা হল- ‘তুমি কি লস অ্যাঞ্জেলস ২০২৮ নিয়ে ভাবছ?’ কিন্তু এই মুহূর্তে, সিন্ধু বলেছেন, 'আমার প্রাথমিক লক্ষ্য হল চোট-আঘাত এড়িয়ে চলা। অলিম্পিকের পর মানুষ জিজ্ঞাসা করছে যে আমি এরপর কী করব? অথবা আমি পরবর্তী অলিম্পিকে খেলছি কি না। কিন্তু, আমার কাছে আঘাতমুক্ত থাকাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর, সেটাই আমার প্রাথমিক লক্ষ্য। আমি সাবধানে টুর্নামেন্ট বেছে খেলব।'
তার কি অপূর্ণ ইচ্ছা আছে? দুইবারের অলিম্পিক পদকজয়ী, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের স্বর্ণপদকজয়ী সিন্ধু বলেছেন যে তাঁর ভিতরের আগুন এখনও নেভেনি। সিন্ধুর কথায়, 'আমি মনে করি যে আমাকে আরও অনেক কিছু অর্জন করতে হবে। আমার মধ্যে সেই আগুন আছে। এটা কেবল সময় আর ছন্দের ব্যাপার। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে আরেকটি পদক এমন কিছু যা আমি অবশ্যই অর্জন করতে চাই। অল ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়নশিপ জিততে চাই। পাশাপাশি, ওয়ার্ল্ড ট্যুর ফাইনালের মতো বড় টুর্নামেন্টও জিততে চাই।'
আরও পড়ুন- ঋদ্ধিমান সাহার মামলা লড়েছিলেন, বিসিসিআইয়ে এবার তিনিই বড় পদে, কয়েক দশক ধরে পরিবার মদ ব্যবসায় যুক্ত
সিন্ধু মঙ্গলবার চাইনিজ তাইপেইয়ের সুং শুও ইউনের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযান শুরু করবেন। সম্ভবত কোয়ার্টার ফাইনালে গ্রেগোরিয়া মারিস্কা টুনজুংয়ের মুখোমুখি হবেন। আর যদি তাঁকে হারাতে পারেন তো সেমিফাইনালে ব্যাডমিন্টনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আসবে। তিনি হলেন- আন সে ইয়ং। সিন্ধুর কেরিয়ারে কী আছে, ২০২৫-এ তাঁর জন্য কী অপেক্ষা করছে, তার প্রাথমিক ইঙ্গিত আমরা এই টুর্নামেন্টেই পাব।