/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2021/03/ExkTABPU8AMxNqo_copy_1200x676_1.jpeg)
ভারত: ৩২৯/১০
ইংল্যান্ড: ৩২২/৯
রুদ্ধশ্বাস, রোমহর্ষক! ইংল্যান্ড বনাম ভারতের সিরিজ নির্ণায়ক শেষ ওয়ানডে ম্যাচ এমনই টানটান হয়ে থাকলে। ইংল্যান্ডকে ৭ রানে হারিয়ে টেস্ট, টি২০-র পর ওয়ানডে সিরিজেও জয়ী হল ভারত। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারত ৩২৯ তুলেছিল। পুরো ৫০ ওভার খেলার আগেই অলআউট হয়ে যায়। সেখান থেকে রান চেজ করতে নেমে ইংল্যান্ড থামল ৩২২/৯-এ।
কার্যত হেরে বসা ম্যাচেই একা হাতে ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন স্যাম কুরান। ৮ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ৮৩ বলে ৯৫ রানের ইনিংসে একাই ইংল্যান্ডকে অবিশ্বাস্যভাবে জিতিয়ে দিচ্ছিলেন। তবে শেষপর্যন্ত আর পারেননি।
ভারতের বিশাল রান তাড়া করতে নেমে সেঞ্চুরি করার আগেই ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার ভেঙে পড়েছিল। একে একে ফিরে গিয়েছিলেন জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, বেন স্টোকস, জস বাটলার।
আরো পড়ুন: গিলক্রিস্ট-ধোনিকেও পেরিয়ে যাবেন পন্থ! ঋষভের আগ্রাসনে মুগ্ধ কিংবদন্তি
৯৫/৪ থেকে ডেভিড মালান-লিয়াম লিভিংস্টোনের ৬০ রানের পার্টনারশিপেও সেরকম আতঙ্ক সঞ্চার করেনি ভারতের। শার্দুল ঠাকুর দুজনকেই ফিরিয়ে ভারতকে ম্যাচের ঠিকানা কার্যত লিখে দিয়েছিলেন।
That Winning Feeling 👏👏#TeamIndia beat England by 7 runs in the third & final @Paytm #INDvENG ODI and complete a 2-1 series win. 👍👍
Scorecard 👉 https://t.co/wIhEfE5PDR pic.twitter.com/mqfIrwJKQb— BCCI (@BCCI) March 28, 2021
কিন্তু কে জানবে, এরপরেই অপেক্ষা করে আছে টুইস্ট! ১৬৮/৬ থেকে মঈন আলি ফিরে যাওয়ার পর যখন স্কোরবোর্ড ২০০/৭, তখনও ভারত বুঝতে পারেনি এই ম্যাচ প্রবল রক্তচাপ বাড়িয়ে শেষ ওভারে পৌঁছাবে।
স্যাম কুরান যখন খেলতে নেমেছিলেন ম্যাচের ভাগ্য কার্যত নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল। তবে সিএসকেতে ধোনির দলে খেলা ইংরেজ অলরাউন্ডার ভারতের কাছে হাজির হলেন প্রবল হৃদকম্প নিয়ে। প্রথমে আদিল রশিদের সঙ্গে ৫৭ রানের পার্টনারশিপ, তারপরে মার্ক উডের সঙ্গে একদম শেষদিক পর্যন্ত জুটি বেঁধে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা জয় ছিনিয়ে নিয়েছিলেন প্রায়।
তবে ম্যাচের শেষ লগ্নে মার্ক উডের রান আউট সমস্ত গড়বড় করে দেয়। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৪ রান। নটরাজন সেই ওভারে ৬ রানের বেশি খরচ করেননি।
ভারতের হয়ে যথারীতি বল হাতে দুরন্ত ভুবনেশ্বর কুমার এবং শার্দুল ঠাকুর। শার্দুল এদিন ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ ব্রেকথ্রু সমেত সংগ্রহ করলেন ৪ উইকেট। ভুবনেশ্বরের শিকার দুই ওপেনার সহ মোট ৩ জন।
আরো পড়ুন: ব্যাট হাতে বিরল নজির গড়েন ধোনির উত্তরসূরি! তাঁকেই কোচ করে চমকে দিল ক্যাপিটালস
তার আগে ভারতের হয়ে ব্যাট হাতে যথারীতি উজ্জ্বল শিখর ধাওয়ান (৬৭), ঋষভ পন্থ (৬৪) এবং হার্দিক পান্ডিয়া (৭৮)।
টসে হেরে ভারত এদিন আবার প্ৰথমে ব্যাট করতে নেমেছিল। আর শুরুতেই ধাওয়ান (৬৭)-রোহিত (৩৭) দুরন্ত সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। যে গতিতে রান তোলা শুরু করেছিলেন দুই তারকা ওপেনার, তাতে ৪০০ রানেরও স্বপ্ন দেখা শুরু করে দল। তবে আচমকাই ছন্দপতন। মাত্র ২ ওভারের ব্যবধানে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে জোরালো ধাক্কা দেন আদিল রশিদ।
১০৩/০ থেকে এরপরেই ভারত স্কোরবোর্ডে ৫৭ রান যোগ করার ফাঁকেই হারায় ৪ উইকেট। দুই ওপেনার রশিদের শিকার হওয়ার পরে ক্যাপ্টেন কোহলিকে (৭) বোল্ড করে দেন মঈন আলি। এর কিছুক্ষণ পরেই লেগ স্টাম্পের ফুলটস বল হাঁকাতে গিয়ে ফাইন লেগে ধরা পড়েন কেএল রাহুল (৭)।
বিপদের মুহূর্তে ভারত এরপরেই ম্যাচে ফেরে হার্দিক পান্ডিয়া (৪৪ বলে ৬৪) এবং ঋষভ পন্থের (৬২ বলে ৭৮) পার্টনারশিপে। দুজনে স্কোরবোর্ডে যোগ করে যান ৯৯ রান। দুজনেই বিশাল রান গড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। তবে স্যাম কুরানের ওভারপিচড বলে জস বাটলারের ক্যাচে পন্থ ফেরার পরেই একপ্রস্থ ধস নামে শেষ দিকে। কিছুক্ষণ পরেই হার্দিক বেন স্টোকসের বলে বোল্ড হয়ে যান। এরপর ক্রুনাল (২৫) এবং শার্দুল ঠাকুরের (৩০) ব্যাটে ভারতের ৩০০ পেরোনো নিশ্চিত হয়।
এদিন ভারত সাম্প্রতিককালের সবথেকে খারাপ ফিল্ডিংয়ের নিদর্শন রাখে। ৪টে ক্যাচ মিস করে ভারত। এর মধ্যে হার্দিক একাই জোড়া ক্যাচ মিসের বিষয়ে দায়ী। ম্যাচের মোড় কার্যত ঘুরিয়ে দেওয়া স্যাম কুরানেরও ক্যাচ মিস করেন হার্দিক। সিরিজ জিতলেও এই বিষয়ে নির্ঘাত ড্রেসিংরুমে আলোচনা হতে চলেছে।
ভারতীয় প্রথম একাদশ:
রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, বিরাট কোহলি, ঋষভ পন্থ, কেএল রাহুল, হার্দিক পান্ডিয়া, ক্রুনাল পান্ডিয়া, ভুবনেশ্বর কুমার, শার্দুল ঠাকুর, টি নটরাজন, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ
ইংল্যান্ড প্রথম একাদশ:
জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, বেন স্টোকস, ডেভিড মালান, জস বাটলার, লিয়াম লিভিংস্টোন, মঈন আলি, স্যাম কুরান, রিস টপলে, আদিল রশিদ
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন