স্মৃতি সতত সুখের নয়। অন্তত কলকাতা নাইট রাইডার্সের কাছে তো নয়ই, প্রতিপক্ষের নাম যদি হয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। গত আইপিএল-এ ইডেনে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে সানরাইজার্সের কাছে ১৪ রানে হেরে ট্রফি জেতার দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছিল শাহরুখ খানের টিম। ব্যাটে-বলে আফগানিস্তানের লেগস্পিনার রশিদ খানের দাপটে স্বপ্নভঙ্গ ঘটেছিল নীল-বেগুনি জার্সির।
সেই সানরাইজার্সের বিরুদ্ধেই আজ বিকেলে ঘরের মাঠে এবারের আইপিএল-অভিযান শুরু করতে চলেছে দীনেশ কার্তিকের টিম। পাল্লা ভারি কাদের দিকে? এ প্রশ্নের উত্তর কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে দেওয়া কঠিন। সোজা কথায়, যে যেদিন ভাল খেলবে, ম্যাচ তার। মাত্র কয়েকটা বলে বা কয়েকটা মারকাটারি স্ট্রোকে যখনতখন বদলে যায় টি-টুয়েন্টি ম্যাচের ভাগ্য। ভবিষৎবাণীর রাস্তায় না গিয়ে বরং আলোচনা করা যাক যুযুধান দুই দলের শক্তি-দুর্বলতা নিয়ে।
We have Lockie Ferguson with us in #Kolkata! He already loves the yellow cabs, and can't wait to hear the fans roar at Eden Gardens! ????#KKRHaiTaiyaar pic.twitter.com/O1X2qabigi
— KolkataKnightRiders (@KKRiders) March 23, 2019
নাইটদের টিম বরাবরের মতোই ব্যালান্সড এবারও। বিশ্বসেরা কোন নাম নেই, কিন্তু ম্যাচের রং বদলে দেওয়ার মতো ক্রিকেটার আছেন একাধিক। সুনীল নারিন-ক্রিস লিনের ওপেনিং জুটি ক্রিজে জমে গেলে ছয় ওভারে ষাট-সত্তর কোন ব্যাপারই নয়। মিডল অর্ডারে শুভমান গিলের মতো দুরন্ত প্রতিভার পাশাপাশি রয়েছেন অভিজ্ঞ রবিন উথাপ্পা এবং অধিনায়ক কার্তিক স্বয়ং, যাঁর মতো ফিনিশার এই ফরম্যাটে কমই আছে। আছেন নীতিশ রানা, যিনি ব্যাটের পাশাপাশি প্রয়োজনে ওভার দুয়েক বলও করে দিতে পারবেন। আর আছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা পাওয়ার হিটার আন্দ্রে রাসেল। নিজের দিনে যিনি প্রতিপক্ষকে স্রেফ হাওয়া করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। আর হ্যাঁ, ক্যারিবিয়ান পাওয়ার হিটার আরও একজন রয়েছেন নাইট শিবিরে। কার্লোস ব্রাথওয়েট।
আরও পড়ুন: নাইটরা লড়বে ‘আখরি দম তক’, বার্তা কিং খানের
বোলিং? স্পিন অ্যাটাক এবারও সেরা। নারিন তো আছেনই, সঙ্গে দুই রিস্ট স্পিনার পীযুষ চাওলা আর কুলদীপ যাদব। চিন্তার জায়গা বলতে পেস বোলিং। দুই তরুণ পেসার শিবম মাভি এবং কমলেশ নাগরকোটি চোটের জন্য ছিটকে গিয়েছেন। রাসেল আছেন, প্রসিধ কৃষ্ণ আছেন, আছেন কেরালার উদীয়মান জোরে বোলার সন্দীপ ওয়ারিয়র। বিদেশি পেসারের জায়গা সম্ভবত নিতে চলেছেন নিউজিল্যান্ডের লকি ফার্গুসন। অনভিজ্ঞ পেস আক্রমণ কিন্তু ভোগাতে পারে নাইটদের।
সানরাইজার্স? গতবার টুর্নামেন্টের সেরা বোলিং আক্রমণ ছিল হায়দ্রাবাদের, দেড়শো রান তুলতেই হিমশিম খেয়ে যাচ্ছিল প্রতিপক্ষরা। কেন উইলিয়ামসনের টিমের মূল শক্তি এবারও ওই বোলিংই। ভুবনেশ্বর কুমার, সন্দীপ শর্মা, সিদ্ধার্থ কউল, বেসিল থামপি-দের নিয়ে তৈরি দেশজ পেস ব্যাটারি গতবার দুর্দান্ত সফল। সঙ্গে দুই স্পিনার রশিদ খান এবং শাকিব উল হাসান। পার্ট টাইম হাত ঘোরানোর জন্য ইউসুফ পাঠান। শাকিব আর ইউসুফ যে ব্যাট হাতেও ম্যাচের চেহারা বদলে দিতে পারেন, লেখা বাহুল্য। রশিদ খান ব্যাট হাতেও কী ভয়ঙ্কর তাণ্ডব করতে পারেন, গত বছর দেখেছে ইডেন।
আরও পড়ুন: IPL 2019 Schedule: দেখে নিন আইপিএল ২০১৯-এর লিগ পর্যায়ের সম্পূর্ণ সূচী
তবু তলিয়ে ভাবলে ব্যাটিংটাই হায়দ্রাবাদের কিছুটা দুর্বলতার জায়গা। ওয়ার্নার-উইলিয়ামসন-বেয়ারস্টো, এই তিন বিদেশিকে দিয়ে গড়া টপ অর্ডারের উপর একটু বেশিই নির্ভরশীল সানরাইজার্সের ব্যাটিং-ভাগ্য। মনীশ পাণ্ডের ব্যাট একেবারেই চলেনি গত বছর। আর ইউসুফ পাঠান এখন পুরনো দিনের ছায়া মাত্র। যেদিন খেলবেন, সেদিন একাই ম্যাচ জিতিয়ে দেবেন। কিন্তু সেসব দিন আজকাল কালেভদ্রে আসে, কবে আসবে কেউ জানে না।
কী হবে কালকের ম্যাচে? আগাম ভবিষ্যৎবাণী করলে বোকা বনে যাওয়ার সম্ভাবনা, দেখাই যাক না কী হয়। একটা দারুণ ম্যাচ হোক, আপাতত এটুকুই চাওয়া।