সিএসকে: ১৯১/৪ (২০ ওভার)
আরসিবি: ১২২/৯ (২০ ওভার)
প্রথমে ব্যাট হাতে ২৮ বলে ৬২ রানের বিস্ফোরণ। তারপর বোলিংয়ে ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়ে তুললেন ওয়াশিংটন সুন্দর, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং মিস্টার এবিডি-কে। তারপরে ম্যাচের আর কিছুই পড়ে থাকে না! রবিবার লিগ টেবিলের এক ও দুইনম্বর দলের লড়াইকে কার্যত একপেশে করে দিলেন একা জাদেজা। আইপিএলে সেরার সেরা অলরাউন্ড পারফরম্যান্সেই ১২২ রানেই শেষ কোহলির আরসিবি। সিএসকের ১৯১ রানের জবাবে আরসিবি তুলল মাত্র ১২২/৯। ধোনিদের জয় ৬৯ রানে। শেষ উইকেটে চাহাল (৮), সিরাজের (১২) ১৯ রানের অপরাজিত পার্টনারশিপ না থাকলে আরসিবিকে অলআউটের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হত।
জাদেজার ব্যাটিং তান্ডবে ১৯২ রানের টার্গেট রেখেছিল সিএসকে। সেই লক্ষ্য চেজ করতে গিয়ে কোহলি-দেবদূত পাডিক্কল খারাপ শুরু করেননি। কোহলি ৮ রানের ইনিংসে সংযত থাকলেও মারমুখী পাডিক্কল ১৫ বলে ৩৪ করে দারুন টানছিলেন। তবে বিরাট কোহলি-পাডিক্কলকে মাত্র ১০ রানের ব্যবধানে কুরান এবং শার্দুল ঠাকুর ফিরিয়ে দেওয়ার পরেই নামে ধস। ৪৯ রান আর যোগ করার ফাঁকেই হারায় ৭ উইকেট। জাদেজা-তাহিরদের দাপটে শীঘ্রই সেই স্কোর ১০৩/৯ হয়ে যায়।
আরো পড়ুন: মৃত্যু মিছিলেও কেন বিরাম নেই আইপিএলে! গনগনে ক্ষোভের মুখে সৌরভের বিসিসিআই
যাইহোক, ম্যাচের প্রথমার্ধ পুরোটাই জাদেজা ময়। কিছুদিন আগেই মাইকেল ভন বলেছিলেন, রবীন্দ্র জাদেজা বোর্ডের এ প্লাস ক্যাটাগরিতে থাকার যোগ্য। চলতি আইপিএলে বল আর ফিল্ডিংয়ে যে দাপট দেখাচ্ছিলেন তারকা তাতে বিশ্বের ক্রিকেট মহল কুর্নিশ করছিল তাঁকে। আর কেন তিনি বর্তমানে অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার, তা প্রমাণ হয়ে গেল রবিবারই। আরসিবি বোলিংকে নিয়ে ছেলেখেলা করলেন জাদেজা। ২৮ বলে ৬২ রানের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গেলেন ওয়াংখেড়েতে।
এর মধ্যে শেষ ওভারে একাই পাঁচ ছক্কা, এক বাউন্ডারির সাহায্যে তুললেন ৩৭ রান। আইপিএলে এক ওভারে সবথেকে বেশি রান তোলার নজির ছিল এতদিন ক্রিস গেইলের। তিনিও ৩৭ তুলেছিলেন। রবিবার গেইলের রেকর্ডে ভাগ বসালেন জাদেজা।
টসে জিতে এদিন সিএসকে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। আর শুরুতেই চেন্নাইয়ে চালকের আসনে বসিয়ে দেন দুই ওপেনার ফাফ ডুপ্লেসিস (৩২ বলে ৫০) এবং রুতুরাজ গায়কোয়াড (২৫ বলে ৩৩)। ওপেনিং জুটিতেই সিএসকে স্কোরবোর্ডে ৭৪ তুলে ফেলেছিল।
মাঝে হর্ষল প্যাটেলের দুরন্ত বোলিংয়ে প্রবলভাবে ম্যাচে ফিরে এসেছিলেন কোহলিরা। একই ওভারে হর্ষল তুলে নিয়েছিলেন ডুপ্লেসিস এবং রায়নাকে (২৪)। তারপরে এসে তুলে নেন আম্বাতি রায়ডুকেও (১৪)। ৩ উইকেট চটজলদি হারিয়ে বড় রান তোলা চ্যালেঞ্জের হয়ে উঠেছিল সিএসকের সামনে।
তবে শেষ ওভারেই ভেলকি দেখান জাদেজা। ১৯ ওভার শেষেও স্কোর ছিল ১৫৪/৪। কোহলি শেষ ওভারের বল তুলে দিয়েছিলেন দলের সবথেকে নির্ভরযোগ্য হর্ষল প্যাটেলের হাতে। যিনি আবার চলতি টুর্নামেন্টের বেগুনি টুপির মালিক।
তবে হর্ষলকে নিয়ে যে সর্বকালীন রেকর্ড গড়ে ফেলবেন জাদেজা, তা কে ভেবেছিল! প্রথম টিম বলেই ছক্কা হাঁকান জাদেজা। এর মধ্যে তৃতীয় বলটি ছিল নো বল। ফ্রি হিট মিস করেননি তারকা। সপাটে ছয় হাঁকান। চতুর্থ বল ২ রান নেন তিনি। পঞ্চম বলে লং অন দিয়ে ছক্কায় বাউন্ডারি পার করেন। শেষ বলে স্কোয়ার লেগ দিয়ে চার হাঁকান। ৩ ওভার শেষে যেখানে হর্ষল মাত্র ১৪ রান খরচ করেছিলেন। চার নম্বর ওভার শেষে তাঁর বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৫১।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন