আইপিএলের সুরক্ষিত বায়ো বাবলে কীভাবে ভাইরাসের অনুপ্রবেশ ঘটল, তা নিয়ে এখনো কাটাছেঁড়া চলছে বোর্ডের অন্দরমহলে। এমন সময়েই জৈব সুরক্ষা বলয়ে ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ফিল্ডিং কোচ জেমস পামেন্ট। তিনি দেশে ফিরেই জানিয়ে দিয়েছেন, ভারতীয় ক্রিকেটাররা জৈব সুরক্ষা বলয়ের নিয়ম কানুন মানতে আন্তরিক ছিল না।
তিনি কোনো ক্রিকেটারের নাম উল্লেখ করেননি। ৪ মে আইপিএল বন্ধ হওয়ার পরই নিউজিল্যান্ডের বাকি ক্রিকেটার, সাপোর্ট স্টাফদের সঙ্গে দেশে ফিরে গিয়েছেন পামেন্ট। তারপর স্টাফ.কো. এনজেড-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, "ভারতের বেশ কিছু সিনিয়র ক্রিকেটার জৈব সুরক্ষা বলয়ের ঠিকঠাক নিয়ম কানুন মানত না। তা সত্ত্বেও বাবলের সুরক্ষা নিয়ে আমরা নিশ্চিত ছিলাম। বাবলের নিরাপত্তাও যে বিঘ্নিত হতে পারে, তা ভাবতেই পারিনি। তবে সবসময়েই আমরা জানতাম, ট্র্যাভেল করাটা সমস্যার হয়ে উঠতে পারে।"
আরো পড়ুন: মুম্বইয়ে বাতিল মালিঙ্গাই এবার কুড়ি-কুড়ি বিশ্বকাপে! শুরুর আগেই হুঙ্কার স্পিডস্টারের
কিউয়ি এই কোচ জানিয়েছেন, টুর্নামেন্ট বন্ধ হওয়ার আগেই মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ক্রিকেটারদের মনে সংশয় দেখা দিয়েছিল। "অন্য দলের ক্রিকেটারদের মধ্যেও যখন সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন বাকিদের মধ্যেও চাপা আতঙ্ক, ভয় কাজ করছিল। চেন্নাই করোনার খবর জানানোর পরেই আরো সন্দেহ গাঢ় হয়। তার কিছুদিন আগেই আমরা সিএসকের বিরুদ্ধে খেলেছিলাম। সঙ্গেসঙ্গেই আমাদের স্কোয়াডে গ্রুপের মধ্যে একটা ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়ে গেল। আমি অস্ট্রেলীয় আর কিউইদের সঙ্গেই বেশি থাকতাম। তবে আচমকা সেই খবরের পরের দেখলাম সকলের মানসিকতা কেমন বদলে গেল!"
এমনটা জানিয়ে নিউজিল্যান্ডের এই কোচ আরো জানিয়েছেন, "আমাদের স্কোয়াডে যে ভারতীয় ক্রিকেটারদের পরিবার অসুস্থ ছিল, তাদের কাছে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছিলাম। সকলেই বলছিল, খেলা চালিয়ে যেতে তাঁদের আপত্তি নেই। আমাদের এই বার্তাও দেওয়া হচ্ছিল, অতিমারীর সময়ে ক্রিকেট বিনোদনের যোগান দেবে।"
বাবলের সুরক্ষা ঠিকঠাকই ছিল। বলে মনে করছেন তিনি। জানিয়েছেন, "যতক্ষণ না কেউ নিয়মভঙ্গ করছে, শৃঙ্খলার সঙ্গে থাকছে, ততক্ষণ বাবল নিয়ে কোনো সমস্যাই ছিল না। যদি গোটা টুর্নামেন্টই মুম্বইয়ে আয়োজন করা হত, তাহলে হয়ত এত সমস্যা হত না। তবে একবার মুম্বইয়ে মাঠকর্মী থেকে সাফাই কর্মীরা আক্রান্ত হওয়ার পরে তা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। চেন্নাইয়ে যাওয়ার সময়ে আমাদের স্কোয়াডেও একজন ধরা পড়ে। তবে দ্রুততার সঙ্গে তাঁকে আলাদা করে দেওয়া হয়েছিল। যাঁরা তার সংস্পর্শে এসেছিল, তাঁরা কেউই আক্রান্ত হয়নি। এতেই বোঝা গিয়েছিল, বায়ো বাবল যে অভেদ্য তা মোটেই নয়।"
তিনি আরো জানিয়েছেন, আহমেদাবাদে ৭০ হাজার দর্শকদের সামনে ইংল্যান্ড বনাম ভারত টেস্ট ম্যাচ আয়োজনও অবিবেচকের মত কাজ হয়েছে। বর্তমানে এই কারণেই হয়ত আহমেদাবাদ কোভিডের হটস্পট।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন