Rinku Singh in IPL KKR salary: ক্রিকেটের উজ্জ্বল বিশ্বে, যেখানে বেতন কোটিতে বেড়ে যায়, কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) উদীয়মান তারকা রিংকু সিং সেখানে তাঁর আইপিএল বেতন ৫৫ লক্ষ-এ খুশি বলে অনুরাগী এবং সমালোচকদের জানিয়েছেন। তাঁর এই ধরনের বক্তব্য সমবয়সিদের থেকেই আশাই করা যায় না। অনেকেই রিংকুর এই বক্তব্যে নম্রতা এবং দৃষ্টিভঙ্গির গভীরতা খুঁজে পেয়েছেন। তাঁদের দাবি, এমন নম্রতা এবং দৃষ্টিভঙ্গির গভীরতা আজকের ক্রীড়া মানচিত্রে বিরল।
রিংকু সিংয়ের ব্যাটিং ইতিমধ্যেই গোটা ক্রিকেট দুনিয়ায় প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিশেষ করে ডেথ ওভারে তাঁর খেলা ক্রিকেটীয় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে বারবার। এসবের পাশাপাশি খ্যাতি এবং ভাগ্যের প্রতি তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির জন্যও রিংকু ভক্তদের প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেছেন। এক সাম্প্রতিক সাক্ষাত্কারে, তাঁকে অন্যান্য ক্রিকেটারদের তুলনায় উপার্জনের পার্থক্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল। সেখানে রিংকু সরলভাবে বলেছেন যে, তাঁর জীবনে কোনও জটিলতা নেই। রিংকু বলেছেন, 'কেকেআর-এ আমি যে ৫৫ লক্ষ টাকা পেয়েছি, তাতে আমি খুশি। এটাও অনেক টাকা।' তাঁর এই বিবৃতি আপাতদৃষ্টিতে সরল মনে হলেও, একজন খেলোয়াড়ের এমন মানসিকতা আজকাল বিরল। কারণ, তাঁর বক্তব্য বুঝিয়ে দিয়েছে যে রিংকু তাঁর শিকড় এবং অতীতকে ভোলেননি। যে যাত্রাপথ ধরে তিনি আজ ভারতীয় তারকা ক্রিকেটার হয়ে উঠেছেন, সেই যাত্রাপথকে তিনি আগাগোড়া মনে রেখেছেন।
রিংকু এমন এক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন, যেখানে আর্থিক সীমাবদ্ধতা একটি দৈনন্দিন বাস্তবতা ছিল। সম্পদের প্রতি রিংকুর দৃষ্টিভঙ্গি তাই তাঁর জীবনের শুরুর বছরগুলোর ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে বলেই অনুরাগীদের ধারণা। রিংকু নিজেও বারবার বলেছেন, 'যখন আমি ছোট ছিলাম, ৫-১০ টাকা হাতে পেলেই মনে হত ভাগ্যবান।' যা বুঝিয়ে দেয়, আজ তিনি যেখানে উঠে এসেছেন, তা স্রেফ আচমকা পাওয়া নয়। বরং এটা তাঁর দীর্ঘ চেষ্টার ফসল। যে পরিশ্রম, ধৈর্য্য এবং চেষ্টা অনেকেরই থাকে না।
আরও পড়ুন- বিশ্বকাপজয়ী টিম ইন্ডিয়ার তারকা এবার মোদির বিজেপিতে! ঝড় তুলল স্ত্রীয়ের আপডেট
ক্রিকেট বিশ্ব হামেশাই হাই-প্রোফাইল চুক্তির ঝকমকিতে চমকে যায়। যার ফলে, রিংকুর মত গল্পগুলো সেখানে উপেক্ষিতই থাকে। তবে, তৃণমূল থেকে পেশাদার লিগে নিজেকে তুলে ধরা এবং প্রতিষ্ঠিত করা, অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ হওয়ার ব্যাপারটাই আলাদা। সবচেয়ে বড় কথা নিজের উপার্জনে সন্তুষ্টি অনেকেরই থাকে না। যা কেবল রিংকুর ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করা গেল। বেশিরভাগ ক্রিকেটারই উচ্চাকাঙ্ক্ষী। যা তাঁদের মূল্যায়নে স্পষ্ট বোঝা যায়। রিংকু যেন সেসব থেকে অনেকটাই আলাদা।
সবচেয়ে বড় কথা আইপিএল এমন একটি প্ল্যাটফর্মে রূপান্তরিত হয়েছে যেখানে খেলোয়াড়রা কোটি টাকা উপার্জন করতে পারেন। কিন্তু, রিংকুর বক্তব্য এটাও স্পষ্ট করছে যে সেখানে উপার্জনের বৈষম্যটাও আকছার ঘটে থাকে। রিংকু অবশ্য, সেসব নিয়ে ভাবতে নারাজ। তাঁর ব্যক্তিগত বৃদ্ধিতে তিনি যেমন সন্তুষ্ট। তেমনই দলের সাফল্যে অবদান রেখেই তিনি খুশি। কারণ, রিংকু মনে করেন যে ক্রিকেটে সাফল্য শুধু বেতনের মাপ দিয়ে নয়, মাঠে এবং ভক্তদের হৃদয়ে প্রভাব ফেলেও পরিমাপ করা সম্ভব।